মোদির বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার’ অভিযোগ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার’ অভিযোগ এনেছেন বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা তিস্তা সেতালবাদ।
১৩ বছর আগে সংঘটিত গুজরাট দাঙ্গার অভিযোগে মোদির কট্টর সমালোচক সেতালবাদ। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থায়নের অভিযোগ এনেছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই)। এমন অবস্থায় সেতালবাদের দাবি, মোদির সমালোচনা বন্ধ করতেই পরিকল্পিতভাবে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, সেতালবাদের দাবি, ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে সংঘটিত রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার কট্টর সমালোচক হওয়ায় তিনি সরকারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।
সেতালবাদ বলেন, ‘এটি ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার চেয়ে কম নয়। যদি এটি অপরাধ হয়, আদৌ যদি আর্থিক অপরাধ হয়, তাহলে আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।’
সেতালবাদ বেসরকারি সংস্থা ‘সাবরাং’ ও তাঁর আরেকটি সংগঠন ‘সিটিজেনস ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস’-এর মাধ্যমে ওই দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
গত ৮ জুলাই সিবিআই সেতালবাদ ও তাঁর জাভেদ আনন্দের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। এর এক সপ্তাহ পর তাঁদের বাড়ি ও কর্মস্থলে তল্লাশি চালানো হয়।
সেতালবাদের বেসরকারি সংস্থা সাবরাংয়ের সরকারের অনুমতি না নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফ্রড ফাউন্ডেশন থেকে অর্থসহায়তা নেওয়ার বিষয়টি সিবিআই তদন্ত করছে।
২০০২ সালের দাঙ্গায় প্রাণ হারান কংগ্রেসের তৎকালীন সাংসদ এহসান জাফরি। তাঁর বিধবা স্ত্রীকে আইনি সহায়তা প্রদানে বাধা দেওয়া ও সিবিআইয়ের তল্লাশি ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন সেতালবাদ।
তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন এ ধরনের ব্যক্তিগত জ্বালাতন? আমাদের জেলে নিতে কেন এই প্রচেষ্টা? জাকিয়া জাফরির মামলা যখন শুরু হতে যাচ্ছে, ঠিক তখনই গুজরাটে আমাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রয়াস?’
গুজরাটের ওই দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার লোক প্রাণ হারায়। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ছিল মুসলমান। ওই দাঙ্গা নিয়ে জাকিয়ার মামলার রায় ২০১৩ সালে ঘোষণা করেন আদালত। এতে মোদিসহ উচ্চপর্যায়ের গুজরাটের কর্মকর্তাদের নির্দোষ ঘোষণা করা হয়। এরপর জাকিয়া আদালতের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন।
দাঙ্গার সময় আহমেদাবাদে গুলবার্গ সোসাইটিতে উত্তেজিত হিন্দুরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে কয়েক শ মুসলমানের সঙ্গে এহসান জাফরি জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান।

No comments

Powered by Blogger.