কঠিন পরীক্ষায় বারাক ওবামা

বারাক ওবামা
ওয়াশিংটনের কড়া হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলে রাশিয়া গত শনিবার সামরিক হস্তক্ষেপ জোরদার করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক চরম পরীক্ষার মুখোমুখি। সেটি হচ্ছে, মস্কোকে থামানোর মতো শক্তি বা ইচ্ছা ওয়াশিংটনের সত্যিই আছে কি না। ওবামা শুরু থেকেই বৈশ্বিক সংকটে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থেকে অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর ওপরই বেশি নজর দিয়েছেন। তবে বর্তমানে তিনি এমন এক পূর্ব-পশ্চিম বিরোধের মুখোমুখি, যেটিকে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বিপজ্জনক বিরোধ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মাসের পর মাস ধরে বলে আসছেন, তাঁরা ইউক্রেনের রাজনৈতিক সংকটকে ওয়াশিংটন-মস্কো রশি টানাটানির দিকে নিয়ে যেতে চান না। তবে গণবিক্ষোভের জের ধরে ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার এক সপ্তাহ পর শনিবার সেই অবস্থানে আর অটল থাকতে পারেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। ইউক্রেন নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের খোলাখুলি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব জবাব দিতে ওবামার বিদেশনীতিবিষয়ক কর্মকর্তারা মোটেই দেরি করেননি।
পুতিনের পার্লামেন্ট এরই মধ্যে ইউক্রেনে হস্তক্ষেপ করতে তাঁকে কর্তৃত্ব দিয়েছে। শনিবার ওবামা-পুতিন ফোনালাপ বেশ উত্তপ্ত ছিল বলেই মনে হয়েছে। এর আগে ওবামা গত শুক্রবার হুমকি দিয়েছিলেন, ইউক্রেনে শক্তি প্রয়োগ করলে, তার জন্য ‘মূল্য’ দিতে হবে। তবে এসব হুমকির কোনো তোয়াক্কাই করছেন না পুতিন। ক্রিমিয়াই হচ্ছে ইউক্রেনের একমাত্র অঞ্চল, যেখানে নৃতাত্ত্বিক রুশ জনগোষ্ঠী সংখ্যাগুরু। রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ কৃষ্ণসাগর নৌবহরের সদর দপ্তর সেখানেই অবস্থিত। ওবামার কট্টর সমালোচক মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন বলেন, ‘আসল বিষয় হচ্ছে, বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা পুতিনকে উৎসাহিত করেছে।’ মস্কোকে পিছু হটাতে ওবামা প্রশাসনের হাতে গোনা কয়েকটি বিকল্প রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, বর্তমান অবস্থানে অনড় থাকলে মস্কোকে অনেক কিছুই হারাতে হতে পারে। এ ছাড়া আগামী জুনে অনুষ্ঠেয় জি-৮ সম্মেলন বর্জন এবং ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়তে রাশিয়ার দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা। তবে সামরিক ব্যবস্থার দিকে যুক্তরাষ্ট্র যাবে না বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মার্কিন সামরিক অবস্থানে পরিবর্তন আসেনি। কূটনৈতিক বিকল্পের ওপরই নজর দিচ্ছে তারা।

No comments

Powered by Blogger.