সহজিয়া কড়চা- পুলিশ, রাষ্ট্র ও রাজনীতি by সৈয়দ আবুল মকসুদ

বঙ্গীয় সমাজে চিরকালই একজন নন্দ ঘোষের প্রয়োজন হয়। যত দোষ সব তার ঘাড়ে চাপিয়ে অন্যরা দাঁত বের করে হাসে। পুলিশ বেচারাকেই এখন আমাদের রাষ্ট্রে নন্দ ঘোষের ভূমিকায় অভিনয় করতে বাধ্য করা হচ্ছে। পুলিশের কোনো কর্মকর্তা যখন ছুটিতে বাড়ি গিয়ে আমগাছটির মালিকানা নিয়ে মারামারি করেন এবং তাঁর ভাইকে লাঠির বাড়ি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে মারেন অথবা গুলি করে খুলি উড়িয়ে দেন, তখন সেটা স্রেফ খুন।
ওই খুনের দায় গোটা পুলিশ বাহিনীর ওপর বর্তায় না। কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা থামাতে গিয়ে নিরুপায় হয়ে যখন পুলিশ গুলি ছোড়ে এবং তাতে কেউ মারা যায়, সেটা মার্ডার নয়। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ পুলিশকেই নিন্দা করবে। কিন্তু কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনার পর শারীরিক নির্যাতন করায় যদি তার মৃত্যু হয়, সেটা নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যু। তার দায়ে পুলিশকে অভিযুক্ত করতেই হবে। নিহত ব্যক্তি চোর-ডাকাত না হয়ে বিরোধী দলের বা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী হলে অনুমান করা হবে সরকারের প্ররোচনাতেই বা নির্দেশেই ওই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। ওটা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত খুন নয়। ওই খুনের দায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের ওপরে নয়, গোটা পুলিশ বাহিনীর ওপর অর্থাৎ সরকারের ওপরই বর্তায়।

কোনো সম্প্রদায় বা শ্রেণী সম্মিলিতভাবে অপরাধ করে না, অপরাধ করে মানুষ-ব্যক্তি। গত পাঁচ হাজার বছরে পৃথিবীতে যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে (যুদ্ধবিগ্রহ বাদে), তাতে শুধু দুর্বৃত্তরা নয়, সব পেশার মানুষই জড়িত ছিল। কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক-দার্শনিক-সাংবাদিক থেকে ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, সরকারি কর্মকর্তা, ধর্মীয় নেতা, পুলিশ—সব পেশার মানুষই রয়েছে। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ যখন তার হেফাজতে থাকা কোনো অভিযুক্ত বা অপরাধীকে সজ্ঞানে ও সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে, সেটাই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। যদিও বিচার করে শাস্তি দিলেও তার মৃত্যুদণ্ডই হতো। কিন্তু বিচার না করে হত্যা করলে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তা জঘন্যতম অপরাধ। তারপর তাকে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, এনকাউন্টার—যে নামই দেওয়া হোক।
শুধু আমাদের এই গ্রহ নয়, সমস্ত সৌরজগতের তত্ত্বাবধায়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব দেশের ওপর নজর রাখে। ২৭ ফেব্রুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন ২০১৩ প্রকাশ করেছেন। ‘মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রকে (আসক) উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের প্রথম নয় মাসে র‌্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন সদস্যের হাতে ১৪৬ জন নিহত হন। নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে লোকজনের প্রাণহানির ঘটনাকে কখনো “ক্রসফায়ার”, কখনো “বন্দুকযুদ্ধ” কিংবা কখনো “মুখোমুখি সংঘর্ষ” হিসেবে সরকার অভিহিত করেছে। ২০১২ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় ৭০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

‘মানবাধিকার সংগঠন অধিকারকে উদ্ধৃত করে মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১৪ জন গুম হয়েছেন। ২০১২ সালে ওই সংখ্যা ছিল ২৪ জন। অন্যদিকে আসকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ সালে গুম হয়েছেন ৩৩ জন।’ [প্রথম আলো, ২৮. ২. ২০১৪]
প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সরকারের অঙ্গীকার সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়নি। গত বছর বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগের ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি শাস্তি দেওয়া হয়েছে কি না, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। শুধু কয়েকটি ক্ষেত্রে ছিল প্রশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। এসব অভিযোগের কারণে পৃথিবীতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলতে পুলিশ ও র‌্যাবকেই বোঝানো হয়েছে। দুটি বাহিনীই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন।

