ঈদে ঘরে ফেরেনি সোয়া লাখ পুলিশ

চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মসজিদে ঈদের নামাজ শেষে
ফিরছেন ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাঁর নিরাপত্তায়
ছিলেন পুলিশের এক সদস্য। ছবি: সৌরভ দাশ
ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা ও ঈদ আনন্দ নিশ্চিত করতে ঘরে ফেরা হয়নি প্রায় সোয়া লাখ পুলিশ সদস্যের। ঈদ উপলক্ষে ঈদগাহ, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যাংক-বিমা আর বিনোদন কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁরা। এই বাড়তি চাপের কারণে নিজেদের ঘরে ফিরতে পারেননি পুলিশের ৮০ শতাংশ সদস্য। বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী সন্তান থেকেছে অনেক দূরে। দায়িত্ব পালন শেষে ব্যারাক বা অস্থায়ী আবাসেই ঈদ কেটেছে এসব পুলিশ সদস্যের। পুলিশের তথ্যমতে, সারা দেশে তাদের মোট সদস্য রয়েছে এক লাখ ছাপান্ন হাজার।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মানুষের নিরাপদ চলাচল এবং ঈদ উদ্‌যাপনে যথাযথ ভূমিকা রাখতে বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদের দিন সন্ধ্যায় পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) পাঠানো এক বার্তায় ওই ধন্যবাদ জানান তিনি।
দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে জননিরাপত্তা ও জনগণের ঈদ আনন্দ নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখায় পুলিশের সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। ঈদের ছুটি শেষে আবারও মানুষের কর্মস্থলে ফেরার পথ নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে বাড়তি দায়িত্ব পালনে সব পুলিশ সদস্যের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। আইজিপি বলেন, ‘মানুষের বাড়তি আনন্দ বা কষ্ট মানেই আমাদের বাড়তি দায়িত্ব। মানুষের কষ্ট লাঘব করে আনন্দ বা খুশির নিশ্চয়তা দেওয়াই আমাদের আনন্দ।’
ঈদের আগের রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটেছেন নাড়ির টানে। প্রিয়জনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আনন্দে সবাই থেকেছেন বিভোর। কিছু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মতো পুলিশও ছিল দায়িত্বে। দিনরাত রাস্তায়, রেল, নৌপথে, বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মানুষের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করেছে তারা। ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটিতে অফিস আদালত যখন বন্ধ, তখন পুরোপুরিই খোলা থেকেছে থানা-ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র, সচল থেকেছে পুলিশের সব অফিস।
পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রগুলোর তথ্যমতে, নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে আগেই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ। যেমন—কোনো ঈদগাহ বা মসজিদে নামাজ বা অন্য কোনো ইস্যু নিয়ে কারও মধ্যে কোনো সমস্যা রয়েছে কি না? আগের বছরগুলোতে কোনো গ্রাম বা মহল্লায় কোনো সমস্যা হয়েছিল ছিল কি না? ‍
সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছে পুলিশ। ঈদগাহ, রাস্তাঘাটে থেকেছে পুলিশ। আবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনার মতো বড় শহরগুলোতে মানুষের ফাঁকা ঘরবাড়ির নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হয়েছে তাদের। হঠাৎ নিরাপত্তা সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য স্ট্যান্ডবাই থাকতে হয়েছে একটি দলকে।

No comments

Powered by Blogger.