জানোয়ারের সঙ্গেও কেউ এমন করে না

ব্রিটিশ নাগরিক শাকের আমির বিগত এগারো বছর ধরে গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দি আছেন। যুক্তরাজ্য সরকারের চাপের কারণে শাকের আমিরকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি আমিরের রেকর্ড করা একটি গোপনবার্তা প্রভাবশালী টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএসতে প্রচারিত হয়। এরপর থেকেই আবারও গুয়ানতানামো বে কারাগার ও এর ভেতরে থাকা বন্দিদের নিয়ে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। টেলিভিশনটির ৬০ মিনিটের একটি অনুষ্ঠানে শাকের আমির বলেন, ‘দয়া করে পৃথিবীকে সত্যিটা জানতে দিন। আমরা আর পারছি না। আমরা ক্লান্ত। হয় আপনারা আমাদের শান্তিতে মরতে দিন, নয়তো বিশ্ববাসীকে এই গুয়ানতানামো নরকের সত্যিটা জানান। বিশ্ববাসীকে শুনতে দিন এখানে কি ঘটছে। এখানে আধামিটার রাস্তাও চেইন ছাড়া হাঁটা অসম্ভব। একে কি মানুষ বলে?
জানোয়ারের সঙ্গেও কেউ এমন করে না।’ ২০০২ সালে কোনো ধরনের মামলা বা অপরাধ ছাড়াই আমিরকে গ্রেফতার করে গুয়ানতানামো বে’র কারাগারে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আমিরের বিষয়টি নিয়ে অনেকবার আলাপ করার চেষ্টা করলেও কোনো সফলতা আসেনি। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালের একজন মুখপাত্র সোমবার রাতে জানায়, ‘মার্কিন সরকার মি. আমিরের ব্যাপারটি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে পরিষ্কারভাবেই জানাতে চাই যে, আমরা আমিরকে মুক্ত অবস্থায় অতিসত্বর যুক্তরাজ্যে দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রী আমিরের ব্যাপারটি নিয়ে জি-৮ সম্মেলনের সময়ে প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে কথা বলেছেন।’ মুখপাত্র আরও জানায়, ‘প্রধানমন্ত্রী পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে মি. আমিরের মুক্তি বিষয়ে একটি লিখিত চিঠি পাঠিয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের সহকারী প্রধানমন্ত্রী নিজে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মি. আমির বিষয়ে কথা বলতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। আমরা আশাবাদী যে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার যুক্তরাজ্যের অনুরোধের গুরুত্ব বুঝতে পারবে এবং মি. আমিরকে মুক্তি দেবে। কারণ মি. আমিরের মুক্তির বিষয়টি পুরো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হাতে।’ শাকের আমির একজন ব্রিটিশ নাগরিক। স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে তিনি দক্ষিণ লন্ডনে থাকতেন। যুক্তরাষ্ট্র তাকে বরাবরই তার জন্মভূমি সৌদি আরবে পাঠানোর হুমকি দিয়ে আসছিল। কিভাবে আমিরকে আফগানিস্তানের বাগরাম কারাগারে অত্যাচার করা হতো তা আমিরের ভাষ্যে উঠে আসে।

No comments

Powered by Blogger.