প্রধান বিচারপতির সমালোচনায় সুরঞ্জিত

অবসরের পর রায় লেখা অসাংবিধানিক-প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেছেন, সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগকে সুন্দরভাবে বিন্যস্ত করা আছে। এই তিনটি অঙ্গ একটি অপরটির পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রধান বিচারপতি বলে বসলেন, জুডিশিয়ারির ক্ষমতাকে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এটা বলা যায় না। এ বক্তব্যে শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। আবার উনি বলে বসলেন, অবসরের পর রায় লেখা হলে তা হবে অসাংবিধানিক। এটা অসাংবিধানিক হলে রাষ্ট্রের সকল ভিত্তিই তো অসাংবিধানিক হয়ে যায়, প্রধান বিচারপতি নিজেও অসাংবিধানক হয়ে যান।
আজ সংসদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এ ধরণের কোন বক্তব্য জুডিশিয়ারির হেড থেকে আসা মানেই হচ্ছে দেশটা অস্থিতিশীল হোক। সাবেক বিরোধী দল সঙ্গে সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে লুফে নিয়ে বলে বসল, সরকারের নাকি ভূকম্পন হয়ে গেছে। কোথায় ভূমি আর কোথায় কম্পন আমি তো খুঁজে পাই না। তিনি বলেন, এই সংবিধান অনুযায়ী আমরা চলছি। প্রধান বিচারপতি একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি বলা শুরু করল- এই সরকার অবৈধ! এটা নিয়ে হঠাৎ করে কথা এসেছে যখন বাংলাদেশের রাজনীতি স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, সুপ্রিম কোর্টের মত প্রতিষ্ঠানকে নির্বাহী ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে। সেইখান থেকে যদি এ ধরণের একটি মন্তব্য চলে আছে যে এটা অসাংবিধানিক, এটি অবৈধ, তা সত্যিই দুঃখজনক। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, কারও কথায় সংবিধান অসাংবিধানিকও হয় না, সাংবিধানিকও হয় না। সুতরায় যে রেওয়াজ চলে আসছে, সেই রেওয়াজ চলবে। আর যদি প্রধান বিচারপতি মনে করেন এই রেওয়াজটি খারাপ, এই রেওয়াজটি বন্ধ করে অন্য কিছু করতে চান- তাহলে তাকে রিট্টো রেসপেকটিভ কিছু করা যাবে না অর্থাৎ পশ্চাতে ফিরে যাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, যেটা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে কারও কোন প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই। তাহলেই মানুষ মনে করবে আপনার (প্রধান বিচারপতি) কোন এজেন্ডা আছে। আমরা ঘর পোড়া গরু। নিশ্চয়ই কোন অসাংবিধানিক শক্তির সঙ্গে আঁতাত করে সাংবিধানিক শক্তি এই কথা বলছে। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি এটাও করতে পারেন অবসর গ্রহণের তিন মাস আগে বিচারকরা কোন জাজমেন্ট ঘোষণা করবেন না। এটা তিনি করতে পারেন। কিন্তু পিছনে গিয়ে যেটা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে কথা বলে অকারণে এই দেশে রাজনৈতিক উত্তাপ সৃষ্টির কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টকে জাতি সম্মানের সঙ্গে দেখে। এখানে দু-একজন বিচারকের ব্যক্তিগত কাঁদা-ছোঁড়াছুড়ি নিয়ে এই পবিত্র স্থানকে বিতর্কিত করা যাবে না। কারণ এটা সব বিচারের আশ্রয়স্থল। তাই এই বিষয়টি এখানেই নিষ্পত্তি হওয়া দরকার।

No comments

Powered by Blogger.