বিদ্যুতের সাফল্য থামিয়ে দেবার ষড়যন্ত্র by স্বদেশ রায়

কয়েকদিন আগে একটি সেমিনারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, বিশিষ্ট শিল্পপতি মঞ্জুর ই ইলাহী বলেছেন, বিদ্যুত কোন্ পদ্ধতিতে আসছে সেটা আমার কাছে বড় নয়। আমি বিদ্যুত পাচ্ছি, আমার কারখানা চলছে এটাই আমার কাছে বড়।


কারখানা চলার ফলে দেশের জন্যে কী লাভ না লোকসান হয়েছে সেটাও ইতোমধ্যে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাবেক এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট আনিসুল হক প্রকাশ করেছেন। তিনি গবেষকদের মাধ্যমে প্রফেশনালি গবেষণা করিয়ে দেখিয়েছেন। বিদ্যুত উৎপাদন বাড়ার ফলে দেশে মোটা অঙ্কের গার্মেন্টস রফতানি বেড়েছে। ৭ লাখের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে উপযোগ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।
শিল্পপতি বা ব্যবসায়ীদের আচরণের ভিতর দিয়ে যে বিষয়টি পাওয়া যায়, তাহলো তাঁরা সাধারণত কোন কিছু বাড়িয়ে বলতে চান না। বরং যেমন হিসাব কষে তাঁরা ব্যবসা করেন তেমনি খুব হিসাব নিকাষ করেই তাঁরা কথা বলেন। তাই তারা যখন বিদ্যুতের বিষয়ে এমনভাবে বলছেন, তখন ধরেই নিতে হবে বিদ্যুত উৎপাদনে সরকার সফল হয়েছে। সরকার যে সফল হয়েছে এবং আরো সফল হতে যাচ্ছে এটা কিন্তু সরকারও ঠিকমতো বুঝতে পারেনি। তারা নিজেরাও ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিল এই বিদ্যুতবিরোধী প্রচারণার কাছে। প্রচারণার মাত্রা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যাতে সরকারের অনেক লোক ভাবতে শুরু করেছিলেন বিদ্যুত উৎপদান করে তাঁরা ভুল করেছেন। এমনকি এখনও অবধি সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে বা কোন একজনকে এ কথাটা বলতে শুনিনি যে, পাকিস্তান আমলে যে বিদ্যুত ছিল সেটা ও পরবর্তী ৩৯ বছরের উৎপাদন যোগ করে এ দেশে মোট বিদ্যুতের পরিমাণ ছিল ৩০০০ মেগাওয়াট। আর এই সরকার গত তিন বছরে উৎপাদন করেছে ৩১০০ মেগাওয়াট। পাকিস্তান আমল বাদ দেয়া যাক, স্বাধীনতার পরে ৩৯ বছরে যা বিদ্যুত উৎপাদন হয়েছে বর্তমান সরকার গত তিন বছরে তার থেকে বেশি বিদ্যুত উৎপাদন করেছে। বিরুদ্ধ প্রচারণার ফলে সরকার তার নিজের এই সাফল্যকেও তুলে ধরতে ভয় পাচ্ছে কেন এটাই বোঝা দায়। তবে একটা বিষয় বোঝা যায়, এর বিরুদ্ধে যেভাবে মিডিয়ায় প্রচারণা চলছে তাতেই সরকার ভয় পেয়ে গেছে।
বিদুতের দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে বর্তমান সরকার এগুচ্ছে। প্রথমে সাময়িক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন পরে দীর্ঘস্থায়ী কেন্দ্র স্থাপনের যে রূপরেখাÑএটা বর্তমান সরকার ধারাবাহিক ক্ষমতায় থেকে বাস্তবায়ন করতে পারলে বদলে যাবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই উন্নয়নের বিরোধিতা করার জন্যে দেশের বাইরে ও দেশের ভিতরে সংঘবদ্ধভাবে কাজ চলছে। এবং এ কাজ কতটা সংঘবদ্ধ তার একটা ছোট উদাহরণ হলো, গত বছরের অক্টোবরের দিকে ভুটান অবজারভারে, বাংলাদেশ ও ভুটানের নতুন অর্থনীতি নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। ওই লেখায় ভুটানের জলবিদ্যুত ও বর্তমান সরকারের উদ্যোগ এই প্রসঙ্গ বিস্তারিত বলতে গিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের বিদ্যুত প্রয়োজনীয়তা