সিরিয়ায় তুরস্কের কুর্দিবিরোধী অভিযানের শেষ কোথায়

কৃষ্ণসাগর ও ভূমধ্যসাগরের মাঝে বসফরাস প্রণালীর দু’ধারে দাঁড়িয়ে আছে তুরস্ক। তুরস্ক হল এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী দেশ। তুরস্কের ৯৯ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। আর তুরস্ক একমাত্র মুসলিম দেশ, যা ন্যাটোর সদস্য। এজন্য তুরস্কের রণসম্ভার ন্যাটো ধাঁচের। ঐতিহাসিকভাবে তুরস্ক ইউরোপ-আমেরিকার মিত্র, পূর্ব-ইউরোপ আর রাশিয়া ও চীনের শত্রু। তবে এতদিনের এ সত্য ক্রমাগত বদলাচ্ছে। তুরস্ক চীন ও রাশিয়ার সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তুরস্কে বর্তমান একেপি সরকার প্রতিবেশীদের ক্ষেত্রে একটি নতুন ও তাৎপর্যপূর্ণ নীতি অবলম্বন করেছে- তা হল, সব প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা; সব প্রতিবেশীর উন্নয়নে সহায়তা প্রদান। তুরস্কের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাভুতউলো সিরিয়া, ইরাক ও ইরানের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, দেশগুলো তুরস্কের hinterland; নিকট প্রতিবেশী। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে (২০১১ সাল থেকে) আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ, সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারের নিজ ভূমির ওপর সংকুচিত নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি তুরস্কের জন্য দুঃসংবাদ। তুরস্ক প্রথমে বাশার আল আসাদ সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল। তবে সিরিয়া কুর্দিদের রিব“দ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তুরস্কের ‘স্বার্থের বিরুদ্ধে’ কুর্দি কার্যক্রম প্রতিহত না করায় তুরস্ক ক্ষেপে যায়। সিরিয়ার কুর্দিদের বেস আফ্রিন ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ১৮ জানুয়ারি থেকে তুরস্কের সামরিক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। প্রথমে বর্ডার থেকে তুর্কি আর্টিলারি ভারি গোলাবর্ষণে আফ্রিনে কম্পন তুলে দেয়। এরপরই তুর্কি ট্যাংক ও এপিসি নিয়ে পদাতিক বহর সিরিয়ার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, তারা সন্ত্রাসীদের করিডর ক্রমে ধ্বংস করে দেবেন। আফ্রিন মুক্ত করার পর অভিযান শুরু হবে মানবিজ এলাকায়। তুরস্ক বারবার বলে আসছে- আফ্রিনে সিরিয়ান কুর্দিরা তুরস্কের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে, যা তুরস্ক বরদাশত করতে পারে না। তুরস্ক ইতিমধ্যে জারাবুলুস এবং এলবাব অপারেশন সমাপ্ত করেছে। তুরস্ক সিরিয়ান কুর্দিদের বিরুদ্ধে এই অভিযানের নাম দিয়েছে অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ। আমাদের সরকার পরিচালনা ও সরকারি ক্ষমতাবলয়ের আলোকে তুরস্কের শাসনপ্রণালী বিচার করলে ভুল বোঝা হবে। যেমন, তুরস্কের সাংবিধানিক পদ ও সংস্থাগুলো অনেক ক্ষেত্রে স্বাধীন।
তারা ক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন হলে সাধারণত ত্বরিত পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। এতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা বা ‘উচ্চমহলের’ গ্রিন সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। তুরস্ক সশস্ত্র বাহিনীও তেমনি। তাদের শত্রু সরকার দ্বারা নির্ধারিত। সুতরাং সে শত্রু যদি দেশের বিরুদ্ধে যে কোনো কার্যক্রম হাতে নেয়, তুরস্ক সশস্ত্র বাহিনী সেখানে দ্রুত আঘাত হানে। ২০১১ সালের অক্টোবরে তুরস্ক ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’কে আশ্রয় দেয়া শুরু