র‌্যাবের ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধের উপাখ্যানের আরম্ভ প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জোট সরকারের সময়। কয়েকজন অতি কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে কথিত ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়ায় সাধারণ মানুষ আনন্দ প্রকাশ করে। কোথাও মিষ্টিমণ্ডাও বিতরিত হয়। কিন্তু ওই পৈশাচিক আনন্দ আমার ভালো লাগেনি। তাদের ধরে দ্রুত বিচারে সর্বোচ্চ শাস্তি দিলেই ভালো হতো। ‘ক্রসফায়ারের’ আমি আমার মতো করে প্রতিবাদ করি। সংবিধান বুকে ঝুলিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে ফুটপাতে অবস্থান নিয়ে সত্যাগ্রহ করি। আমার সেদিনের কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন সিপিবির সভাপতি মনজুরুল আহসান খানসহ অন্যান্য বাম দলের নেতা, গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল, বাম ছাত্র সংগঠন এবং ছাত্রলীগেরও কোনো কোনো নেতা। ভিড় জমে গেলে পুলিশ আমাকে জোর করে ফুটপাত থেকে উঠিয়ে দেয়। নেতাদের নিয়ে আমি প্রেসক্লাবের প্রাঙ্গণে ঢুকলে পুলিশ সেখানে ঢুকে বলে: এখানেও বসতে পারবেন না, ওপরের নির্দেশ। বললাম, আমি তো এই ক্লাবের পুরোনো সদস্যের একজন, আমি এখানে বসতে পারব না কেন? কর্তব্যরত সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও আমার পক্ষে অবস্থান নেন। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আপনি ক্লাবে গিয়ে চা খেতে পারেন, কিন্তু ক্লাব কম্পাউন্ডে বসতে দেব না। সেদিন আন্তর্জাতিক মিডিয়া ঘটনাটিকে খুব গুরুত্ব দেয়, আমার কথাও শোনে, সরকারের কথাও শোনে, কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থামে না।
বড়ই দুঃখের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়েই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা। পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে ছিল বিশ্ববিবেক। অন্যদিকে ছিল তারা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির পক্ষে। আজ বাংলাদেশের পরিচিতি যদি হয় হত্যা-গুমের দেশ হিসেবে, তার চেয়ে বেদনার বিষয় আর কী হতে পারে? সমাজ থেকে দুষ্কৃতদের নির্মূল করার সঠিক পথ নয় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
খালেদা-নিজামীদের জোট সরকারের জামানায় ইসলামি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা প্রায় জামাই-আদরেই ছিল। ধরপাকড় যেটুকু হয়েছে, তা অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেই করেছে সরকার। মহাজোট সরকার উগ্র ইসলামি গোষ্ঠীকে সাবলীলভাবে দমন করায় প্রগতিকামী শান্তিপ্রিয় মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি হয়ে থাকলেও পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দাদের ভূমিকা প্রশংসাযোগ্য।

সংবাদপত্রের পাঠক ও অন্যান্য মিডিয়ার দর্শক-শ্রোতা মনে করছেন, এসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে পুলিশের সংশ্লিষ্ট সদস্যরাই শুধু জড়িত। যাঁর যেদিন যেখানে ডিউটি ছিল, তাঁরাই ব্যক্তিগত আক্রোশ বা শত্রুতাবশত করছেন। দোষটা সোজা গিয়ে পড়ছে পুলিশ ও র‌্যাবের ওপর। যেন তাদের সঙ্গে বা তাদের ওপরে আর কেউ নেই, যারা ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও যে বিদ্যমান রাজনীতির বাইরে কোনো স্বাধীন সত্তা নন, সে কথা আমরা ভুলে যাই।
অনেক বিভাগের কর্মকর্তারাই ঘুষ খান, দুর্নীতি করেন। কিন্তু শ্রেণী হিসেবে পুলিশ সম্পর্কে মানুষের একটি বদ্ধমূল নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। সেই ধারণা এখন থেকে নয়, বহুকাল থেকে। তবে ধারণাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। আজও আমাদের পুলিশ বাহিনীতে বহু সদস্য আছেন, যাঁরা ন্যায়পরায়ণ ও সৎ জীবনযাপন করেন। যাঁরা মানুষের সঙ্গে, দুর্বলের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ একেবারেই সমর্থন করেন না। পুলিশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের প্রচলিত ধারণার সঙ্গে আমার ধারণার মিল নেই।

