নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিতে আপত্তি নেইঃ ব্যারিস্টার রফিক

ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেছেন, “আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশবাসী উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। দুই নেত্রীর সংলাপ ছাড়া নির্বাচনের ব্যাপারে দেশের সংকট সমাধান হবে না। তবে নির্বাচনকালে কে সরকারপ্রধান হবেন তা এখন মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। দেশের জনগণ চাইলে শেষ বয়সে নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিতে আপত্তি নেই।”

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে দুপুরে মানবাধিকার সংস্থা ও মুক্তচিন্তা ফোরাম আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবীণ এ আইনজীবী এ সময় দুই নেত্রীই দেশপ্রেমিক এবং তারা গণতন্ত্র চান বলেও দাবি করেন।  

ব্যারিস্টার রফিক দেশের স্বার্থে দুই নেত্রীকে অথবা তাদের প্রতিনিধিদের সংলাপে বসানোর জন্য নিজে আবারও উদ্যোগী হবেন জানিয়ে বলেন, “তবে কোনো শর্টকাট পদ্ধতিতে নয়, এজন্য সময় লাগবে। দুই নেত্রীর মধ্যে আলোচনা হলে ১/১১ হবার আশঙ্কা চলে যাবে। অবশ্য এখন আইন হয়েছে, যারা এরকম ঘটনা ঘটাতে চাইবেন তারা দেশদ্রোহী বলে বিবেচিত হবেন।“

দেশে চলমান যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না এটা মনে হয় না। অনেক বলেন, বিএনপি বিচার চায় না। তবে নিজেদের বদনাম ঘোচাতে হলে আগামী নির্বাচনের আগেই এ ব্যাপারে বিএনপিকে স্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে তাদের বিচার চাইতে হবে।“

তিনি বিস্ময়ের সঙ্গে বলেন, “যারা যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত তারা বিদেশে যে কী মাত্রায় লবিং করছে তা ভাবাও যায় না। তারা প্রচুর টাকাপয়সা ব্যয় করছে। তবে বিচারের আগেই কোনো কোনো মন্ত্রী এ বিচার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিবৃতি ও বক্তব্য দেন। তাদের এ ধরনের কথা বিচারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে বিশ্ববাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এজন্য অনেকে এটাকে মিডিয়া ট্রায়াল বলেন।“

সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সমাবেশে সাংবাদিক নেতাদের অবস্থান ও তাদের বিরুদ্ধে এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের করা মামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, “এটিএন বাংলায় মুন্নী সাহা ছাড়া কাউকেই চিনি না। মাহফুজুর রহমানের কোনো ধরনের মামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে যুক্ত নই। এ নিয়ে আমার নামে যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তা সত্য নয়।“

আগাম নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, “এটা বিশ্বে নতুন কিছু নয়। সরকার যদি মনে করে নির্বাচনে জয়ের জন্য তার দল ইতিবাচক অবস্থানে আছে, তবে তারা আগাম নির্বাচন দিতে পারে। বাংলাদেশের দুই নেত্রী এক হয়ে এমন উদ্যোগ নিতে পারেন। তাহলে জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে যাবে।“
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের দায়ের করা অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি চাইলে এর সমাধান করে দিতে পারেন।“

বিচারপতির বিরুদ্ধে চাইলেই কেউ অভিযোগ দায়ের করতে পারেন না-- আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সংবিধানের ৯৬(৫) ধারায় বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা যায়।“

অনুষ্ঠানে দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আলোচনায় বসাতে নিজ অবস্থান থেকে সাংবাদিকদেরও উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান প্রবীণ এ আইনজীবী।

No comments

Powered by Blogger.