‘বাংলাদেশে ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক নির্বাচন হয়েছে’: -সাক্ষাৎকারে আন্দালিব রহমান পার্থ by মাধবী চৌধুরী

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক নির্বাচন হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। এই নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফল ঘটেনি। পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে তিনি আরো বলেছেন, এই সরকারকে যেন অবৈধ বলা না যায় সে জন্য সংসদে স্পিকারের রুলিং পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে।। গত ৩০ জুন (২০১৯) সাউথ এশিয়া মনিটরকে (স্যাম) দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিচে তুলে ধরা হলো:
স্যাম: দেশের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাই…
আ:পা: বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি নেই। রাজনীতি থমকে গেছে। রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠান ভঙ্গুর অবস্থায়। উন্নয়নের ডামাডোল বাজলেও বোঝা যাচ্ছে না যে, দুর্নীতির জন্য উন্নয়ন হচ্ছে, নাকি উন্নয়নের জন্য দুর্নীতি হচ্ছে। অনেকে বলেন, দুর্নীতির কালি দিয়ে উন্নয়নের ছবি আকাঁ হচ্ছে। বিরোধী দল নেই। যারা আছেন তারা পাপেট বিরোধী দল।
সংসদে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফল ঘটেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক নির্বাচন হয়েছে ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের অবস্থা এতোটাই খারাপ যে, সরকার অবৈধ এটি বলা যাতে না যায় তার জন্য সংসদে স্পিকারের রুলিং চাওয়া হচ্ছে। স্পিকার রুলিং দিয়ে ঠিক করবে যে এ সরকার অবৈধ নয়; বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এটি তখনই ঘটে যখন জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক থাকে না।
স্যাম: আপনার ভাষায়, তার অর্থ স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে অবৈধ সরকার?
আ:পা: ঠিক সেরকম নয়। আমি বলতে চাচ্ছি, সরকারের অবস্থা এমন পর্যায়ে যে, তাদের লেজিটেমেসি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। একবার ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কেউ অংশগ্রহণই করলো না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা এমন জায়গায় পৌছায়নি যে, একটি দলের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আবার প্রমাণ হলো যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এদেশে হওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচন মানে লাইন দিয়ে ভোট দেওয়া নয়। নির্ভয়ে ক্যাম্পেইন এবং কাজ করতে পারা। জনগণ তার ভোট দিতে পারবে এমন পরিস্থিতি নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের অর্থ হলো আমি ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করবো। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় কোনো কিছুই এখন আর অবশিষ্ট নেই।
স্যাম: বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা এরকম জায়গায় গেল কেনো? কে দায়ী?
আ:পা: সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে বলা যাবে না। দায়ী করতে হলে ২০০৬ সালের ঘটনায় ফিরে যেতে হবে। সেই সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমদের যে নাড়াচাড়া, সেখান থেকেই শুরু। এর পরে আমরা তরুণ প্রজম্ম ভেবেছিলাম পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কারণ ওয়ান-ইলেভেনের সময় দুই নেত্রী তথা দুই দলের ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে। ফলে আশা করা স্বাভাবিক যে, এরপরে অন্তত রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন আসবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানের জায়গা তৈরী হবে। প্রতিহিংসার রাজনীতিটা কমে যাবে এমন আশাও ছিলো আমাদের। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল, ক্ষমতায় থাকার যে ইচ্ছা; সেটি এত প্রবলভাবে কাজ করেছে যে, গণতন্ত্র থেকে শুরু করে অন্য কিছুই আর থাকলো না। জনগণের ভোটের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হলো। আজকে যখন সবার হাতে স্মার্টফোন সেরকম একটি সময়ে যে ন্যাক্কারজনক নির্বাচন হলো; যা নিয়ে মানুষ ঠাট্টা ও তামাশা করে, সোস্যাল নেটওয়ার্কে হাসাহাসি হয়। আমি বুঝতে পারি না, এই এমপিরা কীভাবে নিজেদের এমপি হিসেবে পরিচয় দেয়! তাই বুঝতে হবে, জনগণের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের দূরত্ব কতখানি বাড়লে এ ধরনের একটি নির্বাচন করতে পারে।
স্যাম: ২০ দলীয় জোটের একজন শীর্ষ নেতা হিসেবে বলুন, এমন একটি নির্বাচন বা পরিস্থিতি ঠেকানোর কোনো কৌশল কী আপনাদের ছিলো?