এবং ওই বিদ্যুত ভুটানের অর্থনীতিতে কী উপযোগ আনবে সে সব নিয়েও কিছু কথা লিখি। এই লেখা প্রকাশ হবার কয়েক দিন পরে আমার কয়েক বন্ধু আমাকে ইমেলে জানায়, পাকিস্তান ডিফেন্স এনালিসিস-এর ওয়েবসাইটে আমার ওই লেখা আপলোড হয়েছে। আমি যেন দেখি। দিন রাতের অধিকাংশ সময় কম্পিউটারের সঙ্গে থাকার কারণে সেটা দেখতে আমার দেরি হয় না। এবং সেটা দেখে বুঝতেও বাকি থাকে না কেন পাকিস্তান ডিফেন্স এনালিসিসের ওয়েবসাইট আমার লেখা আপলোড করল। কারণ ওই লেখার নিচে একাধিক মন্তব্যে আমাকে যা-তা বলা হয়েছে। এ সব বলার একমাত্র উদ্দেশ্য, কেন আমি বর্তমান সরকারের বিদ্যুত উৎপাদনে সাফল্য ও বিদ্যুত পরিকল্পনাকে যথেষ্ট স্বীকৃতি দিয়েছি। তবে এর মাধ্যমে আমি আরও একটি বিষয় বুঝতে পারি তা হলো, বাংলাদেশে বিদ্যুত উৎপাদনকে থমকে দেবার জন্যে, বন্ধ করার জন্যে যেভাবে প্রচারণা চলছে এর উৎস কোথায়? পাকিস্তানের ডিফেন্স বিভাগের কোন্ শাখাটি বাংলাদেশে এ সব নিয়ন্ত্রণ করে তা নিশ্চয়ই আর বলার প্রয়োজন পড়ে না। এ দেশের সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন।
শেখ হাসিনার এই বিদ্যুত পরিকল্পনাকে আটকে দেবার জন্যে, তিনি যাতে বিদ্যুত উৎপাদন করতে না পারেন এই ষড়যন্ত্র তাই এরা শুরু থেকেই করে চলেছে। যেমন শেখ হাসিনা বিদ্যুত ও জ্বালানি উপদেষ্টা হিসেবে তৌফিক এলাহী বীর বিক্রমকে নিয়োগ দেবার দুই তিন দিন পরেই একটি গোষ্ঠী তাদের সমাবেশে বলে যে, তৌফিক এলাহী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নির্দেশে শেখ হাসিনার অনুমতি ছাড়াই উপদেষ্টা হিসেবে অফিস করা শুরু করেছেন। অর্থাৎ নির্বাচনের পর পরই শেখ হাসিনা তখন প্রায় শত ভাগ লোকের কাছে জনপ্রিয় তাই তাকে আঘাত না করে মিথ্যার বেসাতি জড়িয়ে তারা তৌফিক এলাহীকে আঘাত করতে শুরু করে। যাতে বিদ্যুত উৎপাদন ব্যাহত হয়। এই কাজ কতটা সংঘবদ্ধ ছিল যে, তৌফিক এলাহী উপদেষ্টা হবার অল্প কিছু দিনের ভিতর তার বিরুদ্ধে একটি বিশাল চাররঙা পোস্টার ছাপানো হয়। একটি ছাপাখানা থেকে এক ব্যক্তি আমাকে ওই পোস্টারটি এনে দেয় পোস্টারের মালিকদেরকে সরবরাহ করার আগেই। তিনি পরে এটাও জানান যে, স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ওই পোস্টার ছাপা ও কাগজের বিল দিয়েছে। এর পরে তেল-গ্যাস নিয়ে আন্দোলন করা একটি বিশেষ সংগঠনকে ওই পোস্টারটি বিভিন্ন দেয়ালে লাগাতে দেখা যায়। এর থেকে বোঝা যায়, এই সংগঠনটিকে শুরু থেকেই জামায়াত-বিএনপি বর্তমান সরকারের বিদ্যুত উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার কাজে লাগাচ্ছে। যেমন এই সংগঠনটির একটি লং মার্চের সময় বিভিন্ন পেশাজীবীর কাছ থেকে চাঁদা তোলেন। ওই সময়ে একটি বিশেষ পেশাজীবী থেকে একজন ফোন করে জানান, আপনারা একটু খবর নিয়ে রিপোর্ট করেন যে, ওই সংগঠনের লংমার্চে আমাদের পেশার জামায়াত-বিএনপির সমর্থকরা যেচে চাঁদা দিচ্ছে। কেউ যদি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে টাকা দেয় সেখানে সংবাদপত্রে রিপোর্ট করার কিছু থাকে না। তবে এটা ঠিক যে রিপোর্ট না করলেও এসব তথ্য থেকে অন্তত এই ধারণাটি পাওয়া যায়, সংগঠনটি এ মুহূর্তে কাদের অর্থে চলছে।
