ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত জরুরি, সরকারের আশ্বাস

ইতালি ও জাপানের দুই নাগরিক হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের অনুরোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে কূটনৈতিক বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ ঘটিয়েছে। সেখানে আমাদের সরকার দুই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করার ব্যাপারে বিদেশিদের যে আশ্বাস দিয়েছে, তা-ও একটি অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ। এখন সরকারের সবচেয়ে বড় কর্তব্য এই আশ্বাস দ্রুত পূরণ করতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়া। এ মুহূর্তে খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার করার মধ্য দিয়েই কেবল বিদেশিদের প্রকৃতপক্ষে আশ্বস্ত করা সম্ভব। অন্যথায় মৌখিক আশ্বাস নিষ্ফলা কূটনৈতিক কথামালায় পর্যবসিত হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনীতিকদের বলেছেন, দুটি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তদন্ত এগিয়ে চলেছে এবং এ ক্ষেত্রে সরকার কাউকে ছাড় দেবে না। লক্ষ রাখা দরকার, বিদেশি কূটনীতিকেরা এ দুটি হত্যাকাণ্ড ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি’র সঙ্গে তদন্ত করার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। অর্থাৎ তাঁদের মনে হয়ে থাকতে পারে যে তদন্তের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঘাটতি রয়েছে। তাঁদের এমন ধারণা অমূলক প্রমাণ করতে হবে; সে জন্য পরিপূর্ণ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সঙ্গে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিশ্চিত করা জরুরি। প্রকৃত হত্যাকারী ও তাদের নেপথ্যে কোনো শক্তি থাকলে তাদের শনাক্ত ও দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তদন্তাধীন বিষয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়।
মঙ্গলবারের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে বলেছেন, দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার পর বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। আমাদের সরকারের উচিত, এই বক্তব্যটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া। কারণ, এর সঙ্গে বহির্বিশ্বের সঙ্গে আমাদের সামগ্রিক সম্পর্ক জড়িত। মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুও জানালেন যে দুই বিদেশি হত্যার পর তাঁদের অনেক ব্যবসায়ী নিরাপত্তার উদ্বেগ থেকে বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছেন।
সুতরাং বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বহির্বিশ্বের উদ্বেগ দূর করতে আমাদের সরকারকে খুব তৎপর হতে হবে, সে তৎপরতার বাস্তব সুফল দৃশ্যমান করে তুলতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.