আ:পা: মনে হয় তেমন কোনো কৌশল আমাদের ছিল না। কারণ সময়ের সঙ্গে রাজনীতি পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে হয়তো আমরা কেউ ভাবিনি। ফেয়ার ইলেকশন হলে আমরা হয়তো নেগেটিভ ভোট পেতাম। কিন্তু আমরাও পজেটিভ রাজনীতি তো গত দশ বছরে করিনি। শেয়ার মার্কেটসহ আরও যেসব ইস্যু তৈরী হয়েছিলো সেগুলোকে পূজিঁ করে জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে নামতে পারিনি। নিরাপদ সড়কের জন্য এদেশে আন্দোলন হয়েছে, গার্মেন্টস শ্রমীকদের জন্য আন্দোলন হয়েছে। ভ্যাটের জন্য হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্রের লড়্ইায়ের জন্য জনগণ সম্পৃক্ত হয়নি। তার অর্থ কোথায় কিছু একটা আছে, যে কারণে জনগণের কাছে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব ছিল। যদিও জনগণ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ।
স্যাম: এটি কী কেবলই রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতা? নাকি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার মধ্যেও পরিবর্তন ঘটেছে? যে কারণে মানুষ আন্দোলনে নামতে চাইছে না…
আ:পা: সেরকম নয়। আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের পরেও বিশ্বের অনেক দেশে মানুষ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন। একটি দেশ আজ গরিব হলে কাল মধ্যম আয়ের দেশ হবে, পরশু দিন ধনী দেশ হবে। সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু এমন নয় যে, একটি ধনী দেশের নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হলে তারা সে বিষয়ে সোচ্চার নয়। বস্তুত বাংলাদেশের বড় দুটি দলের ওপর কোনো না কোনো কারণে মানুষ আর আস্থা রাখতে পারছে না। হয়তো তারা কথা দিয়ে কথা রাখতে পারেনি।
স্যাম: তার অর্থ আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকলেও একই পরিস্থিতি হবে?
আ:পা: আমার মনে হয় একই রকম পরিস্থিতি হবে।
স্যাম: তার মানে মানুষের মনোজগতে একটি পরিবর্তন এসেছে?
আ:পা: হ্যা। মানুষের অবস্থাটা হলো তারা হয়তো সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। ভোট হলে তারা আমাদের ভোট দিতো। কিন্তু তারা যদি আমাদের প্রশ্ন করে যে, আপনারা ইতিবাচক কী কী দিয়েছেন। সেখানে আমরা কিন্তু সরকারের নেতিবাচক দিকগুলোর কথাই বেশি বলছি।
তাছাড়া রাজনীতিতে গত বিশ-ত্রিশ বছরে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর রেজাল্ট এখন দেখা যচ্ছে। যেমন সাধারণ একজন মানুষ বা তরুণ প্রজম্মের কাছে রাজনীতি মানেই ভেসে উঠছে হরতাল, মিছিল, স্লোগান, মারামারি, ককটেল, র্যাব, ক্রসফায়ার ইত্যাদি। এতে করে ভালো একটি শ্রেণীর মানুষরা রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছে।
স্যাম: সরকারের জুলুম-নির্যাতন কী আন্দোলনের ভীতি হিসেবে কাজ করেনি?
