২০১১ সালের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ফিলিস্তিনের

ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা আগামীকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে শুরু হচ্ছে। আলোচনায় যোগ দেওয়ার জন্য গতকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এদিকে অধিকৃত এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণের ওপর আংশিক স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, সে সম্পর্কে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে কিছু বলা হয়নি। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক জর্ডানে গোপন বৈঠক করেছেন। এদিকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী সালাম ফায়েদ ২০১১ সালের মধ্যে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একটি পরিকল্পনার বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন।
ফিলিস্তিনিরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নতুন বসতি নির্মাণের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো না হলে তাঁরা শান্তি আলোচনা থেকে সরে আসবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর এই আংশিক স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, একটি শান্তিচুক্তি সম্ভব। গত সোমবার তিনি বলেন, ‘আমি অবুঝ নই। আমি সব সমস্যা ও বাধা দেখতে পাচ্ছি এবং তা সত্ত্বেও আমি বিশ্বাস করি, চূড়ান্ত শান্তিচুক্তি অর্জনযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা। তবে তা শুধু আমাদের ওপর নির্ভর করছে না।’
আজ বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ও মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তি আলোচনা শুরু হবে।
গোপন বৈঠক: মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা সামনে রেখে গত রোববার জর্ডাদের রাজধানী আম্মানে গোপন বৈঠক করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক। গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এ কথা বলা হয়।
তবে খবরে বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। খবরে বলা হয়, আব্বাস ও বারাক আম্মানের একটি বাড়িতে বৈঠক করেছেন। জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেনি।
২০১১ সালের মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র: গত সোমবার ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী সালাম ফায়েদ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে তাঁর পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপের বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালের মধ্যে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব। রামাল্লায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তাঁর সরকার এমন একটি বাস্তবতা তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা উপেক্ষা করা কঠিন হবে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী ফিলিস্তিন সরকার আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেবে।
প্রধানমন্ত্রী ফায়েদ বলেন, পরিকল্পনার দ্বিতীয় বছরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে জাতীয় প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দিতে চায় সরকার। তিনি স্বীকার করেন, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ আর্থিক সংকট মোকাবিলা করছে। আর্থিক সংকটের কারণে মৌলিক চাহিদা পূরণ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফায়েদ বলেন, শুধু গত এক বছরে তাঁর সরকার অবকাঠামো, পানি, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে দুই হাজার প্রকল্প বাস্তবায়নে সফল হয়েছে।
গত সোমবার প্রকাশিত এক জনমত জরিপে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট ওবামা এমন চুক্তি নিশ্চিত করতে পারবেন, যে চুক্তির মাধ্যমে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে—দুই-তৃতীয়াংশ ফিলিস্তিনিই এটা বিশ্বাস করেন না। এরই মধ্যে ফাতাহ ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না।

No comments

Powered by Blogger.