খালেদার অর্থসঙ্কটে সহৃদয় মন্ত্রীরা! by দীন ইসলাম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অর্থাভাবে প্রায় তিন বছর বাড়ি ভাড়া দিতে পারছেন না- একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এমন সংবাদে সহানুভূতিশীল হয়েছেন মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্য। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনায় প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচিত হয়। কয়েক জন সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মন্ত্রীরা খালেদা জিয়ার অর্থাভাব নিয়ে আলোচনা করলেও ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চুপ ছিলেন। কোন কিছু বলেননি। মন্ত্রিপরিষদের কয়েক সদস্য মত দেন, বিষয়টিকে সামনে এনে খালেদা জিয়া  দেশের মানুষের সহানুভূতি নেয়ার চেষ্টা করছেন। তার এ বিষয়টি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশও হতে পারে। তাই খতিয়ে দেখা দরকার।
তবে সত্যিকার অর্থে খালেদা অর্থ সঙ্কটে থাকলে তার মাসিক কত টাকা দরকার এ বিষয়টি দেখা দরকার। প্রয়োজন অনুযায়ী তার জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ ছাড় করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিসভার নিয়মিত এজেন্ডা নিয়ে আলোচনার পর একটি জাতীয় দৈনিকের প্রসঙ্গ টেনে এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর খালেদার অর্থসঙ্কটের বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হোসেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার বাড়ি ভাড়ার প্রসঙ্গ নতুন কোন ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। এটা খতিয়ে দেখা দরকার। খালেদা জিয়া বিষয়টি নিয়ে দেশের মানুষের সহানুভূতি নেয়ার চেষ্টা করছেন কিনা এবং এ নিয়ে মামলা করতে পারেন কিনা- তা খতিয়ে দেখা উচিত। এর আগে সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার ব্যাংক হিসাব তলব করে এনবিআর। মাসিক খরচ ৫০ হাজার টাকা তোলার অনুমতি দিয়ে বিগত সাত বছর ধরে জব্দ আছে খালেদা জিয়ার ৮টি ব্যাংক হিসাব। গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকে অর্থাভাবে বাড়ি ভাড়া দিতে পারছেন না খালেদা জিয়া- এমন একটি সংবাদ পরিবেশিত হয়। ওই সংবাদে খালেদা জিয়ার ব্যাংক হিসাবগুলো খুলে দেয়া বা প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা উত্তোলনের আবেদনও এনবিআরে মঞ্জুর হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়। তার আয়কর আইনজীবী এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে সাক্ষাতের জন্য বারবার সময় চেয়েও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশ পাওয়ার পরপরই সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনায় স্থান পেয়েছে। গতকাল মন্ত্রিসভার আলোচনায় কয়েক জন মন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়ার যতটুকু প্রয়োজন তার একটা হিসাব দিলে ওই পরিমাণ অর্থ উত্তোলনের সুযোগ করে  দেয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ওদিকে মন্ত্রিসভার নিয়মিত এজেন্ডার আলোচনায়, উদ্বৃত্ত গণকর্মচারী আত্তীকরণ আইন, ২০১৪’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শুধুমাত্র ভাষাগত পরিবর্তন ছাড়া আইনের আর কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী উদ্বৃত্ত হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাদের আত্তীকরণ করে থাকে। তবে কোন মন্ত্রণালয় নিজে আত্তীকরণ করতে পারে না।

No comments

Powered by Blogger.