আ:পা: অবশ্যই। ভীতি কাজ করেছে এটি সত্যি। তবে আমি শুধু সরকারের ভয় বলবো না। পুরো পরিস্থিতিটাই এমন হয়ে গেছে যে মানুষের রাজনীতির প্রতি অনীহা হয়ে গেছে। সরকারের ব্যাপারে বিরাট ভয় তো আছেই। মানুষ পজেটিভ রাজনীতি করতে গেলেও শত শত মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। সরকার সাধারণ মানুষের ফেইসবুক বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনকি স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য গৃহবধূদের পর্যন্ত ধরে নিয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের মানুষ এই ধরনের একটি স্বৈরাচারী বা প্রশাসনিক সরকার ফেইস করেনি। যেখানে প্রশাসনও কাজ করবে, পাশাপাশি তাদের একটি দলীয় প্লাটফর্মও আছে। এ ধরনের পরিস্থিতি বিএনপি, আমরা কিংবা সাধারণ মানুষ অতীতে ফেইস করেনি। এটি একটি নতুন ফেনোমেনা। প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাও তাদের, আবার রাজনৈতিক ক্ষমতা তাদের।
স্যাম: বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ধংস করা হয়েছে…
আ:পা: রাষ্ট্রীয় কাঠামো আগেই ধংস হয়ে গেছে। প্রধান বিচারপতি দেশ থেকে ভেগে চলে গেছে। সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু সবার মনে কেমন যেনো একটি ভয় ও নিরব ভীতি কাজ করছে। মানুষের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব এতোখানি হয়ে গেছে যে, এখন সরকার নিজেই কোনঠাসা হয়ে নিজের মধ্যে চলে যাচ্ছে। বিষয়টি সম্ভবত সরকার উপলব্ধি করতে পারছে না।
স্যাম: ২০ দলীয় জোটে থেকে কী আপনারা বুঝতে পারছিলেন যে এ ধরনের পরিস্থিতি আপনারা মোকাবেলা করতে পারবেন না?
আ:পা: পারবো না এটি আমি বুঝতে পেরেছিলাম। আর এজন্যেই ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে আমি বলেছিলাম যে, এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে না। কিন্তু কে বা কারা এবং বিএনপির মধ্যের একটি অংশ মনে করেছে, নির্বাচনের দিন জনগণ মাঠে মেনে যাবে এবং এখানে একটি ভোট বিপ্লব হবে। বিএনপির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিএনপি যা জানে আওয়ামী লীগও তা জেনে যায়। এতে করে দেখা গেছে, মনোনয়নপত্র দাখিল এবং প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে বিএনপির কাউকে আর ঘর থেকে নামতে দেওয়া হয়নি। সরকারি বাহিনী যে সন্ত্রাস বিএনপি এবং তাদের নেতা ও প্রার্থীদের ওপর করেছে এতে করে সাধারণ মানুষই আর ভয়ে ভোট দিতে যায়নি। ৪৫ জন প্রার্থীর ওপর আক্রমন করা হয়েছে।
স্যাম: জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টকে গঠন প্রক্রিয়াকে কীভাবে দেখছেন?
আ:পা: নির্বাচনের আগে ঐক্য ফ্রন্ট গঠনের প্রয়োজন ছিল। কারণ আমরা নির্বাচন বর্জন করলে অনেক দল আবার নির্বাচনে চলে যেতে। ফলে সরকারের বাইরে থাকা দলগুলোকে একটি প্লাটফর্মে আনার উদ্যোগ সঠিক। পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে ড. কামাল হোসেনের মতো একজন হাই প্রফাইল ব্যক্তির প্রয়োজনীয়তাও ছিল। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক বা বার্গেনিং করার মতো প্রফাইলের নেতা সত্যিকার অর্থেই আমাদের ছিল না। কিন্তু সমস্যাটা হলো ঐক্য ফ্রন্টের ওপর বেশি নির্ভর করা এবং সময় মতো ২০ দলীয় জোট এবং ঐক্য ফ্রন্টকে একিভূত না করাটা।
স্যাম: একিভূত হওয়া বাধা কী ছিল?
