আইনজীবীরা কী খালেদা জিয়াকে বয়কট করেছেন? -প্রধানমন্ত্রী

দুই কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা কারাগারে স্থাপিত আদালতে যাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যেহেতু আদালতে তার আইনজীবীরা যাচ্ছেন না তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি তার আইনজীবীরা মনে করছেন খালেদা জিয়াকে নির্দোষ প্রমাণ করতে তাদের হাতে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ নেই। অথবা-হয়তো আইনজীবীরা খালেদা জিয়াকে বয়কট করেছেন। এক্ষেত্রে কোনটা হয়েছে সেটা বিচার্য বিষয়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের  সভার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ডাকা জরুরি এ বৈঠকে আলোচনা করেন।
সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ বছর মামলা চলার পর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। একটা মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। কোর্টের রায় হয়েছে বলেই তিনি কারাগারে। আরেকটি মামলারও কাজ চলছে। যে কোনো মামলার সময় বাঁধা তাকে। কিন্তু যে কোনো ছুঁতায় হোক খালেদা জিয়া কোর্টে যান না। খালেদা জিয়া তো কোর্টে যানই না আবার তার আইনজীবীরাও সময় নেন। এখানে আমার একটি প্রশ্ন- তিনি যদি নির্দোষ হবেন তাহলে মামলা মোকাবিলা করতে ভয় কিসের। আর তার আইনজীবীরা কেন কোর্টে যাবেন না? ইতিমধ্যে তারা বলল খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার অভাব। উনার শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে। উনি বেশি নড়তে-চড়তে পারছেন না। তাই তার শারীরিক অবস্থা ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কোর্ট জেলগেটে বসানো হলো। সরকারি প্রজ্ঞাপনে কোর্ট যেকোনো জায়গায় বসতে পারে। কোর্টের ইচ্ছায় সে ব্যবস্থা করা যায়।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমাদের গ্রেপ্তার করেছিল। জেলখানা সাবজেল হয়ে গিয়েছিল আমাদের সংসদ ভবনগুলো। আর সেখানেই বাসানো হয়েছিল কোর্ট। আমিও ওই কোর্টে গিয়েছি। খালেদা জিয়াসহ আরো অনেকে ওই কোর্টে গিয়েছেন। ঠিক একইভাবে জিয়াউর রহমান যখন কর্নেল তাহেরের বিচার করেন সে বিচারও কিন্তু কারাগারেই হয়েছিল। সে বিচারে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। কাজেই এভাবে যেকোনো বিচার কিন্তু হয়। বিডিআরের ঘটনার বিচার কিন্তু কারাগারেরই জায়গায় হয়েছে। ৮শ’ আসামি নিয়ে যে কোনো কোর্টে বসার জায়গা নেই। সেজন্য সেখানে ঘর বানিয়ে কোর্ট বসানো হয়। কাজেই কোর্ট বসতে পারে যেখানে প্রজ্ঞাপন জারি করে সেখানে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেলগেটে বিচার কাজ এটা তো জিয়াউর রহমান শুরু করে গিয়েছেন। তিনি পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। কেউ কেউ বলছেন এটা নাকি গণতান্ত্রিক সময় হয় না মার্শাল ল’র সময় হতো। তাহলে তারা স্বীকার করছেন জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল’ জারি করেছিলেন বলেই ওই ধরনের স্বেচ্ছাচারিতার অধিকার তার ছিল।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বিএনপি বলছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা নাকি প্রতিহিংসাপরায়ণ। এখানে হিংসার কি আছে? এতিমের টাকা তো আর আমরা খেতে চাইনি ভাগবাটোয়ারা করে। নাকি কম দিয়েছে বলে হিংসা করবো? তাতো না। এতিমখানার জন্য টাকা এসেছে। সে টাকা এতিমদের না দিয়ে নিজেদের কাছে রেখে দেয়। আবার কেউ কেউ বলছেন টাকা তো আছেই।
টাকা যদি থেকে থাকে তাহলে এত বছর আগে টাকা আসলো অর্থাৎ ৯২ সালে টাকা আসলো তাহলে একটা টাকাও এতিমরা পেলো না কেন? আর সে টাকা খালেদা জিয়া ব্যাংকে রেখে সুদ খেলো। ২৫ বছর ধরে এ টাকা সে রেখে দিলো আপন মনে করে। জিয়া অরফানেজ নাম দিয়েছে সে অরফানেজ কই? ঠিকানাটা কোথায়? সে ঠিকানা তো দেখাতে পারেনি, অরফানেজ দেখাতে পারেনি। কিন্তু অরফানেজের নামে টাকা তো আত্মসাৎ করেছে। এতিমের টাকা খেয়ে যদি কেউ জেলে যায় তাহলে সে দায় দায়িত্ব কার? ১০ বছর ধরে মামলা চলছে। এ সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা প্রমাণ করতে পারলো না যে তিনি নির্দোষ। সে দোষটাও কি আমাদের সরকারের?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোর্ট বসলে খালেদা জিয়া হাজির হয়েছেন কিন্তু তার আইনজীবীরা যান নাই। মাত্র একজন আইনজীবী গিয়েছেন। কিন্তু তার প্যানেল আইনজীবীরা যাননি। এই যে তারা গেলো না এখানে আমরা কি মনে করব? যে এই প্যানেল জানে যে খালেদা জিয়া দোষী। তাকে ডিফেন্ড করে খুব বেশি একটা লাভ হবে না। তাই কোন ছুঁতা ধরে তারা বোধহয় তাকে ডিফেন্ড করতে চায় না। সেজন্যই তারা কোর্টে যায় নাই। সাধারণ মানুষ তো এটাই ধারণা করবে। যেখানে কোর্ট বসবে সেখানে আইনজীবীরা যাবেন, যেখানেই জজ সাহেবরা বসবেন সেখানেই তারা যাবেন। মামলা করতে গেলে আইনজীবীদের কাজ হলো যেখানে কোর্ট বসবে সেখানেই তারা যাবে। তারা না গিয়ে খালেদা জিয়াকে বয়কট করলো কেন?
