হেরে গেলে চা বিক্রি করব

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে তাঁর দলই সরকার গড়বে৷ এরপর দেশ গঠনের কাজ শুরু হবে আমেথি থেকেই৷ উত্তর প্রদেশের আমেথি আসনে গতকাল সোমবার বিকেলে এক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণে মোদি এ কথা বলেন৷ এই আসনে কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধীর বিপক্ষে বিজেপির হয়ে লড়ছেন টিভি অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানি৷ গতকাল আমেথিতে সমাবেশ করে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের দীর্ঘদিনের একটি রেওয়াজ ভাঙলেন মোদি৷ প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রধান প্রার্থীদের আসনে তাঁরা সচরাচর নির্বাচনী প্রচারণায় যান না৷ সমাবেশে মোদি বলেন, ‘অনেকে বলেন, রাহুল হারলে তিনি বিরোধী দলের আসনে বসতে পারবেন৷ আর মোদি হারলে কী হবেন? আমি তাঁদের বলতে চাই, চিন্তা করবেন না৷ আমি হারলে চা বিক্রি করব৷’ স্মৃতি ইরানিকে আমেথিতে দলের প্রার্থী করার বিষয়ে মোদি বলেন, ‘রাহুল ভাইয়াকে সমস্যায় ফেলার জন্য আমি তাঁকে (স্মৃতি ইরানি) এখানে পাঠাইনি৷ তিনি এমনিতেই অনেক সমস্যায় আছেন৷ আমেথির মানুষের সমস্যা দূর করার জন্যই আমি স্মৃতিকে এখানে পাঠিয়েছি৷’ আমেথি দীর্ঘদিন ধরে গান্ধী পিরবারের খাসতালুক৷ রাহুল দুবার এখান থেকে নির্বাচিত হয়েছেন৷ এর আগে তাঁর মা সোনিয়া গান্ধী, বাবা রাজীব গান্ধী ও চাচা সঞ্জয় গান্ধী এই আসনে নির্বাচন করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন৷ তবে এবার লাড়ইটা গান্ধী পরিবারের পক্ষে একেবারে একপেশে হবে বলে মনে হচ্ছে না৷ মোদির ভাষণের সময় দলের গেরুয়া রঙের শাড়ি পরে মঞ্চে বসে ছিলেন স্মৃতি ইরানি৷
এর আগে ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমেথির ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ আমি যখন এখানে নির্বাচনে প্রার্থী হই, তখন আমার কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন আমি আমি রাহুলকে চ্যালেঞ্জ করতে এখানে আসছি৷ জবাবে আমি বলেছিলাম, আমেথির মানুষই আমাকে এখানে ডেকে এনেছে৷’ সমাবেশ মঞ্চে সেই নরেন্দ্র মোদির আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন স্মৃতি ইরানি, যাঁর বিরুদ্ধে এক দশক আগে তিনি বিক্ষোভ করেছিলেন৷ ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার জন্য মোদিকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি৷ প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রধানের আসনে প্রচারণা চালিয়ে মোদি গতকাল একটি রেওয়াজ তো ভেঙেছেন; তার চেয়ে বড় কথা, গতকাল উত্তর প্রদেশে আরেকটি সমাবেশ করে তিনি বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন৷ ফয়েজাবাদে মোদির ওই সমাবেশ মঞ্চে সাঁটানো ব্যানারে হিন্দুদের দেবতা রামের মূর্তি এবং একটি মন্দিরের ছবি ছিল৷ কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, এর মাধ্যমে বিজেপি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে৷ এ জন্য তারা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করবে৷ তবে কংগ্রেসের অভিযোগ দায়েরের আগেই মোদির সমাবেশে নিষিদ্ধ প্রতীকের ব্যবহারের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ ফয়েজাবাদে যে স্থানে মোদি সমাবেশ করেন, সেখান থেকে মাত্র পাঁচ কিলেমিটার দূরে অবস্থিত অযোধ্যার সেই জায়গা, ১৯৯২ সালে যেখানে ষোড়শ শতাব্দীর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে কট্টরপন্থী হিন্দুরা৷ এনডিটিভি ও িপটিআই৷

No comments

Powered by Blogger.