আ:পা: আমার মনে হয় জামায়াতে ইসলামী। কারণ এই দলের ব্যাপারে ঐক্য ফ্রন্টের আপত্তি ছিল; যেটি খুবই হাস্যকর। কারণ তারা সবই জানতো যে, জামাতের সঙ্গে বিএনপির ঐক্য আছে এবং তারা নির্বাচনও করছে। অথচ পরে তারা বলে যে জামায়াত ঐক্যে আছে এটি তারা জানতো না। কামাল হোসেন মুরুব্বি মানুষ বলে এ প্রশ্নে আমরা তার বক্তব্যের জবাব দেইনি।
স্যাম: একথা আপনারা কেনো বলছেন যে ২০ দলের তুলনায় জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
আ:পা: কথাটা ছিল ঐক্য ফ্রন্টকে রাখা হবে সরকারের সঙ্গে সমঝোতায়। কিন্তু রাজনীতিটা ২০ দলের কাছে ফেরত আসা উচিৎ ছিল। কারণ আমরা ২০ বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে ছিলাম। অনেক দল গত ১০ বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে। আমরা বিএনপির মাইন্ডসেট থেকে শুরু করে সবকিছু ভালো জানি। নির্বাচনের আগে এবং পরে কার্যত ২০ দলের কর্মকাণ্ড অচল হয়ে যায়। সব কর্মসূচি বিএনপি ঐক্য ফ্রন্টকে নিয়ে ঠিক করেছে। সহমত পোষণ করা ছাড়া ২০ দলের কোনো কর্মকাণ্ড রাখা হয়নি।
স্যাম: আপনার ২০ দলীয় জোট ছাড়ার এটিই কি কারণ? নাকি কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে?
আ:পা: মূলত বিএনপি সংসদের যাওয়ার ঘটনাটি আমি মেনে নিতে পারিনি। কারণ সংসদে যোগ দেওয়ার ঘটনায় জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। নির্বাচনের প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি ১২০দিন তারা বলেছে যাবে না। এরপর ১২১ দিনের দিন তারা সংসদে গেল। তাছাড়া জোট বা আমাদের সঙ্গে এবিষয়ে তারা আলাপও করেনি। আমি মনে করি, এই সংসদেকে অবৈধ বলার নৈতিক ক্ষমতাটি অক্ষুণœ রাখাটা আমার জন্য গুরুত্বপুর্ণ। সংসদে যোগ দিয়ে আবার সংসদকে অবৈধ বলাটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
স্যাম: আপনার দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) এখন কি পৃথক রাজনীতি করবে নাকি কোনো জোটে যোগ দেবে?
আ:পা: বাংলাদেশে একটি শ্রেণীর মানুষের মধ্যে রাজনীতির প্রতি অনীহা জšে§ছে একথা আমি আগেই উল্লেখ করেছি। ওই শ্রেণীর মানুষকে রাজনীতিমুখী করার জন্য আমরা ক্যাম্পেইন করবো। নতুন কোনো মেরুকরণে আপাততো যাচ্ছি না।
স্যাম: নির্বাচনের সময় জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থীরা ২ কোটি টাকা করে নিয়েছেন বলে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ড. অলি আহমদ অভিযোগ করেছেন। আপনি তার এই বক্তব্য সমর্থন করেন?
