এখন এনসিএল টি-টোয়েন্টির অপেক্ষা

শুধু খেলোয়াড়েরা নন, বোর্ড কর্মকর্তাদের অনেকেও পিসিএলের আতিথেয়তা নিয়ে শারজা গেছেন। সবার দেশে ফিরতে ফিরতে হয়তো কালকের দিনটাও লেগে যাবে। এটা যেমন একটা কারণ, আরেকটা কারণ হলো সবগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আজই হওয়ার কথা থাকলেও এনসিএল টি-টোয়েন্টি লিগের ফ্রাঞ্চাইজি পরিচিতি ও খেলোয়াড় বাছাই অনুষ্ঠানটি তাই পিছিয়েই দিতে হয়েছে। কাল পর্যন্ত নতুন তারিখ ঠিক না হলেও দুই-তিন দিনের মধ্যেই অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার কথা ১১ এপ্রিল।
জাতীয় লিগের ছয়টি বিভাগীয় দলের মধ্যে পাঁচটির ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত বলে খবর। বিসিবি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা দল কিনছে বেক্সিমকো, চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজ আইএফআইসি ব্যাংক, রাজশাহীর এমএন গ্রুপ, খুলনার এসটিএস গ্রুপ ও সিলেটের রিটজ ইভেন্ট। এমএন গ্রুপের বরিশাল বিভাগের প্রতিও আগ্রহ আছে, তবে কাল পর্যন্ত এই একটি দলের ফ্র্যাঞ্চাইজই চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে বিসিবি সূত্র। এসটিএস গ্রুপের পরিচালক খোন্দকার জামিল উদ্দিনের কথা শুনে অবশ্য খুলনার ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত নয় বলে মনে হলো। চুক্তি কাদের সঙ্গে হবে, এই অস্পষ্টতায় নাকি এনসিএল টি-টোয়েন্টি থেকে আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। ‘বিসিবির প্রস্তাব পেয়েছি। শুরুতে আমরা আগ্রহীও ছিলাম। কিন্তু কাগজপত্রে দেখলাম ফ্র্যাঞ্চাইজ নিতে হলে চুক্তি করতে হবে এটিএন রেকর্ডসের সঙ্গে। এটা আমরা কেন করব? আমরা ফ্র্যাঞ্চাইজ নিলে সরাসরি বিসিবির সঙ্গে চুক্তি করেই নেব, অন্য কারও সঙ্গে নয়। কাজেই এসটিএস গ্রুপ এনসিএলে নেই বলেই ধরে নিতে পারেন’—বলেছেন জামিল।
বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান গাজী আশরাফ হোসেন অবশ্য এটিকে মনে করছেন ভুল বোঝাবুঝি, ‘চুক্তি বোর্ডের সঙ্গেই হবে, এটিএন রেকর্ডসের সঙ্গে নয়। চুক্তির প্রস্তাবটা এটিএন রেকর্ডস থেকে গেছে বলেই হয়তো ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।’ প্রতিটি বিভাগীয় দলের মূল্য হিসেবে ফ্র্যাঞ্চাইজগুলো যে ৬৫ লাখ টাকার পে-অর্ডার দেবে, সেগুলোও বোর্ডের নামেই হবে বলে জানিয়েছেন গাজী আশরাফ।
সবগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজের নাম নিশ্চিত হতে তাই ফ্র্যাঞ্চাইজি পরিচিতি ও খেলোয়াড় বাছাই অনুষ্ঠান পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। ২৪ জন আইকন খেলোয়াড়সহ মোট ১৪৪ জন ক্রিকেটারের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে হবে খেলোয়াড় বাছাই। আইকন খেলোয়াড়ের মধ্যে আছে আবার সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা মূল্যের ৬ ‘মেগা আইকন’ খেলোয়াড়। ঢাকার ‘মেগা আইকন’ মোহাম্মদ আশরাফুল, চট্টগ্রামের তামিম ইকবাল, খুলনার সাকিব আল হাসান, বরিশালের শাহরিয়ার নাফীস, রাজশাহীর নাঈম ইসলাম ও সিলেটের অলক কাপালি। পুরো টুর্নামেন্টের জন্য ‘এ’ শ্রেণীভুক্ত আইকন (প্রতি দলে সর্বোচ্চ ৩ জন করে) খেলোয়াড়েরা পাবেন ৩ লাখ টাকা করে, ‘বি’ শ্রেণীভুক্তরা ২ লাখ টাকা করে, ‘সি’ শ্রেণীভুক্তরা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে ও ‘ডি’ শ্রেণীভুক্তরা ১ লাখ টাকা করে। এ ছাড়া প্রতিটি দল সর্বোচ্চ ৬ জন করে বিদেশি খেলোয়াড় নিবন্ধন করিয়ে এক ম্যাচে খেলাতে পারবে সর্বোচ্চ ২ জন করে।
ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এর মধ্যেই বিদেশি খেলোয়াড়ের পেছনে ছোটাছুটি শুরু করেছে বলে খবর। দু-একটা ফ্র্যাঞ্চাইজের প্রতিনিধিরা তো আইপিএল দেখতে ভারতেও চলে গেছেন। আইপিএল থেকেই যদি শিকার করা যায় বড় কোনো ক্রিকেটার! তাদের মিশন সফল হলে এনসিএল টি-টোয়েন্টির কোনো ম্যাচে ক্রিস গেইল-সৌরভ গাঙ্গুলীদের দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটের পরীক্ষিত খেলোয়াড় মাশরাফি বিন মুর্তজার দিকেই দৃষ্টিটা বেশি সবার। তবে তিনিও আইপিএলে থাকায় হয়তো এনসিএলের লেজটাই ধরতে পারবেন। মাশরাফির আইপিএলে যাওয়া অবশ্য একটা অস্বস্তি থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে টুর্নামেন্ট কমিটিকেও। মাশরাফি না সাকিব—শুরু থেকেই মাশরাফিকে পাওয়া গেলে খুলনার মেগা আইকন নির্বাচনে হয়তো এ রকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়তে হতো টুর্নামেন্ট কমিটিকে। এখন সে সমস্যা নেই। এনসিএলে মাশরাফি কেবলই একজন পুলভুক্ত খেলোয়াড়।

No comments

Powered by Blogger.