দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন হলে ঘরে ঘরে মারামারি হবে : সাখাওয়াত

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব:) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, গত কয়েক বছর হলো জনগণ ভোটের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার মত অবস্থা বাংলাদেশে এখন নেই। এই অবস্থায় যদি দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয় তাহলে ঘরে ঘরে মারামারি হবে বলে আমি আশঙ্কা করছি।
আজ রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ম্যাব) আয়োজিত ‘দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় নির্বাচন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরো বলেন, কোনো নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হয় না। এর মধ্যে আবার সবচেয়ে জটিল হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হলে প্রথমে মনোনয়ন নিয়ে সহিংসতা হবে। তারপর সহিংসতা হবে ভোট নিয়ে। কারণ এখানে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাই, পিতার বিরুদ্ধে সন্তান প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়।
এসময় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে জনগণ এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহবান জানান তিনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন হলে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে কবর দেয়ার পর যেটুকু অবশিষ্ট আছে তারও কবর রচিত হবে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জাতির সাথে প্রতারণা করতে যাচ্ছে। ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যে সরকার বিশ্বরেকর্ড করেছে তার কাছে জনগণ আর প্রতারিত হতে চায় না।
তিনি আরো বলেন, দেশে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে আমরা এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো। কারণ এক্ষেত্রে সরকার দলীয় প্রার্থী ছাড়া বিরোধী দলের খুব কম সংখ্যক লোক নির্বাচনে অংশ নিলেও তারা কোনো প্রচার প্রচারণা করতে পারবে না।
তিনি দলীয় প্রতীকে নির্বাচনকে ‘অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য’ এবং ‘দেশের বিপর্যয় ডেকে আনা হটকারী সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যা দেন এবং শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার আহবান জানান।
আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব শামীম আল রাজির সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, উন্নয়ন কর্মী রঞ্জন বিশ্বাসসহ বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরগণ।

No comments

Powered by Blogger.