ওমানের হাসপাতালে ‘বন্দি’ নুরুল

ওমানের মাস্কাটের একটি হাসপাতালে অর্ধ চেতনায় থাকা বাংলাদেশী শ্রমিক নুরুল আমিন দেশে ফেরার আশায় প্রহর গুনছেন। কিন্তু অর্থাভাবের কারণে তার এই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। ১০ মাস আগে আকস্মিক তার জীবনে নেমে এসেছিল বিপর্যয়। একটি মোটর গাড়ি তাকে আঘাত করেছিল। সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। গত ২২শে সেপ্টেম্বর টাইমস অব ওমানে নুরুলের ওপর একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।

ওমানের বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা টাইমস অব ওমানকে বলেছেন, ‘‘ওই সড়ক দুর্ঘটনায় তার দেহের অনেক হাড় ভেঙে যায়। তিনি অচেতন হয়ে পড়েন এবং তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। তবে কয়েক দিন পরে তার অবস্থার উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু তিনি সেরে উঠেছেন তা আমরা এখনও বলতে পারছি না।”
ওই কর্মকর্তা অবশ্য বলেন, ‘২৭ বছর বয়সী নুরুল ইতিমধ্যে এতটা স্থিতিশীল হয়েছেন যে, এখন তার পক্ষে বিমানে চড়ে দেশে ফেরা সম্ভব। সেখানে তার ফলোআপ চিকিৎসা চলবে। ফিজিওথেরাপিস্টের সহায়তায় তার পক্ষে পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু আর্থিক  সঙ্কট এবং তার প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত কিছু আইনগত বিষয় তার দেশে ফেরাকে অনিশ্চিত করে রেখেছে।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, দুই বছর আগে নুরুল তার কর্মস্থল থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় পলায়নের একটি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তার কাছে কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। ওমানের বাংলাদেশ মিশন এবং ঢাকায় জনশক্তি ব্যুরো দপ্তরে তার ওমানে কর্মসংস্থান বিষয়ে তথ্য রয়েছে। তবে তার পালিয়ে যাওয়ার পরের তথ্য  তাদের কাছে নেই। এখন তিনি বৈধ কাগজপত্রবিহীন একজন বাংলাদেশী শ্রমিক। তবে এই সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো। তবে হাসপাতালের বিল পরিশোধ না করতে পারাই এখন বড় বাধা।
পত্রিকাটি জানায়, বাংলাদেশ দূতাবাস দুর্ঘটনার জন্য দায়ী গাড়িটিকে শনাক্ত করতে পেরেছে। ‘নুরুল হয়তো ক্ষতিপূরণ পাবেন কিন্তু সেটা পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে। তাকে হাসপাতালে ফেলে রাখাটা ভাল দেখাচ্ছে না,’ দূতাবাস কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নুরুলকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করার পর থেকে দূতাবাস বিব্রত।
ওই কর্মকর্তাটি বলেন, ‘নতুন রোগী ভর্তি করানোর চাপ মোকাবিলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সর্বদা হিমশিম খেতে হয়। নুরুলের জীবন বাঁচাতে তারা সবচেয়ে ভাল সেবা দিয়েছেন। এখন আমাদের কাজ হলো তাকে সেখান থেকে সরিয়ে আনা।’

No comments

Powered by Blogger.