করে। তাদের একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরি করে অপারেশন বেস স্থাপনে সহায়তা করে। সৌদি আরব, কাতার ও তুরস্ক সিরিয়ার বিদ্রোহী সেনাদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে। ২০১২ সালের জুন মাসে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়, যখন সিরিয়ার সরকারি বাহিনী তুরস্কের একটি ফাইটার জেট বিমান ভূপাতিত করে। ফলে ২০১৬ সালের আগস্ট থেকে তুরস্ক তাদের বাহিনী সিরিয়ার অভ্যন্তরে পাঠিয়ে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করে। এক্ষেত্রে তুরস্কের টার্গেট ছিল ওঝওখ বাহিনী ও কুর্দি সমর্থনপুষ্ট বাহিনী। তুরস্কের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক উন্নয়নে কুর্দি সমস্যা একটি বড় বাধা। তুরস্কের দিয়ারবাকির ও মার্দিন অঞ্চল কুর্দি অধ্যুষিত হওয়ায় সেখানে ততটা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অন্যদিকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) দেশে-বিদেশে তুরস্কবিরোধী ব্যাপক প্রচারণায় দেশটিকে অতিষ্ঠ করে রাখে। তদুপরি তুরস্কের বিশাল সামরিক বাহিনীকে চোরাগুপ্তা হামলায় অহর্নিশ ব্যতিব্যস্ত রাখে। আর বিদেশে রাষ্ট্রদূত হত্যাসহ ‘রোজ টিভির’ সাহায্যে তুর্কি সামরিক বাহিনীর অত্যাচার-নিগ্রহ তুলে ধরে। কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানকে ধরতে তুরস্ক দেশ-বিদেশে অভিযান চালায় এবং ১৯৯৯ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি তুরস্কের স্পেশাল ফোর্স কেনিয়ার নাইরোবিতে অভিযান শেষে আবদুল্লাহ ওজালানকে গ্রেফতার করে তুরস্কে নিয়ে আসে। এর পরে অনেক আলাপ-আলোচনার পর পিকেকে সদস্যদের নতুন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ‘টার্কিস গ্রান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে’ নিয়ে আসে, যাতে কুর্দিরা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে অবদান রাখতে সক্ষম হয়। বর্তমান রাষ্ট্রপতি এরদোয়ানের এটা একটা বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে সামরিক বাহিনী ও আতার্তুকের রাজনৈতিক দল ‘জুমহুরিয়াত হালক পার্টি’ সন্ত্রাসীদের পার্লামেন্টে নিয়ে আসার ব্যাপক সমালোচনা করে। ১৯৯৩ সালে সিরিয়া পিকেকে’র জন্য প্রশিক্ষণ ও মিলিটারি বেস স্থাপনে সহায়তা করেছিল। সেখানে ১ হাজারের বেশি কুর্দি যোদ্ধা প্রশিক্ষিত হয়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযানে আÍনিয়োগ করে। ১৯৯৮ সালে সুলেমান ডেমিরেলের শাসনামলে তার চিফ অব স্টাফ (তিন বাহিনী প্রধান) জেনারেল হুসেন কিবরোকিলো সবাইকে ডেকে বলেন, ‘সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের অঘোষিত যুদ্ধ চলছে।’ দেশের প্রধানমন্ত্রী ইলমাজও বলেন, ‘মিলিটারি নির্দেশের অপেক্ষায় আছে।’ এ ঘোষণার পরপরই সিরিয়া কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানকে সিরিয়া হতে বহিষ্কার করেছিল। বর্তমানে তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম স্তম্ভ হল ‘প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শূন্য সমস্যার নীতি।’ তুরস্কের বিশাল অঞ্চল থাকায় এর অনেক প্রতিবেশীও আছে। তুরস্ক সবার সঙ্গেই সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যে উন্নতি ও জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া শুরু করেছে, যাতে পার্শ্ববর্তী সবগুলো দেশ ও একে অন্যের উৎপাদিত পণ্যের বাণিজ্য সুবিধা অর্জন করতে পারে। বস্তুত এজন্য তুরস্ক এ অঞ্চলের আঞ্চলিক নেতা এবং একই সঙ্গে বিশ্বনেতা হওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তুরস্কের বর্তমান নেতৃত্ব অটোমান সম্রাটদের ন্যায়বিচার, সৎ ব্যবহার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অসামান্য অর্জনগুলোর যে নীতি, তা প্রয়োগ করে তুরস্ককে তাক লাগানো উন্নয়নের স্তরে নিয়ে যাওয়ায় সচেষ্ট রয়েছে। এজন্য তুরস্কের সংবাদপত্রগুলো রহস্য করে প্রেসিডেন্ট রেজেব তৈয়ব এরদোগানকে ‘নব্য সুলতান’ বলে রসিকতা করছে। এরদোগান দামেস্ক ভ্রমণে বলেছেন- তিনি সিরিয়ান এবং তুর্কি সম্প্রদায়ের উজ্জ্বল মুখ দেখে বলতে বাধ্য যে, এরা সবাই জাতভাই। অন্যদিকে আরব দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় তিনি তাদের শুধু বন্ধু না বলে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেছেন। এতে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, তিনি নব্য অটোমান সম্রাটের মতো ঔদার্য দেখানো শুরু করেছেন। এটা অবশ্য জানাতে অসুবিধা নেই, সব দেশের সব সরকার সব সময় এক রকম নীতি অনুসরণ করে না। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, কাতার ও তুরস্ক কর্তৃক আইএসকে প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম দেয়ার প্রচুর তথ্য-উপাত্ত, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলেও এখন তারাই আইএসের বিরুদ্ধে জল, স্থল ও আকাশপথে হামলা চালাচ্ছে এবং এ হামলা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান হয়ে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়, হামলার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশ হয়ে এখন ইউরোপের সর্বউত্তর পর্যন্ত পৌঁছেছে। আইএস অবশ্য বিবিধ কারণে ইসরায়েলে আঘাত হানতে পারেনি। এজন্য ইসরাইলের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সুপার দক্ষতা অথবা তাদের গোপন আঁতাত দুই-ই হতে পারে। আইএস এখন প্রধানত মুসলমান অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় আঘাত হেনে যাচ্ছে। আগেই বলেছি, তুরস্ক তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়িয়ে নিজেদের উন্নয়ন ঘটানোকে প্রধান এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করেছে।
প্রমাণস্বরূপ ২০০৩ সালে তুরস্ক-সিরিয়া বাণিজ্য ছিল ৮২৪.১ মিলিয়ন ডলার। আর ২০১০ সালে এ বাণিজ্য পরিধির আকার দাঁড়ায় ১.৮৪ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১২ সালে তা বেড়ে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। তুরস্কের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিরিয়াতে ধাতব দ্রব্য, খাদ্য, সিমেন্ট, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। শুধু ২০১০ সালে সিরিয়ার ৫ লাখ পর্যটক তুরস্ক ভ্রমণ করেছিল। এতেই বোঝা যায়, তুরস্ক সিরিয়ায় স্থায়ী সরকার চায়। কেননা স্থায়ী সরকার ও স্থায়ী বন্ধুত্ব টেকসই উন্নয়নের পরিপূরক। এসব কারণেই তুরস্ক ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মির’ সদর দফতর ইস্তাম্বুলে স্থাপনের অনুমতি ও সাহায্য দিচ্ছে, যাতে বাশার আল-আসাদের পতনের পর একটি কার্যকর ও স্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠার কাজটি সহজ হয়। অন্যদিকে অশান্ত পরিস্থিতির বদৌলতে সিরিয়া অনেক সন্ত্রাসী দলের চারণভূমি হতে বাধ্য। সেজন্য তুরস্কের সীমান্ত বরাবর একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় তুরস্ক তার শক্তি ব্যবহার করছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও তা বোঝাতে সক্ষম হচ্ছে। তুরস্ক রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে যে সমস্যার