নানা কারণে আমার এই পক্ষপাতিত্ব থাকতে পারে। আমার প্রপিতামহ উনিশ শতকে পুলিশে কাজ করেছেন। কিন্তু ভালো লাগেনি বলে একপর্যায়ে চাকরি ছেড়ে আধ্যাত্মিক জীবন বেছে নেন। আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন পুলিশ ও আবগারি বিভাগে। তাঁদের কেউ ছিলেন সৎ, কেউ অসৎ। মানুষ মিশ্র স্বভাবের প্রাণী, সবাই এক রকম হয় না। ছোটবেলায় আমি পুলিশের আইনকানুন প্রভৃতি সংক্রান্ত বইপত্র বাড়িতে দেখেছি। তবে তা থেকে নয়, অন্যভাবে আমি পুলিশকে জানি ভালো।
ছাত্রজীবনে অসচ্ছলতায় কেটেছে। যেসব পত্রপত্রিকা নিয়মিত টাকা দিত, সেগুলোতে লিখতাম। ষাটের দশকের মাঝামাঝি নাগাদ আমি অনেক দিন পুলিশের পত্রিকা ডিটেকটিভ-এ কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ লিখেছি। উন্নত মানের মাসিক পত্রিকা ছিল। খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিকেরা লিখতেন। প্রধান সম্পাদক ও সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ আমজাদ আলী ও আহসানউল্লাহ, যিনি স্বাধীনতার পরে সাধারণ বীমা করপোরেশনে বড় কর্মকর্তা হয়েছিলেন। বয়সের ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও আমার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব হয়েছিল। অনেক নামী পত্রিকায় একটি গল্পের বা প্রবন্ধের জন্য ১০-১৫ টাকা পেলে ডিটেকটিভ দিত ৩০ টাকা। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিশে দেখেছি, তাঁদের অনেকের পড়াশোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অধ্যাপকের চেয়ে বেশি। স্বাধীনতার আগে পুলিশের পাঠাগার ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। আমি ব্যবহার করেছি।

পুলিশ সম্পর্কে বলতে গিয়ে আত্মপ্রসঙ্গে আর একটু বলতে হয়। সত্তরের দশকের শেষ থেকে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর আমি প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার কাজী আনোয়ার-উল হক সাহেবের বাড়িতে তাঁর সঙ্গে আড্ডা দিতাম। তিনি ছিলেন ১৯৩১-৩২ সালের ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসের (আইপিএস) সদস্য। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারে এবং বাংলাদেশেও মন্ত্রী ছিলেন। তখন তাঁর ৮০-৯০ বছর বয়স। তাঁর এককালের সহকর্মী জনাব হাফিজউদ্দিন, জনাব মহিউদ্দিনসহ অন্তত ১০-১২ জন সাবেক আইজি তাঁর বাসভবনে হপ্তায় হপ্তায় মিলিত হতেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত ও অত্যন্ত বিদগ্ধ। মানুষ হিসেবেও অসামান্য। ওই অতিবৃদ্ধদের বৈঠকে আমি ছিলাম একমাত্র অর্বাচীন শ্রোতা।

শিল্প-সাহিত্য-ইতিহাস থেকে হেগেল, শোপেনহাওয়ার, মিল, রাসেলের দর্শন নিয়েও আলোচনা হতো। কাজী আনোয়ার-উল হকের সমৃদ্ধ ব্যক্তিগত পাঠাগার ছিল। সেখানে আমি পড়াশোনা করতাম এবং তাঁর দুর্লভ বই ধার নিতাম। তাঁকে ধার দিতামও। তিনি ছিলেন অসামান্য পাঠক। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রথম দিকের ছাত্র। বুদ্ধদেব বসু, অর্থনীতিবিদ ভবতোষ দত্ত প্রমুখ ছিলেন তাঁর স্কুলের সহপাঠী। তাঁর থেকে নাম-ঠিকানা নিয়ে আমি কলকাতায় গিয়ে তাঁর সহপাঠী, যাঁরা পরবর্তী সময়ে সরকারের উঁচু পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি। একবার মহিউদ্দিন আহমদ (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব) ও আমি ভবতোষ দত্তের প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করি। তিনি বলেন, সেকালে স্কুলে অনেক ছাত্র ধুতি পরে আসত, আনোয়ার হাফপ্যান্ট পরে ওয়েল-ড্রেসড হয়ে আসত। এখন কি আনোয়ার খুব জরাগ্রস্ত হয়ে গেছে? তিনি ছিলেন আবদুল্লাহ উপন্যাসের লেখক কাজী ইমদাদুল হকের ছেলে। সেকালের আইজিদের কাছে পুলিশের সম্পর্কে অনেক শুনেছি।

উন্নত দেশের পুলিশের যে সুযোগ-সুবিধা, আমাদের পুলিশ তা থেকে বঞ্চিত। তাদের দুর্নীতি ও নিষ্ঠুরতা মানুষের চোখে পড়ে, কিন্তু অপরাধ উদ্ঘাটন করে যারা, সেই পুলিশ ও গোয়েন্দাদের মেধা চোখে পড়ে না। আমি বহু বছর আগে গবেষণার কাজে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলি সেকালের জাতীয়তাবাদী নেতাদের সম্পর্কে জানতে। লক্ষ করেছি তাঁদের অসামান্য দেশপ্রেম। তার প্রমাণ পঁচিশে মার্চ রাতে রাজারবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সদস্যরা বিদ্রোহ করেন ও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শহীদ হন অগণিত।

শেষ অংশ আগামীকাল
সৈয়দ আবুল মকসুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।

No comments

Powered by Blogger.