এই প্রচার প্রচারণা, এই অর্থব্যয় যে সরকারের ও দেশের ক্ষতি করতে পারেনি তা কিন্তু নয়। ৩৯ বছরে যে বিদ্যুত উৎপাদন হয়েছে শেখ হাসিনা গত তিন বছরে তার থেকে বেশি উৎপাদন করেছেন। তবে এর পাশাপাশি আরও সত্য হলো, এই তিন বছরে বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা আরও বেশি কাজ করতে পারতেন সেটা তাঁরা ঠেকিয়ে দিতে পেরেছেন। যেমন তাঁদের কারণে এখনও এ দেশের কয়লা কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান সরকার সাহস পাচ্ছে না। কারণ, কয়লা তুলতে গেলেই জমিতে হাত দিতে হবে। সেখানে কৃষককে ভুল বুঝিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে যেমন সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে করেছিল সে দেশের দায়িত্বহীন রাজনৈতিক নেত্রী মমতা ব্যানার্জী। এ দেশেও বর্তমান সরকারে বিপরীতে যারা আছে তারাও মমতার থেকে ভালো কিছু নয়। বরং একই কিসিমের। কেবল কাপড় চোপড়ে যা পার্থক্য। কিন্তু কয়লাসহ অনেক বড় কাজ এদের কারণে সরকার এই টার্মে করতে না পারলেও শত প্রচারণাকে উপেক্ষা করে আজ বিদ্যুত উৎপাদনকে এ পর্যায়ে নিয়েছে যে ব্যবসায়ীরা তাঁদের মুখ খুলতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে।
কিন্তু তারপরেও ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। যেমন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ একটি সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, তাঁরা গোলাম আযমের মতো তৌফিক এলাহীর বিরুদ্ধেও গণআদালত করবেন। তৌফিক এলাহীর নামের শেষে বীরবিক্রম লেখা আছে। একজন বীরবিক্রম দেশের জন্যে কী করেছেন সেটা আর লিখে বলার দরকার পড়ে না। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো, আনু মুহাম্মদকে বাংলাদেশের জনগণ কবে রায় দিয়েছে যে, তিনি একজন বীরবিক্রমকে গোলাম আযমের সঙ্গে তুলনা করবেন? বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। নিশ্চয়ই তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন। কারণ একজন বীরবিক্রমকে এভাবে অপমান করার লাইসেন্স নিশ্চয়ই কারো হাতে তুলে দেয়া উচিত নয়। তাছাড়া হেলাল মোর্শেদের নিশ্চয়ই মনে আছে, একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাকে সচিবালয়ের গেটে আটকে দেয়া হয়েছিল। তাকে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়েছিল। এই খবর পেয়ে সচিবের চেয়ার থেকে তৌফিক এলাহী ছুটে গিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মানের সঙ্গে সচিবালয়ে নিয়ে আসেন। তাই যিনি অন্য মুক্তিযোদ্ধার সম্মান রক্ষা করেন, তাঁর সম্মান যারা হানি করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা নিশ্চয়ই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্ব।
তাছাড়া গত কয়েক দিনে এই গ্রুপের কিছু লোকজন যে ভাষায় বিভিন্ন সেমিনার ও টকশোতে যারা বিদ্যুতের সাফল্য নিয়ে বলছে তাদেরকে আক্রমণে করছে সে ভাষা খুব শোভনীয় নয়। তাদেরই একজন বলছেন, তারা তৌফিক এলাহীর বিরুদ্ধে গণআদালত করবেন। তৌফিক এলাহী যদি কোন অন্যায় করেন, তার জন্যে কি আদালতে কোন ইনডেমনিটি দেয়া আছে যে, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না। তাছাড়া এই সব সংগঠনের নেতারা কি পরিবেশের নাম করে বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ করার যুক্তি নিয়ে আদালতে যাননি? অনেকেই আদালতে গেছেন। তাহলে তৌফিক এলাহীর বিরুদ্ধে আদালত রেখে গণআদালত কেন?