আ:পা: আমি মনে করি, দুই কোটি টাকা নেওয়ার কথা বলা অলি সাহেবের ঠিক হয়নি। অলি আহমদের এই বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত। কার সঙ্গে ডিল হয়েছে অলি সাহেব একথাও ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন। দেখুন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের অনেক সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করতে পারি। বা আমার ভালো নাও লাগতে পারে। কিন্তু তার ইনটিগ্রিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা মোটেই রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। যদি অলি সাহেবের কাছে প্রমাণ থাকে, আমি মনে করি ওনার ওই সময়ই তার ২০ দল থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ। কারণ যে দল এই ধরনের কর্মকাণ্ড করে তার সঙ্গে তো আপনি নৈতিকভাবেই থাকতে পারেন না। তাছাড়া ফখরুল সাহেবেরও অনেক স্যাক্রিফাইস
আছে। তিনি তিন বছর জেল খেটেছেন। আমি হয়তো অভিযোগ করতে পারি তিনি একটি কাজ করতে পারেননি। কিন্তু আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে এ্যাটাক করতে পারি না।
স্যাম: জামায়াত, কল্যাণ পার্টি ও জাগপাসহ কয়েকটি দলকে নিয়ে একটি পৃথক মঞ্চ করার পরেও অলি আহমদ বলছেন তিনি ২০ দলীয় জোটে আছেন…
আ:পা: আমি এ ব্যাপারে একটু বিভ্রান্তির মধ্যে। কারণ দেখলাম উনি জাতীয় মুক্ত মঞ্চ করলেন। আবার বলছেন আছেন। তবে তার আগের বক্তব্যে মনে হয় তিনি বিএনপি বা ২০ দলের নেতৃত্বটা চাচ্ছেন। যেহেতু বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে। কিন্তু আমার মনে হয় এটি বাস্তবে সম্ভব নয়। বিএনপিকে নেতৃত্ব দেওয়ারর মতো অবস্থান অলি আহমদের আছে বলে মনে হয় না।
স্যাম: প্রায় কাছাকাছি সময় আপনি ও অলি আহমেদসহ কয়েটি দলের পৃথক অবস্থান দেখা যাচ্ছে…
আ:পা: আমার আলাদা হওয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই। আমি একটি পাবলিক ইস্যুতে ২০ দল ছেড়েছি। এটি এমন একটি ইস্যু যে বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীও এর সঙ্গে একমত যে সংসদে যাওয়া ঠিক হয়নি। বিএনপির স্থায়ী কমিটিতেও এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে আমি মনে করি যে প্রক্রিয়ায় এবং আমাদের না জানিয়ে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার রাজনৈতিকভাবে সঠিক হয়নি। কিন্তু অলি সাহেবের ক্ষোভ হলো যে বিএনপি নেতৃত্ব দিতে পারছে না। উনি নেতৃত্ব চাচ্ছেন। সুতরাং আমার ও ওনার বেরিয়ে যাওয়া একেবারেই আলাদা।
স্যাম: জামায়াত, কল্যাণ পার্টি এবং জাগপাসহ অন্য দলগুলোর অলির পাশে থাকার বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
আ:পা: অলি সাহেবের প্রফাইল অনেক হাই। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে ওনার সেই অবস্থা নেই। তাই জামায়াত সঙ্গে থাকলে সাংগঠনিকভাবে ভালো হবে বলে উনি মনে করেছেন। হয়তো মাঠ ভরার কাজে জামায়াত কাজে লাগবে।
স্যাম: কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা অলি আহমদ বীর বিক্রম এবং মেজর জে. (অব.) সৈয়দ মুহ: ইবরাহিম জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে কেমনে হাটবে?
আ:পা: এটি তো অলি সাহেব বলেই দিয়েছেন। তার ভাষায়, বর্তমানের জামায়াত নতুন জামায়াত। আগের জামায়াত এখন আর নেই। তবে জামায়াতের জন্য তো এই ঘটনা সোনায় সোহাগা। কারণ তারা দুই মুক্তিযোদ্ধার নেতৃত্ব পাবেন। দেখা যাক, সামনে তারা কতদূর নিয়ে যেতে পারেন।
স্যাম: বাংলাদেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনে বৈদেশিক শক্তির ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। এটি কী এবারের নির্বাচনের আগেও জোট নেতাদের পর্যালোচনায় থাকায় উচিৎ ছিলো নয় কি?