শেখ হাসিনা বলেন, তারা বলছে এটা ক্যামেরা ট্রায়ার। এটা তো ক্যামেরা ট্রায়াল না। কোর্টের দরজা তো খেলাই ছিলো। তাদের কোনো কোনো আইনজীবী কোর্টের গেটে গিয়ে বসেছিল কিন্তু কোর্টরুমে ঢোকে নাই। অবাধে সবাই যাতায়াত করতে পারছিল। তাহলে এটা ক্যামেরা ট্রায়াল হলো কি করে। বিএনপি নেতারা বলা শুরু করেছেন যে কোন কোর্ট বসানো অসাংবিধানিক। দুর্ভাগ্য আমাদের যে দলের জন্ম হয়েছিল অসাংবিধানিক উপায়ে। সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখলকারী যারা তাদের কাছে এখন সংবিধান শিখতে হবে আমাদের। এখানে অসাংবিধানিকটা কি হলো? তার মানে জিয়াউর রহমান মার্শাল ল’ দিয়েছিলেন অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল বলে। সেটা স্বীকার করুক। কিন্তু সেটা তারা করে না।
সভায় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সূচনা বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার আলোচনা করেন। আলোচনায় আসন্ন নির্বাচন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলীয় কর্মসূচি স্থান পায় বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে। 
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
ভবিষ্যতে হয়তো ভর্তুকি ব্যবস্থা রাখা সম্ভব হবে না
জাতীয় বিদ্যুৎ সপ্তাহ-২০১৮ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন বিদ্যুতের উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্য নেয়া হচ্ছে। এতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই ব্যবস্থা হয়তো রাখা সম্ভব হবে না। রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ৬ দশমিক ২৫ টাকা প্রতি কিলোওয়াট এবং বিক্রয় মূল্য রাখা হয়েছে ৪ দশমিক ৮২ টাকা প্রতি কিলোওয়াট। কাজেই এখানে আমরা ভতুর্কি দিচ্ছি।
অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ তা আমরা গ্রাহকের কাছ থেকে নিচ্ছি না। তিনি বলেন, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন যত হতে থাকবে ভবিষ্যতে বিদ্যুতে যতটা খরচ হবে ততটাই তাদের প্রদান করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমার একটা অনুরোধ থাকবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে।
বিদ্যুতের অপচয় বন্ধের জন্য আমি অনুরোধ জানাই। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে বিদ্যুৎ খাত নিয়ে আলোচনা করেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা একটা বিমসটেক সোলার গ্রিড লাইন করে দিচ্ছি। এই আন্তঃদেশীয় গ্রিডলাইনের মাধ্যমে কে কত বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে, তা থেকে বাংলাদেশ কিনবে, এটা আমরা স্পষ্ট করে ফেলেছি। আঞ্চলিক সহযোগিতার যুগান্তকারী পদক্ষেপটা আমরা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছি।
সরকার বিগত সাড়ে নয় বছরে দেশের বিদ্যুৎ খাতের সম্প্রসারণে বেশ কিছু আঞ্চলিক চুক্তি স্বাক্ষর করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সহযোগিতা চুক্তির আওতায় স্থাপিত দুই দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রের মাধ্যমে ভারত থেকে প্রথম গ্রিড আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে।
এ ক্ষমতা ১০০০ মেগাওয়াটে উন্নীতের কাজ চলছে। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় গ্রিড আন্তঃসংযোগ উদ্বোধনের মাধ্যমে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। ভারত হতে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নেপাল এবং ভুটান থেকে জল বিদ্যুৎ আমদানির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত মাসেই তার সরকার নেপালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ, ভুটান এবং ভারতের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে।
