ইরানের বৃহত্তম গ্যাস খনির নিয়ন্ত্রণ চায় ভারত

ইরানের একটি বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস খনির উন্নয়নে ১১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে ভারতের একটি কনসোর্টিয়াম। ভারতের বৃহত্তম তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি ওএনজিসির অন্তর্ভুক্ত ওই কোম্পানিটি জানায়, ইরানের গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়ন ছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় জ্বালানি রফতানির জন্য উপযুক্ত অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এ প্রস্তাবের মাধ্যমে পারস্য উপসাগরীয় এ দেশটিকে ‘উপযুক্ত বিনিময়’ দেয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভির। ওএনজিসি ভিদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নরেন্দ্র কুমার ভার্মা বলেন, ‘ফারজাদ-বি’ নামে ওই গ্যাসক্ষেত্রের প্রথম দফা উন্নয়নকাজের জন্য ৬০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের একটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বাকি অর্থ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যয় হবে। এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ভার্মা বলেন, ভারতের ওই কোম্পানিটি এ প্রকল্প থেকে আসা সব গ্যাস ক্রয় করতে প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আমাদের উত্তম প্রস্তাবটাই তাদের দিয়েছি। এখন সম্মত হওয়া না হওয়া তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমরা ইরানের কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট করে জানিয়েছি যে এর মাধ্যমে কিছু মৌলিক বিনিময়ও দেয়া হবে। ভারতীয় কোম্পানি ওই উন্নয়ন কাজ শুরু করতে পারলে ‘ফারজাদ-বি’ গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানিকারক দেশ হিসেবে ভারত তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে গ্যাস কিনতে উৎসাহিত হচ্ছে। জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার পর তেহরান জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ ঘটাচ্ছে। পারস্য উপসাগরীয় দেশটি সোমবার ফ্রান্সের জ্বালানি কোম্পানি টোটাল এসএ ও চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা করেছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের অফশোর সাউথ পার্স প্রকল্পটির অংশীদারিত্ব বজায় রাখার জন্য। এ ব্যাপারে ইরানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি কোনো মন্তব্য করেনি। উভয় দেশ গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে চেয়েছিল। ভারত বলছে, ২০১২ সালে আবিষ্কৃত ইরানের ওই গ্যাসক্ষেত্রটিতে প্রায় ১৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন এবং অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড ২০০৯ সাল থেকে ফারজাদ-বি গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নের অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। এপ্রিল মাসে ব্ল–মবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বিলম্বের ফলে দুই দেশের মধ্যে তেল বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটছে। তেহরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশের দেয়া নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও অপরিশোধিত তেল কিনেছে ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে তেল ক্রয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। ভার্মা বলেন, এখন আমরা বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।

No comments

Powered by Blogger.