আ:পা: হ্যা, এটি আমরা মোটামুটি বুঝতে পারছিলাম যে, ওই ধরনের এ্যাডভান্সমেন্ট ২০ দলীয় জোট করতে পারেনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো; ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামী বা ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটি বিশেষ অবস্থা তৈরী হয়েছে। সেই সময় এবং আজকের পরিস্থিতির মধ্যে আমরা হয়তো সমন্বয় করতে পারিনি। সময়ের সঙ্গে রাজনীতির পরিবর্তন না ঘটিয়ে শুধুমাত্র জনগণের ভোটের ওপর নির্ভর করে আজকের দিনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভবপর নাও হতে পারে; এ বিষয়টি আমার মনে হয় আরেকটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা উচিৎ ছিলো।
স্যাম: তার অর্থ পরিবর্তিত এই পরিস্থিতি ২০ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বুঝতে সক্ষম হয়নি?
আ:পা: বুঝতে হয়তো সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু সেই মোতাবেক কৌশল নির্ধারণ ও কাজ করা যায়নি। আমরা শুধুমাত্র জনগণের ভোটের ওপর নির্ভর করে বসেছিলাম। কিন্তু ক্ষমতায় যেতে হলে আরও কিছু ডায়ামিটার ঠিক করতে হবে।
স্যাম: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা কৌশল আর কী করা যতো?
আ:পা: নির্বাচনের কৌশল অন্তত ছয়মাস আগে করা যেতো। ছয়মাস আগে থেকে সরকারের সঙ্গে কথা বলা এবং নেগোসিয়েশন শুরু করলে ভালো হতো। পাশাপাশি আন্দোলনে গিয়ে মোমোন্টাম তৈরী করা উচিৎ ছিল। বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ এবং তাকে কারাগারে নেওয়ার পরেও কিছু হলো না। সবগুলো রাজনৈতিক সমস্যাকে আমরা এ্যাম্বেসি ও হাইকোর্টের করিডোরে নিয়ে গেছি। কিন্তু এসব সমস্যা সমাধান করতে হয় রাজনৈতিক টেবিলে অথবা রাজপথে। এতে করে আন্দোলন না করতে করতে এক সময় আন্দোলন করার শক্তিই নষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি নির্বাচনের সাতদিন আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলেছিলাম যে অন্ততপক্ষে সাতদিনের একটি আন্দোলন করতে হবে। এ ধরনের আন্দোলনে হয়তো দশটি ওসি বা ২০টি এসপির পরিবর্তন হতে
পারতো। কিছু না কিছু কর্মসূচি না দিলে নেতাকর্মীরা ঘর থেকে বের হবে না একথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে আন্দোলন হবে। কিন্তু ওই ঈদের পরের আন্দোলনের মতো ওই আন্দোরন আর কোনোদিন হয়নি।
স্যাম: আপনার সঙ্গে আলাপে মনে হলো আন্দোলন এবং নির্বাচন, দুটি পথ বা ব্যবস্থাই এখন বাংলাদেশে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে বের হওয়ার উপায় কি?
আ:পা: বিএনপি এবং আমরা সবারই এখন ফোকাস করা উচিৎ সুষ্ঠু রাজনীতির ধারা ফিরিয়ে আনার দিকে। বিশেষ করে সমাজের বড় একটি জনগগোষ্ঠী যারা রাজনীতির প্রতি বিমুখ হয়ে গেছে তাদের রাজনীতিমুখী করা। এজন্য রাজনীতিতে ইতিবাচক কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যেসব নেতা বা রাজনীতিকের প্রতি জনগণের এ্যালার্জি আছে বা যাদের ব্যাপারে পাবলিক পারসেপসন খারাপ এমন লোকদের আস্তে আস্তে রাজনীতি থেকে বাদ দিতে হবে। যাতে করে জনগণ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়। বিএনপির নেত্রী কারাগারে থাকলেও তারেক রহমান সাহেব লন্ডনে বসে এ ব্যাপারে ভূমিকা পালন করতে পারেন। অর্থডক্স বা পুরনো রাজনীতি আর কমিটি গঠন দিয়ে আর মনে হয় চলছে না। বিএনপির একটি বিষয় খুব অবাক হওয়ার মতো। খালেদা জিয়া কারাগার, দেশব্যাপী এতো জুলুম নির্যাতন: অথচ ওনারা ওনাদের কমিটি ও পদ-পদবি নিয়ে ব্যস্ত।
স্যাম: বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় কোন ভুল ছিলো?
