যন্ত্রণার শেষ চান নাগাসাকির সুমিতেরো

জাপানের নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলার ভয়াবহতা
কতটা ভয়ংকর ছিল, তার সাক্ষী যেন সুমিতেরোর শরীরটা।
বুক-পিঠ ঝলসে যাওয়া কুঁচকানো চামড়ায় মোড়ানো, দেখলেই
আঁতকে উঠবে যে কেউ। -দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের সৌ​জন্যে
জাপানের নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্র যখন আণবিক
বোমা ফেলে তখন সুমিতেরো তানিগুচি ১৬
বছরের কিশোর। ৭০ বছর ধরে শরীরে সেই
ভয়াবহতার চিহ্ন বহন করছেন বর্তমানে ৮৬
বছর বয়সী এই বৃদ্ধ।
-দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের সৌ​জন্যে
সত্তর বছর ধরে যে যন্ত্রণাময় জীবনযাপন করছেন জাপানের নাগাসাকির সুমিতেরো তানিগুচি, এবার তার শেষ চান তিনি। ৮৬ বছর বয়সে এসে এতটা যন্ত্রণা বয়ে বেড়ানো তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই এই আকুতি। জাপানের নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলার ভয়াবহতা কতটা ভয়ংকর ছিল, তার সাক্ষী যেন সুমিতেরোর শরীরটা। বুক-পিঠ ঝলসে যাওয়া কুঁচকানো চামড়ায় মোড়ানো, দেখলেই আঁতকে উঠবে যে কেউ। আজ থেকে ৭০ বছর আগে এই দিনে জাপানের নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। পঙ্গুত্ব বা ক্ষত শরীর নিয়ে বেঁচে থাকেন অনেকে; তবে যন্ত্রণা তাঁদের চিরসঙ্গী হয়। ভয়াবহ সেই দিনের স্মৃতিচারণা করে সুমিতেরো বলেন, নাগাসাকিতে যখন আণবিক বোমা ফেলা হয়, তখন সুমিতেরো ১৬ বছরের কিশোর। বাড়ি বাড়ি পণ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ ছিল তাঁর। ওই দিনও সুমিতেরো পণ্য পৌঁছে দিতে সাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলেন। বোমার আঘাতে তিনি সেই সাইকেল থেকে দূরে ছিটকে পড়েন। অজ্ঞান হয়ে যান। আর কিছু বলতে পারেন না তিনি। তিন দিন পর যখন তাঁর জ্ঞান ফিরল, নিজেকে আবিষ্কার করলেন হাসপাতালে। সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত, ক্ষত স্থান ঢেকে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। সুমিতেরোর শরীরের পেছনের দিক মারাত্মক জখম হয়, পাকস্থলীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাকস্থলীর চিকিৎসার জন্য সুমিতেরোকে ২১ মাস হাসপাতালে কাটাতে হয়। পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধে নাগাসাকিতে হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে সুমিতেরো একটি সংগঠন চালান। তবে শারীরিক সীমাবদ্ধতার কারণে কাজ করার ক্ষেত্রে বেশ সমস্যাতেই পড়তে হয় তাঁকে। যন্ত্রণা ভোগ করতে করতে ক্লান্ত সুমিতেরো বলেন, ‘আমি এর শেষ চাই।’

No comments

Powered by Blogger.