ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়া’র নতুন কাহিনী -তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু

ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়া’ বলে একটা কথা আছে। চট্টগ্রামের তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর বেলায় সেটাই ঘটেছে। সেতু বানানো হয়েছে চার লেনের, কিন্তু সেতুর দুই পাড়ের সড়ক রয়ে গেছে দুই লেনের সরু অবস্থায়। এ দেশে যা হওয়া দরকার, তা না হয়ে যা হওয়ার কথাই নয়, তা-ই হয়ে থাকে। ভুল করেও সঠিক কাজ যেন হবেই না; কী বিচিত্র এই দেশ!
সেতুর জন্য তহবিল দিয়েছে কুয়েত। অতএব ২০০৬ সালে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে তিন বছর পার হয়ে গেছে। আগামী বছরের মে মাসে সেতু চালু করেও দেওয়া হবে। অথচ সেতুর সঙ্গে লাগসই সড়ক নির্মাণের চিন্তা এসেছে অতি সম্প্রতি। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাবও পেশ করা হয়েছে। আগে না হলেও এবার অর্থ দেবে সরকার স্বয়ং। অথচ সড়ক ও সেতুর কাজ একসঙ্গে শুরু হলে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে কক্সবাজার, বান্দরবান ও চট্টগ্রামের সাতটি উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থা কিছুটা আগেই গতিশীল করা যেত। প্রথম আলোয় প্রকাশিত গত সোমবারের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, বর্তমানের শাহ আমানত সেতু দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার গাড়ি চলাচল করে। তৃতীয় বড় সেতুটি চালু হলে ১২ থেকে ১৩ হাজার গাড়ি চলবে। কিন্তু বর্তমানের সরু সড়ক দিয়ে সেটা সম্ভব নয়।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অদূরদর্শিতাই শুধু নয়, খামখেয়ালিরও প্রমাণ মেলে। নির্মাণকাজ মানেই বড় অঙ্কের অর্থের কারবার। অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, এতে সরকারি-বেসরকারি অনেকেরই অতি আগ্রহ দেখা যায়। কী বানানো হচ্ছে, কেন বানানো হচ্ছে, অনেক সময় তার হুঁশ থাকে না। তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুকাহিনী ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’ জাতীয় বাস্তবতাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
ভুল হয়েছে, তার সংশোধন প্রয়োজন। দ্রুততম সময়ে সরকারি অনুমোদন পাওয়া গেলে সেতুর দুই পাশের সড়ক সংস্কার করে চার লেনের করা যায়। এটি এমনভাবে করতে হবে, যাতে সেতুর নির্মাণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সড়কের কাজও শেষ হয়।

No comments

Powered by Blogger.