আ:পা: ভুল কি সঠিক সেটা আমি বলবো না। তবে মনোনয়নের জন্য আমাদের মতো নেতারও রাত তিনটা পর্যন্ত দাড়িয়ে থাকতে হয়েছিলো। এটা আমাদের জন্য বেশ বিব্রতকর মনে হয়েছে। এটা অবাকও লেগেছে।
স্যাম: বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যত তাহলে কি?
আ:পা: এদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত বলা মুশকিল। কারণ রাজনীতিই নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, কোনো শর্ট টার্ম প্লান করে গণতান্ত্রিক পন্থায় এই সরকারকে ফেলা যাবে না। কারণ উপলব্ধি করতে হবে, জনগণ তার ভ্যাটের জন্য নামে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নামে, নিরাপদ সড়কের জন্য নামে। কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য রাজপথে নামে না। ভয়-ভীতি যে কারণেই হোক। জনগণ এই পরিস্থিতিকে মেনে নিয়েছে বলেই অনেকে মনে করছেন। তাই আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ভোট করে কোনো লাভ হবে না। কারণ মসজিদের মাইকে আওয়ামী লীগ বলছে আপনারা ভোট দিতে আসেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে; আওয়ামী লীগের লোকও এখন আর ভোট দিতে যায় না। নির্বাচনী ব্যবস্থাই শেষ হয়ে গেছে। বিশ্ব বেহায়ার মতো লোকজনরা যখন নির্বাচন কমিশনে দাড়িয়ে বলেন যে, উন্নয়ন বেশি হলে মানুষ ভোট দিতে চায় না। তখন মানুষ ওই নির্বাচনকে একটি হাস্যকর ব্যবস্থা মনে করে। এখন এই জনগণের প্রায় সবাই হয়তো সরকারকে সমালোচনা করছে। কিন্তু বিরোধী দলের পক্ষে আসছে শুধু ভোটের দিন। কিন্তু ভোট তো দেয়ার সুযোগ নেই। ফলে আপনি পাচ্ছেন না। তাই আগে বিএনপিকে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
স্যাম: যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার চলছে, তারা কি দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবে?
আ:পা: এটি বলা মুশকিল। এ ধরনের সরকার দুই বছর, দশ বছর, এমনকি বিশ বছরও থাকতে পারে। কারণ সরকারকে সরানোর কোনো প্রক্রিয়াতো নেই। আপনি আন্দোলনও করতে পারবেন না, আন্দোলন করতে দিবেও না। আন্দোলন করতে গেলে ড. কামাল হোসেনকে এরশাদ সাহেবের মতো সিএমএইচএ থাকতে হবে। কামাল হোসেনের অতীত রেকর্ড বলে যে, দেশে কোনো ক্রাইসিস দেখা দিলে তিনি দেশে থাকেন না। ফলে তাকে দিয়ে বড় ধরনের আন্দোল সফল হবে আশা করাটা ঠিক নয়। তাছাড়া ঐক্য ফ্রন্টের প্রধান নেতা হয়েও তিনি নিজে নির্বাচন করেননি। ফলে সরকারকে সরানোর জন্য তার হান্ডের্ট পার্সেন্ট ইফোর্ট ছিলো কি না সেটি নিয়েও আমার প্রশ্ন আছে।
স্যাম: রাজনৈতিক স্পেস না থাকলে বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থান ঘটতে পারে বলে অনেকের মধ্যে আশঙ্কা অছে…
আ:পা: আমি এটি মনে করি না। এ ধরনের জুজুর ভয় অনেকদিন ধরে চলছে। অনেকে মনে করেছিলেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর জামায়াতের লক্ষ লক্ষ লোক রাস্তায় নামবে। এই হবে সেই হবে। সুইসাইড বোম্ব…কত কিছু! শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। জামায়াতে ইসলামী বোবার ভূমিকা পালন করেছে। সুতরাং তাদের সেই শক্তি নেই, এটিই বাস্তব।
