সড়ক কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে -সিলেটের ‘ভিআইপি’ সড়কের করুণ অবস্থা

সড়ক ও জনপথের সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের অবস্থা খুবই করুণ। ‘ভিআইপি’ প্রকল্পভুক্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। কার্পেটিং উঠে মাটিও দেবে গেছে বেশ কিছু জায়গায়। ফলে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোর এক সচিত্র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘ভিআইপি’ প্রকল্পের আওতাধীন সড়কটির উন্নয়নে ২২ কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও এটি ২২ মাসও টেকেনি। কাজ সম্পন্ন করার পর ছয় মাস যেতে না যেতেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আবার সংস্কার করা হয়। কিন্তু সংস্কার করা অংশেও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাত্ সংস্কারের সময় যথাযথভাবে কাজটি করা হয়নি, মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি। কেন তা হয়নি, তা বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়। সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ যথাযথভাবে খরচ না করে পকেটে পুরে ফেলা হলেই এমন হওয়ার কথা।
সড়ক উন্নয়ন খাতে দুর্নীতির সংবাদ প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতায় দেখা যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও লাগামহীন দুর্নীতি পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তুলেছে। তাই সিলেটের সড়কটি সংস্কার হওয়া সত্ত্বেও এত দ্রুত কেন এ অবস্থা হলো, তা তদন্ত হওয়া দরকার। উন্নয়নকাজের দায়িত্ব যারা পেয়েছিল, তারা কী প্রক্রিয়ায় পেয়েছিল আর কীভাবে তা বাস্তবায়িত হলো, তা খতিয়ে দেখা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকির দায়িত্ব যাদের ছিল, তারা কী করেছে সেটাও দেখতে হবে। কোনো ভাগবাটোয়ারার ব্যাপার না থাকলে তো এই নিম্নমানের কাজ অনুমোদন হওয়ার কথা নয়।
ভালো যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার ওপর। সন্দেহ নেই, সড়কের করুণ অবস্থা সৃষ্টির পেছনে কর্তৃপক্ষের অযত্ন ও অবহেলা অনেকাংশে দায়ী। জবাবদিহির অভাবে তারা পার পেয়ে যায়। সংস্কারের পরও সড়কের করুণ অবস্থা কেন হলো, এর যৌক্তিক ব্যাখ্যা কর্তৃপক্ষকে দিতে বাধ্য করা হলে এবং দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা গেলে এ অবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটবে বলে আশা করা যায়।

No comments

Powered by Blogger.