‘রেকর্ডটা মুরালিধরনের প্রাপ্য নয়’

বিদায়বেলায় সবাই যখন মুত্তিয়া মুরালিধরনকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন, একজন দাঁড়িয়ে গেলেন উল্টো স্রোতে। এই উল্টো স্রোতে দাঁড়িয়ে যাওয়া একজন রয় এমারসন। প্রায় ১৫ বছর আগে গ্যাবায় একটি ওয়ানডে ম্যাচে মুরালিধরনকে ৭ বার ‘নো’ ডেকেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান এই আম্পায়ার। এবার আরেকটা ‘নো’ ডেকে দিলেন এমারসন।
১৮ জুলাই ভারতের বিপক্ষে গল টেস্টই তাঁর শেষ টেস্ট—এই ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই প্রশংসার ডালি সাজিয়ে বসেছে সবাই। সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডের মালিকানা নিয়ে যাঁর সঙ্গে লড়াই ছিল, সেই শেন ওয়ার্ন থেকে বর্তমানের অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান মাইকেল ক্লার্ক—সবাই প্রশংসা করেছেন যে যাঁর মতো। কিন্তু এমারসন বলে দিলেন, ‘মুরালি টেস্টের সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডটির যোগ্য নয়।’
মুরালিধরন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেড় দশক আগের সেই স্মৃতি তুলে আনলেন এমারসন, ‘এই ১৫ বছরেও আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করিনি। এই রেকর্ডটি আসলে তার প্রাপ্য নয়।’ ব্রিসবেনে ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই এমারসন ‘নো’ ডেকেছিলেন মুরালিধরনকে। স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়েও আপত্তি জানিয়ে গেছেন তিনি, মুরালিধরন লেগ ব্রেক করার পরও। ৩ বছর পর অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে আবারও মুরালিধরনকে ‘নো’ ডাকেন তিনি। এর পর আইসিসি তাঁকে আম্পায়ারিং থেকে নিষিদ্ধ করে। টিকে থাকেন মুরালিধরন। গড়েন টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট পাওয়ার রেকর্ডও (বর্তমানে ৭৯২ উইকেট)।
তবে এমারসনের বিশ্বাস, মুরালিধরন নন, রেকর্ডটি আসলে ওয়ার্নেরই প্রাপ্য, ‘শেন ওয়ার্নের সঙ্গে তার রেকর্ডটি তুলনা করা যাবে না। ওয়ার্নের অ্যাকশনের বৈধতা নিয়ে কেউ কোনো দিন প্রশ্ন তুলতে পারেনি। মুরালি দারুণ এক প্রতিযোগী এবং ভালো বোলার। তবে সে নিয়মের মধ্যে থেকে বল করেনি।’
এমারসন এই ভেবে খুশিও হতে পারেন, নিজের পাশে আরও একজনকে পেয়ে গেছেন তিনি। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে মুরালিধরনের অ্যাকশন নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তুলে দেওয়া আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ারও বললেন তিনি ঠিকই ছিলেন, ‘আমি তার বিশ্ব রেকর্ডের বিরুদ্ধে নই, তবে এই রকম বোলারদের জন্য আইনটা পরিবর্তন করতে হওয়ায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, মুরালিধরনকে আমিসহ অন্যরা যে নো ডেকেছিলাম, সেটা ঠিকই আছে।’

No comments

Powered by Blogger.