উপাচার্যের আশ্বাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট স্থগিত


ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলায় সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একাংশের ডাকা ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।

ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও মামলার অন্যতম আসামি আলমগীর টিপু জানান, মঙ্গলবার দুপুরে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার পর অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।

তবে প্রতিদিন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।

আলমগীর টিপু বলেন, “স্যার আমাদের মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও আমাদের হয়রানি না করার আশ্বাস দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগও করেছেন।”

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজ ইরফান হত্যা মামলায় উচ্চ অদালত থেকে নেওয়া ছয় সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন শেষ হওয়ার পর সোমবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।

আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ার পরপরই ক্যাম্পাসে মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের একাংশ, যারা সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এসময় তারা শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে দিয়ে ট্রেন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটায় ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়।

ধর্মঘটে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় ছিল কার্যত অচল। মূল ফটকে তালা থাকায় ক্যাম্পাস থেকে কোনো বাস শহরে আসতে পারেনি; ক্যাম্পাসগামী শাটল ট্রেনও নগরীর ঝাউতলা স্টেশনে আটকে দেওয়া হয়।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত হতে না পারায় অনেক বিভাগের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়।

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসে নিজের বাসা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হলেও দিয়াজের মা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী জাহেদা আমিন চৌধুরী তা প্রত্যাখ্যান করে আদালতে হত্যা মামলা করেন।

শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণ কাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে দিয়াজকে ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা’ করা হয়েছে।

পরে আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয়বারের ময়নাতদন্তে দিয়াজকে হত্যার আলামত পান চিকিৎসকরাও।

দিয়াজের মায়ের করা মামলায় আলমগীর টিপুসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক ১০ নেতাকর্মীর সঙ্গে তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনকেও আসামি করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.