ইংলাকের বাসভবন ঘেরাও

থাইল্যান্ড সরকারবিরোধী একদল বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার বাসভবন ঘেরাও করে তার পদত্যাগ দাবি করছে বিক্ষুব্ধরা। উপস্থিত আনুমানিক ১০০০ বিক্ষোভকারীর অধিকাংশই নারী। তাদের সঙ্গে আরও একদল বিক্ষোভকারীর যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। নানা ধরনের গাড়িবহরের সমন্বয়ে ওই শোভাযাত্রার নেতৃত্বে দিচ্ছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ওংমোন্থা। বিক্ষোভকারীরা যেন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ সমাবেশ বড় আকার ধারণ করতে পারে আশংকায় পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসী তাদের যানবাহন সরিয়ে নিয়েছে। মেট্রোপলিটান পুলিশ ব্যুরোর প্রধান মেজর জেনারেল সুথি নেতকুন্থি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইংলাকের বাসভবনের সামনে ১০০০ পুলিশ সদস্য পাঠিয়েছেন। এদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। তবে প্রধানমন্ত্রী এ মুহূর্তে রাজধানীতে নেই। তিনি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রয়েছেন। এলাকাটি তার দলের প্রাণ কেন্দ্র বলে পরিচিত। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে বিরোধী নেতারা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন। বিক্ষোভকারীরা হুইসেল বাঁজিয়ে ও পতাকা উঁচিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিল, ‘ইংলাক নিপাত যাক, ইংলাক নিপাত যাক’। এ সময় পিছনে নিরস্ত্র বেশ কয়েকজন পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। এদিকে থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পতনের দাবিতে চলমান আন্দোলনে হাজার হাজার সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারী বড় ধরনের বিক্ষোভে নেমেছে। রোববারের এ গণবিক্ষোভে বিক্ষোভকারীরা ‘ইংলাক নিপাত যাক’ স্লোগান দিয়ে বাঁশি বাজিয়ে ব্যাংককের চারপাশের এলাকাগুলোতে জড়ো হয় এবং অন্তত ৫টি জায়গায় মঞ্চ স্থাপন করে।
এতে কয়েকটি জায়গায় বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। বিক্ষোভকারীদের নেতা সুথেপ থাগসুবান বলেছেন, রোববারের এ বিক্ষোভ ইংলাক ও তার সরকারের ওপর চাপ বাড়াবে বলেই তিনি মনে করেন। বিক্ষোভে আরও লোকসমাগম হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। সরকার-বিরোধীদের কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক এ মাসের শুরুর দিকে সংকট নিরসনে আগাম নির্বাচন ডেকেছিলেন। এ নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছিল ২ ফেব্র“য়ারি। কিন্তু প্রধান বিরোধীদল ডেমোক্রেট পার্টি এ নির্বাচন বয়কট করবে বলে জানিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের নেতা থাগসুবান নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি গণপরিষদ চাইছেন। ইংলাক ২০১১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন। কিন কিন্তু তিনি তার ভাই ক্ষমতাচ্যুত ও নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কথায় দেশ পরিচালনা করছেন অভিযোগ করছে বিরোধীরা। সরকারবিরোধী ক্যাবল টিভি ‘ব্লু-স্কাই’তে বিক্ষোভকারীদের নেতা থাগসুবান বলেন, ‘ইংলাক কি ভাবছেন জানি না। কিন্তু আমি এখন নিশ্চিভাবেই জানি যে, সব সরকারি কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, পুলিশ সবাই এটি উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, সরকারের বিরুদ্ধে গণজাগরণ ঘটছে।’ ব্যাংককের কেন্দ্রস্থলের বিভিন্ন এলাকা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারী নেতারা সমাবেশে প্রায় তিন লাখ মানুষের সমাগম ঘটছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এদিকে রোববার ব্যাংককের ডেমোক্রেসি মনুমেন্টে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে বিক্ষোভকারীদের নেতা ও সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী সুথেপ থাগসুবান থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা নেতৃত্বাধীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে শেষবারের মতো হুশিয়ার করে দিয়েছেন। এএফপি, ব্যাংকক পোস্ট।

No comments

Powered by Blogger.