ডেমোগ্রাফি ডেমোক্রেসি ডিমান্ড বিশ্বকে ভারতমুখী করেছে

ভারত সারা বিশ্বের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ আকর্ষণের পেছনে তিনটি ডি রয়েছে বলে জানান তিনি। মোদি বলেন, ডেমোগ্রাফি (ভৌগোলিক অবস্থান), ডেমোক্রেসি (সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র), ডিমান্ড (চাহিদা)- এ তিন কারণেই পৃথিবী আজ ভারতমুখী। ইউরোপের ত্রিদেশীয় সফরে সোমবার জার্মানির এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। জার্মানির হ্যানোভারে ‘জার্মান-ভারত বাণিজ্য সম্মেলন’-এর উদ্বোধনী সেশনে বক্তব্য দেন মোদি। মোদি বলেন, ইন্ডিয়া মিনস বিজনেস। তিনি বলেন, শুধু জার্মানি নয়, গোটা বিশ্বই আজ ভারতের প্রতি আকৃষ্ট। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলো মার্কেল।
হ্যানোভার মেসে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাণিজ্য মেলায় ভারতের প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন করেন মোদি। এ মেলায় ভারতকে অংশীদার করার জন্য জার্মানিকে ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মেলায় ৪০০টি ভারতীয় কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে। এ বছর ভারতের ১৪টি রাজ্যও এ মেলায় অংশ নিয়েছে। নিজেদের রাজ্যে বিনিয়োগ টানার চেষ্টা করছে প্রতিটি রাজ্য। সেখানে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র লোগো হিসেবে হাজির হয় অ্যানিমেশনে তৈরি এক সিংহ। পরে মোদি বলেন, ‘ওই সিংহ এক নতুন ভারতের প্রতীক। মৈত্রী ও অংশীদারিত্বের বার্তা দেয় সে।’
মোদি দাবি করেন, বড় শিল্প স্থাপনে ভারত দ্রুত অনুমোদনের পথে হাঁটছে। জার্মান কোম্পানিগুলোকে আশ্বাস দিয়ে তিনি জানিয়েছেন ‘ভারত এখন এক অন্য দেশ। বর্তমান সরকার অনেক বেশি স্বচ্ছ, স্থায়ী ও দায়িত্বশীল।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সরকার ইতিমধ্যে পশ্চাৎমুখী কর ব্যবস্থা উঠিয়ে দিয়েছে।’ তার মতে, দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক যতটা ভালো হওয়ার কথা ছিল, এখনও ততটা হয়ে ওঠেনি। তবে তিনি জানিয়েছেন, ভারত ও জার্মানির মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের পথ এখন অনেক সুগম।
মোদি আরও বলেন, গোটা বিশ্বের ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হয়ে উঠতে পারে ভারত। তার মতে, ভারতে জনসংখ্যার অধিকাংশই তরুণ প্রজন্মের। সঙ্গে রয়েছে উচ্চতর প্রযুক্তি ব্যবহার করার মতো দক্ষ শ্রমিক বাহিনী। এ দুটি বিষয়ই বিনিয়োগের পক্ষে অনুকূল। একই সঙ্গে তার দাবি, ভারতে স্থায়ী চরিত্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও বিনিয়োগের পক্ষে সুবিধাজনক।
ইউরোপের সব থেকে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে নিজের স্বপ্নের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের হয়ে সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতে আরও বেশি বিদেশী বিনিয়োগের জন্য তিনি আহ্বান জানান। মোদির কথায়, ‘ভারতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অসীম। আমরা স্বচ্ছ, স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছি। এখন ঘন ঘন নিয়মকানুন বদলের সম্ভাবনা নেই।’ এ প্রসঙ্গে মনমোহন সিংহ সরকারকে কটাক্ষও করেছেন মোদি। তার মতে, ‘আপনাদের কাছে কেউ কলম কিংবা রুমাল চাইলে যেভাবে সেগুলো দিয়ে দেন, ইউপিএ সরকার সেভাবেই কয়লাখনি দিয়ে দিয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘এ নিয়ে পরে ঝড় ওঠে। সুপ্রিমকোর্ট কয়লাখনির বণ্টন বাতিল করে দেয়। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নামও উঠে এসেছে। তা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।’

No comments

Powered by Blogger.