পাকিস্তানে আইনে পরিণত হলো আদালত অবমাননা বিল

পাকিস্তানের 'আদালত অবমাননা বিল, ২০১২'-এ স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। গতকাল বৃহস্পতিবার জারদারির সইয়ের মাধ্যমে বিলটি আইনে পরিণত হলো। গত সোমবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ এবং বুধবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিলটি পাস হয়।


নতুন এ আইনে পাকিস্তানের নির্বাহী কর্মকর্তারা তাঁদের পদে থাকাকালীন আদালত অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি পাবেন। সংবিধানের ২৪৮ নম্বর ধারায় বর্ণিত ব্যক্তিরা অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রী, গভর্নরসহ নির্বাহী দায়িত্বে থাকা সব কর্মকর্তাই এ 'আইনি সুরক্ষা' পাবেন।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত বা মন্তব্যের জন্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তোলা যাবে না। এ ছাড়া আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত কোনো ব্যক্তি যদি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন, তবে আপিলের মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত আগের রায় স্থগিত থাকবে। অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি যেকোনো সময় ক্ষমা চাইতে পারবেন। আদালত যদি এ ব্যাপারে সন্তুষ্ট হন, তবে ব্যক্তিকে দায় থেকে অব্যাহতি দিতে পারবেন। আদালত অবমাননা বিল-২০১২ অনুমোদিত হওয়ার কারণে পাকিস্তানে এ-সংক্রান্ত আগের আইনগুলো বাতিল হয়ে যাচ্ছে। তবে 'কালো আইন' হিসেবে উল্লেখ করে এ আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই আদালতে বেশ কয়েকটি আবেদন করা হয়েছে। আবেদনকারীরা আইনটি বাতিলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফকে আদালত অবমাননা সংক্রান্ত ঝামেলার হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই সরকার তড়িঘড়ি করে নতুন আইন পাস করল। প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চালু করতে সুইজারল্যান্ডে চিঠি পাঠানোর ব্যাপারে সরকারের অবস্থান জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী আশরাফকে গতকাল ১২ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই আদালত অবমাননা সংক্রান্ত নতুন আইন পাস করল সরকার।
জারদারির বিরুদ্ধে মামলা চালু করতে সুইজারল্যান্ডে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে আদালতে নির্দেশ পালন না করায় সুপ্রিম কোর্ট গত মাসে ইউসুফ রাজা গিলানিকে প্রধানমন্ত্রীর পদে অযোগ্য ঘোষণা করেন। একই কারণে তাঁর পার্লামেন্ট সদস্যপদও বাতিল হয়। সূত্র : ডন, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.