আইপি ক্যামেরা-স্পাই সানগ্লাস

খুলনা নগরের পিকচার প্যালেস মোড়ে বসানো হয়েছে
আইপি ক্যামেরা। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো
ঢাকার পর এবার খুলনায় বসানো হচ্ছে ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ক্যামেরা। পুলিশ কর্মকর্তাদের দেওয়া হচ্ছে বিশেষ স্পাই সানগ্লাস বা গোয়েন্দা চশমা। নগরের অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ক্যামেরা বসানোও হয়েছে।
এ বিষয়ে কেএমপি কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো সব সময় পর্যবেক্ষণে রাখতে পারলে অপরাধ অনেক কমে আসবে এবং অপরাধী ধরাও সহজ হবে। তা ছাড়া যেকোনো ধরনের নাশকতা বা অরাজকতার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
ক্যামেরা স্থাপন ও স্পাই সানগ্লাস ছাড়াও পুলিশ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে অত্যাধুনিক গোপন ভিডিও ডিভাইস। এর সাহায্যে কোনো জটিলতায় পুলিশ সদস্যরা ভিডিও করে তা পর্যালোচনার পর অপরাধী শনাক্ত করতে পারবেন। সবগুলো প্রযুক্তি পরিচালনার জন্য কেএমপি সদর দপ্তরে খোলা হচ্ছে একটি কন্ট্রোল রুম।
কেএমপি সূত্র জানায়, নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হবে ৭২টি আইপি ক্যামেরা। ওয়াইফাই সংযুক্ত এসব ক্যামেরার ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তারা মুঠোফোনে যেকোনো স্থান থেকে সব সময় দেখতে পারবেন। ইতিমধ্যে পিকচার প্যালেস মোড়ে চার রাস্তার সংযোগস্থল ও সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে চারটি করে আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শিববাড়ী মোড়, ময়লাপোতা মোড়, গল্লামারী মোড়, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট, রয়্যাল মোড়, দৌলতপুর ও খালিশপুরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বসানো হবে এই ক্যামেরা।
ডিজিটাল মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ও নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) কর্মকর্তাদের দেওয়া হচ্ছে স্পাই সানগ্লাস। এই সানগ্লাসের সাহায্যে জনসাধারণের অজান্তে পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁদের দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত ভিডিও করতে পারবেন। সানগ্লাস ছাড়াও পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যবহার করবেন পেন ক্যামেরা। এ ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি তোলা ও কথা রেকর্ড করা যাবে। থাকছে যানবাহন তল্লাশি আয়না (ভেহিক্যাল সার্চ মিরর) ও পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য স্টেনগান। এ ছাড়া রয়েছে মাদক ও জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন।
কেএমপির অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, খুলনা নগর ডিজিটাল মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে একটি পরিকল্পনা প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেটি অনুমোদন দিয়েছে।
ঢাকার মতো প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়বে কি না, প্রশ্নে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা নগরকে মনিটরিংয়ের জন্য যে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছি, তা ধরে রাখতে চাই। যেহেতু এটা আমাদের উদ্যোগ, সুতরাং তা চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্বও আমাদের।’

No comments

Powered by Blogger.