ড্রোন হামলা স্রেফ আত্মরক্ষার যুদ্ধ

পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে জঙ্গিদের ওপর চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) হামলাকে ‘স্রেফ আত্মরক্ষার’ যুদ্ধ বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি বলেছেন, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটিতে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান ও ড্রোন কর্মসূচি বিষয়ে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী ভাষণে ওবামা এসব কথা বলেন। এ সময় ড্রোন হামলার প্রয়োজনীয়তা, আইনি বৈধতাসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি। ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের ক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার ‘আইনসিদ্ধ, কার্যকর ও প্রয়োজনীয়’ অস্ত্র। তিনি অবশ্য স্বীকার করেন, লক্ষ্যবস্তু ঠিক করে এভাবে হামলা চালানোর মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে না। এসব হামলার ঘটনায় অনিচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার ঘটনা তাঁকে নাড়া দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওবামা। পর্যবেক্ষকদের মতে, ওবামার ভাষণে একটা বিষয় স্পষ্ট যে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের ১২ বছর পর ড্রোন হামলার মতো এই যুদ্ধের সবচেয়ে বিতর্কিত কিছু কিছু অনুষঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নীতিনির্ধারণী এই ভাষণে ওবামা গুয়ানতানামো বে কারাগার নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে গুয়ানতানামো বে কারাগার যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আইনের শাসনকে তাচ্ছিল্য করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।’ ওবামা ঘোষণা দেন, গুয়ানতানামো বে-তে বন্দী সন্দেহভাজনদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। ইয়েমেন একে স্বাগত জানিয়েছে। গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধ করতে গিয়ে কংগ্রেসে বিরোধীদের পক্ষ থেকে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন ওবামা। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন গোড়া থেকেই মার্কিন ড্রোন হামলার সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এর পরও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ওবামার এ ভাষণের দিন কিছু সময় আগে অ্যাটর্নি জেনারেল প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেন, এখন পর্যন্ত ইয়েমেন ও পাকিস্তানে ড্রোন হামলায় চারজন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ বিষয় নিয়েও কথা বলেন ওবামা। এই হত্যাকাণ্ডের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি, যাদের এখনই না থামালে তারা আরও অনেক মার্কিন নাগরিককে হত্যা করবে।’

No comments

Powered by Blogger.