ইরানের মোসাদ্দেককে উৎখাতের কথা সিআইএ নথিতে স্বীকার

ইরানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ মোসাদ্দেককে উৎখাতে ১৯৫৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে মুখ্য ভূমিকা রাখার কথা স্বীকার করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ)। অভ্যুত্থানের ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় নিরাপত্তা মহাফেজখানা প্রথমবারের মতো এ-সংক্রান্ত সিআইয়ের নথিপত্র প্রকাশ করেছে। ১৯৫৩ সালের ওই অভ্যুত্থানের পর তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয় যা আবার ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর নতুন মাত্রা লাভ করে।
জাতীয় নিরাপত্তা মহাফেজখানার প্রকাশ করা একটি নথিতে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী সিআইয়ের নির্দেশনায় ওই সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো হয়। ইরানের তেলশিল্পের জাতীয়করণের চেষ্টার প্রেক্ষাপটে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোসাদ্দেক ও তাঁর ন্যাশনাল ফ্রন্টের মন্ত্রিসভাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তবে অভ্যুত্থানে সিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে তেমন লুকোছাপা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডেলিন অলব্রাইট ২০০০ সালে ওই অভ্যুত্থানে সিআইয়ের সংশ্লিষ্টতার কথা প্রকাশ্যে বলেন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও ২০০৯ সালে কায়রো ভাষণের সময় সিআইয়ের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এত দিন তা ঢালাওভাবে অস্বীকার করে আসছিল। নথিপত্র থেকে জানা গেছে, ইরানে ওই অভ্যুত্থানের সময় সিআইয়ের পাশাপাশি ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। কারণ মোসাদ্দেক অ্যাংলো-ইরানীয় তেল কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যুক্তরাজ্যকে ক্ষুব্ধ করেছিলেন। ইরানের অভ্যন্তরীণ ইতিহাসবিষয়ক সিআইয়ের এসব নথিপত্রের সম্পাদক ম্যালকম বাইরন বলেছেন, নানা দিক থেকেই নথিগুলো গুরুত্বপূর্ণ। অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এসব নথিপত্রে ইরানের ওই অভ্যুত্থানের আগে ও পরে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকার কথা বলা আছে। তথ্য অধিকার আইনের আওতায় এসব নথিপত্র সংগ্রহ করে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা মহাফেজখানা। বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.