এর উদ্দেশ্য কিন্তু অত্যন্ত পরিষ্কার, উদ্দেশ্য একটাই, তাহলো বর্তমান সরকারের বিদ্যুত উন্নয়ন কাজকে ব্যাহত করা। কারণ, তিন বছরে আরও যেসব অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে তাতে আগামী দেড় বছরে বিদ্যুত পরিস্থিতি আরও ভাল হবে। ইতোমধ্যে এক কোটির বেশি মানুষ নতুন বিদ্যুত সুবিধা ভোগ করছেন। আগামী দেড় বছরে এ সংখ্যা বাড়বে, যা জামাত-বিএনপির জন্য খুবই দুঃসংবাদ। কারণ, বর্তমান সরকার নির্বাচনের ময়দানে গিয়ে বলতে পারবে, তারা আরও এত কোটি মানুষকে গত পাঁচ বছরে বিদুতের সুবিধার ভিতর এনেছে। তার বদলে জামায়াত-বিএনপি যে পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল ওই পাঁচ বছর নতুন একজনকেও বিদ্যুতের সুবিধার ভিতর আনতে পারেনি। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, জামাত-বিএনপি মুশকিলে পড়বে তাতে এই সংগঠনটির কি? এই সংগঠন সম্পর্কে আগেও লিখেছি, এই সংগঠনের শীর্ষ এক ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু নিহত হলে মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন। তাছাড়া দেশের মানুষের মনে রাখা দরকার বর্তমান সরকারের আমলে জামায়াত-বিএনপি পিছনে থেকে এই সংগঠনটি দিয়েই কিন্তু প্রথম হরতালটি করায়।
তাই আজ কুইক রেন্টাল হোক, তৌফিক এলাহী হোক যার বা যে কিছুর বিরুদ্ধে এই কথা বলা হচ্ছে না কেন, এর মূল উদ্দেশ্য কিন্তু বর্তমান সরকারের বিদ্যুত উৎপাদনকে ব্যাহত করা। তবে দেশের মানুষের জন্যে একটি ভাল বিষয় হচ্ছে, শেখ হাসিনা ভেঙ্গে যেতে পারেন, মারা যেতে পারেন কিন্তু মচকে যান না। যেটা তাঁর স্বভাবে নেই। ১/১১ এ প্রায় গোটা দেশ যখন মচকে গিয়েছিল শেখ হাসিনা তখন মচকে যাননি। তাই এই অপপ্রচার বা প্রচারণাকে উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই দেশের অগ্রগতির জন্যে বিদ্যুত উৎপাদন এগিয়ে নেবেন। কারণ তিনি সঠিক কাজই করেছেন। দেশের বিদ্যুত পরিস্থিতি জামায়াত-বিএনপি যেখানে নিয়ে গিয়েছিল। কামাল সিদ্দিকীর বক্তব্য অনুযায়ী শুধু তারেকের কমিশন বাণিজ্যের জন্যেই বিদ্যুতের কোন টেন্ডার হয়নি। পাঁচ বছরে দেশে কোন বিদ্যুত উৎপাদন হয়নি। আর বিদ্যুত না হওয়াতে দেশের বাস্তব অবস্থা যেখানে চলে গিয়েছিল তাতে দেশের শিল্প কলকারখানা, কৃষি সব কিছু সচল রাখার জন্যে শেখ হাসিনা যে কাজ করেছেন এর কোন বিকল্প ছিল না। কুইক রেন্টাল ছাড়া দ্রুত বিদ্যুত উৎপাদনের আর কি পথ ছিল। যারা তিন মাসে পুরনো বিদ্যুতকেন্দ্র নিয়ে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত তৈরির গল্প শোনাচ্ছেন তাঁরাই তো বেগম জিয়াকে পঞ্চাশটি কুইক রেন্টাল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সে সব কাগজপত্র সরকার হয়ত খুঁজলে বিদ্যুত বিভাগে পাবে। কমিশন বাণিজ্যের কারণে সেদিন সেটা সম্ভব হয়নি। তখন তাদের এ সব তিন মাসের তত্ত্ব কোথায় ছিল? যেটা বাস্তবে সম্ভব নয় সেই ফানুস না উড়িয়ে মাটির পৃথিবীতেই সরকারকে থাকতে হয়। শেখ হাসিনা সেখানেই আছেন। তিনি সাফল্য অর্জন করেছেন বলেই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি যদি বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো যথাভাবে উৎপাদনে রাখতে পারেন, সেই নীতি নেন। পাশাপাশি এখন পুরনো বিদ্যুতকেন্দ্র যেগুলো সংস্কারের যোগ্য সেগুলো সংস্কার ও বড় প্লান্ট তৈরির দিকে বেশি মনোযোগী হন। তাহলে আগামী বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবেই। আমি আগেও এই কলামে বহুবার উল্লেখ করেছি যে, আমাদের মনে রাখা দরকার, উন্নয়নের যে ট্রেন এশিয়াতে প্রবেশ করেছে ওই ট্রেনের যাত্রী হতে হলে আগামী দশ বছরের ভিতর আমাদের ৫০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত তৈরি করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।

swadeshroy@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.