রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সাহায্যের বিরুদ্ধেও ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ

মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। তবে ত্রাণবাহী মালয়েশীয় জাহাজ মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুন বন্দরে রোহিঙ্গাবিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছে। বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুন বন্দরে জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেয়। বিক্ষোভে অংশ নেন রোহিঙ্গাবিরোধী বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও। এসময় তারা ‘নো রোহিঙ্গা’ বলে স্লোগান দেয়। বিক্ষোভের কারণে জেটিতে অবস্থানরত জাহাজ থেকে ত্রাণের পণ্য খালাস করা সম্ভব হয়নি। খবর এএফপির। প্যাট্রিয়টিক মিয়ানমার মনকস ইউনিয়নের ইয়াঙ্গুন শাখার নেতা ভিক্ষু থুসেইত্তা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়ে দিতে চাই, এখানে কোনো রোহিঙ্গা নেই।’ সংখ্যাগুরু বৌদ্ধদের চাপে দেশটির সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে নারাজ। এমনকি বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী মনে করে।
রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় মালয়েশিয়া সরকার। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠানোর ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫০০ টন খাদ্য ও ওষুধ সামগ্রীর বহর ইয়াঙ্গুন পৌঁছেছে। ইয়াঙ্গুন বন্দর হয়ে এসব ত্রাণের নির্দিষ্ট একটা অংশ রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য পাঠানোর কথা রয়েছে। তবে মিয়ানমার সরকার এসব ত্রাণ রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ- উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিতরণের আহ্বান জানিয়েছে। বাকি অংশ বাংলাদেশের টেকনাফ বন্দর হয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিতরণ করা হবে। জাতিসংঘের হিসাবে, গত তিন মাসে অন্তত ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। টেকনাফ ও কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে তারা আশ্রয় নিয়েছেন। এমন এক সময় এ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল যখন জাতিসংঘ দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন, হত্যা ও নারীদের ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে। জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের কাছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বর্ণনা করা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সংস্থাটি জানায়, স্থানীয় রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলের লক্ষ্যে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিত সন্ত্রাসবাদের পথ বেছে নিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.