ইরানি বিপ্লবী গার্ডকে সন্ত্রাসী ঘোষণার বিপক্ষে পেন্টাগন

ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে (আইআরজিসি) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ইরানের এলিট এ বাহিনী এবং মিসরের ইখওয়ানুল মুসলিমিনকে (মুসলিম ব্রাদারহুড) ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে সিএনএন টিভি নেটওয়ার্ককে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। তবে ট্রাম্প এখনও এ ইস্যুতে নির্বাহী আদেশে সই করেননি।
এর আগেই মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার পরিণতি সম্পর্কে ট্রাম্পকে হুশিয়ার করেছেন দেশটির দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তারা। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট, নিউইয়র্ক টাইমসের। সোমবার ফ্লোরিডার টাম্পায় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের সদর দফতর পরিদর্শনের সময় আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বিবেচনার জন্য নির্বাহী আদেশে সই করার কথা ছিল ট্রাম্পের। কিন্তু পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা দফতরের তীব্র আপত্তির মুখে ট্রাম্প তা স্থগিত করেন। তবে ট্রাম্প আদৌ এ নির্বাহী আদেশে সই করবেন কিনা তা পরিষ্কার নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলা হয়েছে, আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দেয়া হলে তা ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদির জন্য মারাত্মক সমস্যা তৈরি করবে। কারণ তিনি ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন বাহিনীর পাশাপাশি আইআরজিসির সাহায্য নিচ্ছেন। এ ছাড়া মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বলেছে, আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দেয়া হলে ইরাকে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন। আমেরিকা ‘কাগুজে বাঘ’ -আইআরজিসি : আমেরিকাকে ‘কাগুজে বাঘ’ বলে অভিহিত করেছেন ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ড বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী জাফারি। তিনি বলেন, মার্কিন সরকারের অর্থহীন হুমকিকে ভয় পায় না তেহরান। জেনারেল জাফারি বুধবার ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হামেদান শহরে আইআরজিসির এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ইরানের ইসলামি বিপ্লবের শত্রুরাও আমেরিকাকে এ পরামর্শ দেয় যে,
তেহরানের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে কোনো লাভ নেই বরং এতে যুক্তরাষ্ট্রেরই ক্ষতি হবে।’ আইআরজিসির কমান্ডার বলেন, শত্রুরাও আজ ইসলামি বিপ্লবের বিশালত্ব ও গভীর প্রভাবের কথা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে। এটিই এ বিপ্লবের সবচেয়ে মূল্যবান অর্জন। ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ হলে বিশ্বজুড়ে জঙ্গিবাদ বিস্তৃতির আশংকা সিআইএ’র : ট্রাম্প প্রশাসনের নেয়া ব্রাদারহুড নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে জঙ্গিবাদের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশংকা করছেন সিআইএ’র বিশ্লেষকরা। কেন্দ্রীয় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এক গোপন নথির বরাতে এ খবর দিয়েছে পলিটিকো। ওই নথিতে সিআইএ বিশ্লেষকরা আশংকা করেছেন, ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ হলে মিসরের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা, চরমপন্থী মতাদর্শে মদদ এবং দেশটিতে বৈদেশিক হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি হতে পারে। ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে মুসলিম দুনিয়াকে। জর্ডান, কুয়েত, মরক্কো, তিউনিশিয়ার মতো দেশগুলোতে ব্রাদারহুডের শাখা আছে। তবে এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউস বা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। সিআইএও প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ব্রাদারহুডের ওপর নিষেধাজ্ঞা-পরিকল্পনার সম্ভাব্যতা যাচাইসংক্রান্ত এক নথি ৩১ জানুয়ারি অভ্যন্তরীণভাবে প্রকাশ করে সিআইএ। পলিটিকো জানায়, একজন মার্কিন কর্মকর্তা ওই সংক্ষিপ্ত গোয়েন্দা অনুলিপি তাদের দিয়েছেন। ওই নথি থেকে জানা যায়, ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ করতে ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সিআইএ’র বিশ্লেষকরা।

No comments

Powered by Blogger.