‘অনির্বাণ আগামী’ প্রতিপাদ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের সাফল্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদানে এই জ্বালানি সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে।
জ্বালানি সপ্তাহের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতা, জ্বালানি বিষয়ক সেরা প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিক ও দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কার প্রদান এবং গৃহস্থালী, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী গ্রাহকদের সম্মাননা প্রদান।
নেপালের জ্বালানি, পানিসম্পদ এবং সেচবিষয়ক মন্ত্রী বর্ষা মান পুন অনন্ত, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
বিদ্যুৎ, জ্বলানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সভাপতিত্ব করেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগে সরকারের সাফল্য ও পরিকল্পনা নিয়ে অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন এবং খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোহম্মদ রহমাতুল মুনিম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে সরকারের বিদ্যুৎ খাতের সাফল্য নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি। প্রতি মাসে ৩ থেকে ৫ লাখ গ্রাহক সংযোগের ফলে এখন মোট গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটিতে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিদ্যুৎ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তার সরকারের সময়ে মোট ২৪ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৩৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। প্রায় ১২ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে ও ১০১টি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
এছাড়া বর্তমান সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণেও ছিলাম সচেষ্ট। বিগত সাড়ে নয় বছরে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ৮ হাজার কিলোমিটার হতে ১১ হাজার ১২২ সার্কিট কিলোমিটারে উন্নীত করেছি। বিতরণ লাইন ২ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার হতে ৪ লাখ ৫৭ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে।
২০০৯ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৭ শতাংশ যা বিগত সাড়ে ৯ বছরে ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরকারের প্রচেষ্টার ফলে দেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমানে ৪৬৪ কিলোওয়াট-ঘণ্টায় উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেম লস ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে বর্তমানে ১১ দশমিক ৪০ শতাংশে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।
বিগত সাড়ে নয় বছরে ১ লাখ ৩০ হাজার নতুন সেচ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। দেশে গ্যাসের মজুদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গৃহস্থালি জ্বালানির চাহিদা পূরণে এলপিজির উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে ৫৬টি প্রতিষ্ঠানকে এলপিজি প্ল্যান্ট স্থাপনের অনুমতি প্রদান করায় এলপিজি সিলিন্ডারের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বিদ্যুৎ খাতে প্রি-প্রেইড মিটার স্থাপন এবং অনলাইনভিত্তিক সেবা প্রদান করার মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, পায়রা বন্দর এবং মহেশখালীতে স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কাতার ও ওমান থেকে এলএনজি আমদানি এবং স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ৯ই আগস্ট বিদেশি তেল কোম্পানির কাছ থেকে ৫টি গ্যাস ফিল্ড ক্রয়ের মাধ্যমে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কিন্তু ঘৃণ্য কুচক্রীদের হাতে জাতির পিতা শাহাদতবরণ করায় তার এই স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর ছয় বছর প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে তার একটাই লক্ষ্য- কীভাবে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা যায়। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনা যায়।

No comments

Powered by Blogger.