আনুষ্ঠানিকভাবে সুচির নাগরিকত্ব কেড়ে নিল কানাডা

অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল হলো মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির কানাডিয়ান সম্মানসূচক নাগরিকত্ব। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস নির্যাতনের ঘটনায় কানাডার পার্লামেন্ট মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে দেয়া ওই সম্মান কেড়ে নেয়। দেশটির সিনেটে এ বিষয়েও ওপর ভোট হয়। তাতে সর্বসম্মতিক্রমে সুচির নাগরিকত্ব বাতিল হয়। তাকে সম্মানসুচক এই নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছিল ২০০৭ সালে। এর আগে গত সপ্তায় দেশটির পার্লামেন্টের নিন্মকক্ষ হাউজ অব কমন্স ও একইভাবে সর্বসম্মতিক্রমে তার নাগরিকত্ব বাতিলের পক্ষে রায় দেয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। কানাডায় যেসব মানুষকে সম্মানসুচক নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে তার মধ্যে সুচিই প্রথম, যার নাগরিকত্ব সরকারই আবার বাতিল করে দিল।
কানাডা পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট অনুসরণ করেছে হাউজ অব কমন্সের পথ। তারাও স্বীকার করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে মানবাধিকার বিরোধী নৃশংসতা চালিয়েছে তাকে গণহত্যা হিসেবে ধরা যায়। উল্লেখ্য, সুচির নাগরিকত্ব বাতিলের প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন প্রথম সিনেটর রতœা ওমিদভার। তিনি মঙ্গলবার বলেছেন, এই নৃশংসতাকে আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে। এটা হলো গণহত্যা। গণহত্যাকে গণহত্যাই বলতে হবে।
অং সান সুচিকে মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের জন্য ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। রতœা ওমিদভার বলেন, ওই সময়ে তিনি ছিলেন পরিবর্তন ও মানবাধিকারের জন্য চ্যাম্পিয়ন। বিশ্ব তার ওপর আশা রেখেছিল। কারণ, তিনি মিয়ানমারে গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আলো ফেলেছিলেন। কিন্তু আমরা এখন যা জানি তিনি তা করেন নি। উল্টো তিনি নৃশংসতা প্রত্যাখ্যান করেছেন। রোহিঙ্গাদের নির্যাতন চালানো হয়েছে যে রাখাইনে সেখানে আন্তর্জাতিক তদন্তকারী ও সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দেন নি। তিনি পক্ষ নিয়েছেন সেনাবাহিনীর। রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা দিতে দেন নি। আমরা তাই এখানে কানাডা থেকে ও বিশ্ব থেকে তাকে একটি কড়া বার্তা দিতে চাই। তাহলো, যদি আপনি (সুচি) এই গণহত্যায় জড়িত থাকেন তাহলে কানাডায় আপনাকে স্বাগত জানানো হবে না। আপনাকে আর কানাডার সম্মানসুচক নাগরিক বলা হবে না।

No comments

Powered by Blogger.