সহিংসতা সহ্য করা হবে না: আল-সিসি

মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসির সমর্থনে গতকাল অস্ট্রেলিয়ার
সিডনিতে বিক্ষোভ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রতীকী
কফিন বহন করেন ছবি: এএফপি
মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের উদ্দেশ করে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেছেন, মিসরে ‘সবার জন্য সুযোগ রয়েছে’। মুরসি-সমর্থকদের প্রতি ‘গণতন্ত্রের পথ পুনর্নির্মাণ’ ও ‘রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত’ হতে সহায়তার আহ্বান জানান তিনি। তবে একই সঙ্গে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সহিংসতার মুখে সেনাবাহিনী নীরব থাকবে না। গতকাল রোববার সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন মিসরের এই মুহূর্তের ভাগ্যনিয়ন্তা। বুধবার কায়রোর দুটি বিক্ষোভস্থল থেকে রক্তক্ষয়ী অভিযানের মাধ্যমে মুরসি-সমর্থকদের উচ্ছেদ করার পর থেকে এটাই সেনাপ্রধানের প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য। গত চার দিনে মিসরে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে সাত শর বেশি। আর গতকাল কায়রোর একটি কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৩৬ জন মুরসি-সমর্থক নিহত হন। মিসরের সেনাবাহিনীর ফেসবুক পাতায় আল-সিসিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আমরা দেশের ধ্বংস, জ্বালাও-পোড়াও এবং নাগরিকদের ভীতসন্ত্রস্ত করা নীরবে বসে থেকে দেখব না।’ তবে আল-সিসির কণ্ঠে এদিন দৃশ্যত কিছুটা আপসের সুরও শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য আমরা অনেক সুযোগ দিয়েছি। আমরা তাদের সংঘাতে লিপ্ত হয়ে দেশকে ধ্বংস করার বদলে “গণতন্ত্রের পথ পুনর্নির্মাণ” ও “রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত” হওয়ার আহ্বান জানাই।...মিসরে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। মিসরীয়দের প্রতি ফোঁটা রক্তের মূল্য সম্পর্কে আমরা সচেতন।’
এদিকে গতকাল রোববার সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে আলোচনা করতে অন্তর্বর্তী সরকার বৈঠকে বসে। এতে নানা বিষয়ের পাশাপাশি ব্রাদারহুডকে আইনগতভাবে বিলুপ্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী হাজেম বেবলাউয়ির শনিবারের প্রস্তাবটি আলোচিত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। শনিবারই প্রেসিডেন্টের দপ্তর এর সত্যতা নাকচ করে দিয়েছিল। মন্ত্রিসভার গতকালের বৈঠকের পর তথ্যমন্ত্রী দরিয়া শরাফ আল-দীন বলেন, সরকার প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে। তবে একই সঙ্গে ‘সন্ত্রাসবাদ’কে কঠোরভাবে দমন করবে বলেও অভিমত দিয়েছে। এদিকে গতকাল নতুন বিক্ষোভের ডাক দেন মুরসির অনমনীয় সমর্থকেরা। তাঁদের জোট কায়রোর বিভিন্ন স্থান থেকে গতকাল সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতমুখী মিছিলের ডাক দেয়।  সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার হুমকি ইইউর: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা হারম্যান ভ্যান রমপুই ও হোসে ম্যানুয়েল বারোসো হুমকি দিয়েছেন, মিসরে সহিংসতা না থামলে দেশটির সেনাবাহিনী ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক জরুরি ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। নিন্দা অব্যাহত: মিসরে রক্তপাতের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার রাতে জার্মানি ও কাতার দেশটিতে ‘বর্বর সহিংস’ ঘটনার নিন্দা জানায়। জাতিসংঘের মহাসচিব সবাইকে ‘সর্বোচ্চ সংযত’ আচরণ করার আহ্বান জানান। ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলপ্রয়োগের’ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে লন্ডন। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.