শরীরচর্চা শিক্ষক

সরকারি-বেসরকারি কলেজের শরীরচর্চার শিক্ষকেরা নানা পেশাগত বৈষম্যের শিকার। উপযুক্ত যোগ্যতা-অভিজ্ঞতা থাকলেও পদোন্নতির সুযোগ নেই। নিম্ন পদমর্যাদার এই শিক্ষক ক্রীড়া বিষয়ের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও কলেজের ক্রীড়া কমিটির সম্পাদক হতে পারেন না। নিজের জনপ্রিয়তা ও প্রভাব বিস্তার না করলে স্বাভাবিক নিয়মে শরীরচর্চা শিক্ষককে কলেজ পরিচালনা পরিষদের শিক্ষক প্রতিনিধি হওয়ার সুযোগও দেওয়া হয় না, শিক্ষক পরিষদের সদস্য হয়ে অন্যদের নির্বাচিত করা সুযোগ থাকলেও অন্য শিক্ষকেরা শরীরচর্চা শিক্ষককে নির্বাচিত করার ঔদার্য দেখান না। কেননা, বরাবরের মতো কলেজের সব কমিটিতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকের জ্যেষ্ঠতা বিচার করা হয়। কলেজ পর্যায়ে খেলাধুলা স্তিমিত হওয়ার অন্যতম কারণ প্রভাষক থেকে নিচের পদমর্যাদার শরীরচর্চা শিক্ষকের মতামত যেখানে উপেক্ষিত, অগ্রাহ্য ও গুরুত্বহীন। ফলে ক্রীড়ার ব্যাপারে ব্যাপক উৎসাহী শিক্ষকটিও একসময় চোখ-কান বুজে কোনোরকমে চাকরিজীবন পার করতে ব্যস্ত হন। খেলাধুলাকে সবাই ভালোবাসলেও খেলাধুলাবিষয়ক শিক্ষকের অবস্থান সবার নিচে। উচ্চতর যোগ্যতায় ডিগ্রি কলেজের লাইব্রেরিয়ানদের প্রভাষকের সমমর্যাদা থাকলেও শারীরিক শিক্ষায় মাস্টার্স (এমপিএড) বা অন্য বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রির শর্ত নিয়োগবিধিতে না থাকায় শরীরচর্চা শিক্ষকেরা প্রভাষকের অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দেশে শারীরিক শিক্ষায় অনার্স-মাস্টার্স চালু হওয়ায় সত্ত্বেও উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি পর্যায়ের এই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা পরিবর্তন হচ্ছে না। তাই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন, কলেজের ক্রীড়া উন্নয়নে শারীরিক শিক্ষা পাঠক্রম চালু ও শরীরচর্চা শিক্ষকদের পেশাগত বৈষম্য অবসানে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে দীর্ঘদিনের অবহেলা-বঞ্চনার অবসান ঘটানো হোক।
চঞ্চল কুমার কর্মকার
শরীরচর্চা শিক্ষক, কুমারখালী কলেজ, কুষ্টিয়া।

No comments

Powered by Blogger.