পাঁচ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতারের পর বাড়ি গুঁড়িয়ে দিলো ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর সংলগ্ন আমারি শরণার্থী শিবিরে একটি বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এর আগে ওই বাড়ির মালিক লাতিফা আবু হামিদের পাঁচ পুত্রকে গ্রেফতার করে দখলদার বাহিনী। ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করছে তারা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগে সেখান থেকে সাংবাদিক ও সলিডারিটি অ্যাক্টিভিস্টদের সরিয়ে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর পরিকল্পিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভবনটি ধ্বংস করা হয়।
দখলদার বাহিনীর অভিযানে বিপাকে পড়েন নারী ও শিশুসহ ওই এলাকার শত শত মানুষ। শীতের মধ্যেই রাতের বেলা ঘরবাড়ি ছেড়ে তাদের সংলগ্ন মাঠে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে দখলদার ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে টিয়ার গ্যাস, রাবার কোটেড স্টিল বুলেড ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের দমনের চেষ্টা করা হয়। এ সময় অন্তত ৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
এদিকে শুক্রবার দখলকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় বিক্ষোভের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে একটি ফিলিস্তিনি কিশোর নিহত হয়েছে। আল-জালাজুন শরণার্থী শিবিরে মাত্র ১০ মিটার দূর থেকে ইসরায়েলি সেনারা গুলি করে এই কিশোরকে। নিহতের নাম মাহমুদ নাখলেহ (১৮)। শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় পাকস্থলীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা মান জানায়, গুলির পর ইসরায়েলি সেনারা নাখলেহকে আটকের চেষ্টা করে। কিন্তু ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
জালাজুন শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা ফাদওয়া সাফি জানান, সেনারা নাখলেহকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় ও মারধর করে। কিশোর গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় ৪২ বছরের এই নারী নিজের ঘরের ভেতরেই ছিলেন। বোন তাকে ঘটনা জানালে তিনি বেরিয়ে আসেন।
সাফি বলেন, ঘর থেকে বের হয়ে দেখি আহত কিশোরকে মারধর করছে ইসরায়েলি সেনারা। চারজন সেনা তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে এবং আরও সাত সেনা তাদের সঙ্গে হাঁটছিল। আমি তাদের লক্ষ্য করে দৌঁড় দেই। সেনারা আমার দিকে একটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং ঘরে ফিরে যেতে বলে। কিন্তু আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি ছেলেটিকে নিয়ে আসতে চাইছিলাম কারণ সে তখনও নিঃশ্বাস নিচ্ছিলো ও নড়াচড়া করছিল। তারা তাকে মাটিতে আছড়ে ফেলে।
সাফি আরও বলেন, পাশেই অ্যাম্বুলেন্স ছিল। কিন্তু সেনারা সেটাকে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছিলো না। এক সেনা আমার দিকে বন্দুক তাক করে। আমি বলি, আমাকে গুলি করো। তবু ছেলেটিকে আমি ফিরিয়ে নেবই।

No comments

Powered by Blogger.