ইইউর কার্যালয়েও আড়ি পেতেছিল যুক্তরাষ্ট্র

এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরও গুরুতর আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছে। জার্মানির বহুল প্রচারিত সাময়িকী ডের স্পিগেল গত শনিবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ে আড়ি পেতেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে দ্রুত বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন ইইউ পার্লামেন্টের প্রধান মার্টিন শুলজ। ডের স্পিগেল লিখেছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনের কাছ থেকে তারা এ তথ্য পেয়েছে। ২০১০ সালের মার্কিন গোপন নথির বরাত দিয়ে ডের স্পিগেল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) ওয়াশিংটনে ইইউর অভ্যন্তরীণ কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ও নিউইয়র্কে ইইউর কার্যালয়ে আড়ি পাতে। এনএসএ এভাবে আড়ি পেতে ইইউর কোনো তথ্য নিয়েছে কি না এবং নিলেও কোন ধরনের তথ্য নিয়েছে, তা জানা যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রশাসন জার্মানির অন্তত ৫০ লাখ ফোন কল, ই-মেইল ও টেক্সট মেসেজে নজরদারি করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বাণিজ্য ও সামরিক বিষয় নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যাঁরা আলোচনা করছেন, তাঁদের জন্য এখানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। ইইউ পার্লামেন্টের প্রধান মার্টিন শুলজ গত শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ অভিযোগসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানাচ্ছি আমি।’ শুলজ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এ অভিযোগ সত্যি হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কে ‘বড় ধরনের প্রভাব’ পড়বে। ডের স্পিগেল-এর প্রতিবেদনের ব্যাপারে লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেন অ্যাসেলবর্ন বলেন, এ ঘটনা সত্যি হলে তা হবে চরম বিরক্তিকর। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে মিত্রদের ওপর আড়ি পাতার পরিবর্তে নিজের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ওপর নজরদারি করা। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ডের স্পিগেল-এর প্রতিবেদনের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। ‘জার্মানি তৃতীয় শ্রেণীর অংশীদার’: মার্কিন গোপন নথির বরাত দিয়ে ডের স্পিগেল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কর্তৃপক্ষের করা শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় শ্রেণীর অংশীদার। ইউরোপের যেকোনো দেশের চেয়ে জার্মানির ওপর বেশি নজরদারি করে মার্কিন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র চীন, ইরাক বা সৌদি আরবের ওপর যেমন নজরদারি করে, জার্মানির ওপরও সে পর্যায়েই নজরদারি করে। ইইউর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আড়ি পাতার অভিযোগের ব্যাখ্যা দাবি করেছেন জার্মান বিচারমন্ত্রী স্যাবাইন স্নারেনবার্গার। তিনি বলেন, এ খবর স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। বিবিসি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.