স্যাম: কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশে ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদের উত্থান তো হচ্ছে…
আ:পা: আমি মনে করি, প্রত্যেকটি দেশের মানুষের মাইন্ড সেট আলাদা। যেমন বাংলাদেশে যতই আন্দোলন করি না কেনো, ঢাকাতে আন্দোলন সফল না করতে পারলে ফল পাওয়া যায় না। আমি কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা নয়; বাংলাদেশের পারেসপেকটিভে আমি বাংলাদেশকে দেখতে চাই। যে কারণে আমি বারবারই বলতে চাই, দেশের একটি বড় সমাজকে রাজনীতিতে ফেরত আনতে হবে। তাদেরকে বিশ্বাস করাতে হবে যে, হ্যা আওয়ামী লীগ না হলে বিএনপি কিংবা অন্য একটি দল আমাদের কথা বলবে। এটি যতক্ষণ না মানুষ অনুধাবন করবে ততক্ষণে কেউ ঝুকি নিতে চাইবে না। তার আগ পর্যন্ত গুম আতঙ্কের কারণে কেউ রাজপথে আসবে না। মানুষ ঝুকিপূর্ণ আন্দোলন কাকে ক্ষমতায় আনার জন্য করবে সে বিষয়ে তাদের কনভিন্স হতে হবে।
স্যাম: সরকার বা আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক মেরুকরণে এখনো বিএনপিই বড় রাজনৈতিক শক্তি বা প্লাটফর্ম। এক্ষেত্রে নতুন কোনো মেরুকরণের সম্ভাবনা কি আপনি দেখছেন?
আ:পা: বাংলাদেশে এখনো শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ মানুষ আছে যারা কোনো দল করে না। তবে নানা কারণে সরকারের ওপরে তারা বিরক্ত বলে এখনো বড় প্লাটফর্ম হিসেবে বিএনপিকেই ভোট দেয়। কিন্তু যদি এরকম কোনো রাজনৈতিক শক্তি কখনো বাংলাদেশে আসে এবং তারা মানুষকে বোঝাতে পারে যে, তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তুলনায় ভালো; তাহলে অবশ্যই তারা সমর্থন পাবে।
স্যাম: সেটি কি স্বাভাবিক রাজনৈতিক মেরুকরণ প্রক্রিয়ায় সম্ভবপর?
আ:পা: স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে বেশ সময় লাগবে। আবার কোনো অগণতান্ত্রিক শক্তির উদয় হলে সেখান থেকেও হতে পারে। যেটি অনেক দেশে হয়ে থাকে। তবে গতানুগতিক রাজনীতি দিয়ে বিএনপির তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবে কি না সে ব্যাপারে যথেস্ট সন্দেহ আছে।
স্যাম: আপনার নেতৃত্বাধীন বিজেপির বেরিয়ে যাওয়া কিংবা ড. অলির নেতৃত্বে কয়েকটি দলের পৃথক অবস্থান কী এই ধরনের হতাশা থেকে?
আ:পা: এজন্য বিএনপির কিছুটা ব্যর্থতা তো রয়েছেই। কারণ তারা ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের মধ্যে সমন্বয় করতে পারেনি। আবার এটি বিএনপির কৌশলও হতে পারে। তারা মনে করতে পারে যে আজকের বাস্তবতায় ঐক্য ফ্রন্টকে তাদের বেশি প্রয়োজন। যে কারণে ২০ দলকে রাখার ব্যাপারে তাদের কিছুটা অনীহা থাকতে পারে। কারণ তারা বড় রাজনৈতিক দল। অলি সাহেব এটি বুঝতে পেরেই হয়তো পৃথক মেরুকরণের চেষ্টা করছেন। তিনি হয়তো মনে করতে পারেন যে, এভাবে পৃথক থাকলে চার বছর পরে তিনি এমপি হতে পারবেন।
স্যাম: আপনাকে ধন্যবাদ।
আ:পা: সাউথ এশিয়া মনিটরকেও ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.