এরপর ঢাকায় ম্যারাডোনা-ম্যানইউ?

মেসি ঢাকায় আসার পর আর কিছুই অসম্ভব মনে করছেন না কাজী সালাউদ্দিন। বাফুফের সভাপতি কাল বলেছেন, বাফুফের শীর্ষ পদে ফের নির্বাচিত হলে ঢাকায় প্রথমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে আনার চেষ্টা করবেন।
‘আগামী এপ্রিলে বাফুফের বর্তমান কমিটির চার বছরের মেয়াদ শেষ। আবার নির্বাচিত হলে আগামী জুলাইয়ের ১২ অথবা ১৫ তারিখ ঢাকায় ম্যানইউকে দেখতে পারেন’—বলেছেন সালাউদ্দিন।
জুলাইয়ের ১২ অথবা ১৫ তারিখ কেন? তাঁর কথা, ‘ওই দুটি দিনে ম্যানইউর শিডিউল পাওয়া যেতে পারে। সে জন্যই বলেছি।’ পাশাপাশি যোগ করেন, ‘যেহেতু ম্যারাডোনা এখন দুবাইয়ের আল ওয়াসল ক্লাবের কোচ, আমাদের কাছাকাছিই আছেন, চেষ্টা করলে আনা কঠিন কিছু নয়। আমি আবার নির্বাচিত হলে ম্যারাডোনাকে আনতে চাইব জুলাইয়ের মধ্যে।’
নতুন লক্ষ্য নিয়ে সালাউদ্দিন যখন কথা বলছিলেন তাঁর কক্ষে, ঢাকায় আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ আয়োজনের নানা অব্যবস্থাপনার আরও কিছু ছবি পাওয়া গেল। গোটা আয়োজনটা ছিল বাফুফের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ৫০ হাজার টাকার টিকিট কেটেও অনেকে গিয়ে দেখেন, আসন দখল। কে বা কারা আসন দখল করে ফেলেছে। আঙুল তোলা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর। তারা নিজেদের লোকজনকে দেদার মাঠে ঢুকিয়েছে বলে বাফুফের কর্মকর্তারা বলাবলি করছেন।
সালাউদ্দিন নিজেই দিলেন বিস্ময়কর তথ্য, ‘কার কথা কী বলব, আমি নিজেই বসার জায়গা পাইনি! এমনকি সালমান ভাইকে (৩০ কোটি টাকার এই আয়োজনের পৃষ্ঠপোষক বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান) পর্যন্ত বসার জায়গা দিতে পারিনি। সব সিট দখল, যারা বসে আছে, তাদের অনেককে চিনিও না। সালমান ভাই পরে বললেন, তাঁকে গ্যালারিতে বসার ব্যবস্থা করে দিতে। শেষমেশ ফেডারেশনের এক কর্মকর্তাকে তুলে তাঁকে বসতে দিয়েছি ভিআইপিতে। আমি নিজে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম, ঠিকভাবে খেলাও দেখতে পারিনি। এই হলো অবস্থা...।’
কারা, কীভাবে ভিআইপি বক্সসহ নানা জায়গায় ঢুকে পড়ে বিনা টিকিটে ম্যাচ দেখেছে, তার তদন্ত দাবি করেছেন এই আয়োজনের নিরাপত্তা কমিটির প্রধান বাফুফের সহসভাপতি বাদল রায়। পাশাপাশি বিভিন্ন সাব-কমিটির নামে কারা দেদার কার্ড (যা গলায় ঝুলিয়ে শাহেনশাহর মতো অচেনা সব লোক খেলা দেখেছে বিনা টিকিটে) বিলিয়েছে, তারও তদন্ত চেয়েছেন। অনুশীলন সেশনের টিকিট-বাণিজ্যসহ আর যেসব বাণিজ্য হয়েছে, সবকিছুরই তদন্তের দাবি উঠেছে।
সালাউদ্দিন তদন্তের আভাস দিয়েছেন, অবশ্যই আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখব। তদন্ত হতেই হবে। নইলে ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারব না। শিক্ষা নেওয়াটা জরুরি।’ আয়োজক কমিটির প্রধান আনোয়ারুল হক জানালেন, ম্যাচের সময় মাঠে বড় পর্দাটা অচল হয়ে থাকার জন্য নিজেদের দায় স্বীকার করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে চিঠি দিয়ে দায়িত্ব নিতে বলেছেন তিনি।
এই আলোচনায় উঠে আসে ডিসেম্বরে ভারতের কটকে অনুষ্ঠেয় সাফ ফুটবলের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি নিয়েও। এখন পর্যন্ত বাফুফে কোনো পরিকল্পনাই করেনি। আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের আড়ালে আসল জিনিসটাই ঢাকা পড়ে আছে। সালাউদ্দিন কাল বললেন, ‘এবার জাতীয় দলকে প্রস্তুতির জন্য দুই মাস সময় দিয়ে বলব, প্রস্তুতির ঘাটতি রাখিনি। কাজেই ফল দাও।’ তবে সেখানে নানা মতের পর মাস খানেক অনুশীলন হবে বলেই মনে হলো।
সাফ টুর্নামেন্ট শেষে ডিসেম্বরে ফেডারেশন কাপ দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু। নভেম্বরে বাংলাদেশ লিগের দ্বিতীয় স্তর। সুপার কাপ নিয়েও কথা উঠেছে। এটি নিয়ে সালাউদ্দিন বলছেন, ‘সুপার কাপ রাখব কি রাখব না, ভেবে দেখতে হবে। রাখলে কীভাবে করব, সেটিও ভাবতে হবে।’
এ মাসেই ঢাকায় হওয়ার কথা ছিল প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ। নতুন করে এটির ভাগ্য নির্ধারিত হবে কয়েক দিনের মধ্যেই।

No comments

Powered by Blogger.