সৃষ্টি করেছিল, এরদোগান রাশিয়া ভ্রমণ করে, পুতিনের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে, মৃত পাইলটদের পরিবারকে সাহায্য করে তা মিটিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। একদিকে রাশিয়া, অন্যদিকে আমেরিকাকে সমানভাবে তুষ্ট রেখে তুরস্ক সিরিয়ায় তার শত্রুদের জন্মাতেই দিচ্ছে না। এটি মূলত করা হচ্ছে তুরস্কের জনগণের উন্নতি ও নিরাপত্তার প্রশ্ন সামনে রেখে, যাতে তুরস্ক বিপদে পড়ে না যায়। সিরিয়ার জনগণ মনে করে, তুরস্কের সঙ্গে ভালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক সিরিয়াকে বিশ্বে তার বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়তা করবে। তুরস্ক, আমেরিকা, সৌদি আরব, কাতার মিলে তৈরি করেছে ‘সিরিয়া-ইরাক সমস্যা’র বিরুদ্ধে একটি জোট। এ জোটের উদ্দেশ্য শিয়া এবং শিয়াদের অন্য একটি শাখা আলাওয়ি সম্প্রদায়ের উত্থান স্তব্ধ করা। আর সিরিয়া-ইরান একজোট হয়ে গঠন করেছে ‘এক্সিস অব রেজিস্টেন্স’। মনে রাখা ভালো, ইরান ছাড়াও ইরাকের সরকারে এখন শিয়া প্রাধান্য বিরাজ করছে। আর সিরিয়ার শাসক বাশার আল-আসাদ আলাওয়ি সম্প্রদায়ের হওয়ায় তারা শিয়া সম্প্রদায়ের প্রচার-প্রসার ও উন্নতির জন্য সচেষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে তুরস্কের উদ্দেশ্য হচ্ছে, অটোমান শাসকদের মতো শুধু সুবিচার করা নয়; অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহায্য করা এবং অত্যাচারিতের পক্ষাবলম্বন ইত্যাদি পুনঃপ্রতিষ্ঠা। আর সে লক্ষ্যে এরদোগান দেশটির উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপত্তা ও তুরস্কের স্থায়ী স্বার্থগুলোর সংরক্ষণ করে চলেছেন। তিনি ইতিমধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় সফল হয়েছেন। কাতারকে ‘গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিল’ বয়কট করলেও তুরস্ক ইরান হয়ে কাতারে নিত্যব্যবহার্য্য দ্রব্যসামগ্রী রফতানি করে দেশটিকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেছে। এ ব্যাপারে এরদোয়ানের পদক্ষেপ ছিল অকুতোভয় বীরের মতো। আর এ আত্মবিশ্বাস থেকেই তুরস্ক সরকার পিকেকে’র স্থায়ী আবাস ধ্বংস করে নিজ দেশের সীমানা বরাবর একটি সেফ জোন প্রতিষ্ঠায় ট্যাস্ক, এপিসি, আর্টিলারি ও বিমান বহর ব্যবহার করছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, কুর্দিরা এখন পলায়নরত। তাদের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট যেমন বুমেরাং হয়েছে, তেমনি সিরিয়ায় কুর্দিদের একটি বেস ও নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠাও তুরস্কের কারণে নসাৎ হয়েছে। পিকেকে একটি সন্ত্রাসী দল হওয়া সত্ত্বেও কুর্দিদের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে সুযোগ সৃষ্টির প্রেক্ষাপট কুর্দিদের বিভক্ত করেছে। আর তুরস্ক সরকার নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক পথ খোলা রেখে পিকেকে’র উত্থান ও কুর্দিদের স্বাধীন রাষ্ট্রচিন্তায় আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে। এর শেষ কোথায়, তা বলা এখনই সম্ভব নয়। তবে কুর্দিদের পৃথক রাষ্ট্র গঠিত হলে এবং তা ইরাকের মধ্যে হলেও তুরস্কের উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে কুর্দি অধ্যুষিত এলাকা পুনরায় অস্থিতিশীল হবে, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম (অব.) : তুরস্কে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক সামরিক অ্যাটাশে
jahangir010754@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.