বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয় : থাই নির্বাচন কমিশন

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের রাস্তায় বৃহস্পতিবার পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ফেব্র“য়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে প্রায় ৫০০ বিক্ষোভকারী দেশটির একটি স্টেডিয়ামে একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ চালায়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার উদ্দেশে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। তবে এতে দু’জন পুলিশ,
একজন সাংবাদিক ও এক বিক্ষোভকারী আহত হলেও কোনো গুরুতর হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রার্থী নিবন্ধন কেন্দ্রে বিক্ষোভকারীদের এ হামলার পর পরই থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ২ ফেব্র“য়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন পেছানোর জন্য সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনোভাবেই নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দিনের প্রথম ভাগে ঘটে যাওয়া ওই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া এক বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশনের মহাসচিব সুপাচাই সচারয়েন বলেন, অপ্রত্যাশিত এ ঘটনার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আন্দোলকারীদের কাছে আমি ক্ষমা চাই, চাইছি। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, জনমনে বিরাজমান সরকারবিরোধী এ ক্ষোভের সামনে সরকারের নতজানু হওয়া উচিত। না হলে, বর্তমান পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এমনকি এই দর কষাকষির পরিণাম গৃহযুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারে। সুপাচাই বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী কার্যক্রমে সুষ্ঠু অগ্রগতি সম্ভব নয়। থাই রাজনীতির ক্রমবর্ধমান অস্থিরতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রধান প্রতিবন্ধক। এ অবস্থার উত্তরণে সরকার ও বিরোধীদের এক ছাতায় আনতে নির্বাচন কমিশন মধ্যবর্তী ভূমিকা পালনেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যথায়, দেশের স্বার্থে কমিশন নিজেই কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন সুপাচাই। এদিকে, সরকারের একার সিদ্ধান্তে নির্বাচন সম্ভব নয়- নির্বাচন কমিশনের এ বিবৃতি ইংলাক সিনাওয়াত্রার দল পুয়ে থাই পার্টি তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। ইংলাক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুয়ে থাই পার্টির শীর্ষ স্থানীয় নেতা চারুপঙ রুয়াংসুয়ান বলেন, নির্বাচন হবে, নাকি স্থগিত করা হবে তা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের ভেতর পড়ে না। তাদের দায়িত্ব নির্বাচন পরিচালনা করা। থাই নির্বাচন পূর্বনির্ধারিত সময়েই হবে বলে সরকারের অনড় অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেছেন চারুপঙ। রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন ঠেকাতে গেলে এদিন সকালে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। আগামী ২ ফেব্র“য়ারিতে দেশটির নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাংককের একটি স্টেডিয়ামে নিবন্ধন করাতে গিয়েছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিক্ষোভকারীরা স্টেডিয়ামের দরজা ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। স্টেডিয়ামের ভেতরে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথরও নিক্ষেপ করে। প্রায় ৫০০ বিক্ষোভকারীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে। থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের প্রতিশ্র“তি দেন ইংলাক। তবে বিক্ষোভকারীরা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এদিকে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের উদ্দেশে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা বুধবার ‘জাতীয় সংস্কার কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।ব্যাংকক পোস্ট।

No comments

Powered by Blogger.