হজের আহকাম

হজ্বের ফরজ চারটি : (১) ইহরাম বাঁধা। হজ্বে ক্বিরান বা হজ্বে ইফরাদ বা হজ্বে তামাত্তুর উমরাহ্ বা শুধু উমরাহর জন্য। এ চারটির মধ্যে যেকোন একটির ইহরামের নিয়্যত করা। (২) তালবিয়া পাঠ করা। (৩) আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। অর্থাত্, ৯ যিলহজ্ব দ্বিপ্রহর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোন সময় এক মুহূর্তের জন্য হলেও আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা (সীমানার ভেতরে)। (৪) তাওয়াফে যিয়ারত করা। অর্থাৎ, ১০ যিলহজ্বের ভোর থেকে ১২ যিলহজ্বের সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাইতুল্লাহ্ শরীফে তাওয়াফ করা, কিন্তু ১০ তারিখ করা উত্তম। হজ্বের ওয়াজিবসমূহ: (১) নির্দিষ্ট জায়গা তথা মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা। (২) সা’য়ী করা। অর্থাৎ, সাফা ও মারওয়ার মাঝখানে দৌঁড়ানো। (৩) সাফা হতে সায়ী করা। (৪) তাওয়াফের পর সায়ী করা। (৫) সূর্যাস্ত পর্যন্ত উকুফে আরাফা করা। (৬) মুযদালিফায় অবস্থান করা। (৭) মাগরিব এবং এশার নামাজ মুযদালিফায় এসে একত্রে পড়া। (৮) ১০ তারিখ শুধু যামরাতুল আকাবায় (মানে বড় শয়তানকে) এবং ১১ ও ১২ তারিখে তিন যামরায় রামি (কংকর) নিক্ষেপ করা। (৯) যামরাতুল আকাবার (বড় শয়তানকে) রামি বা কংকর নিক্ষেপের কাজটি ১০ তারিখে হলক তথা মস্তক মুণ্ডনের আগে করা। (১০) কুরবানির পর মাথা কামান কিংবা চুল ছাঁটা। (১১) ক্বিরান এবং তামাত্তু হজ্ব পালনকারীর জন্য কুরবানি করা। (১২) তাওয়াফ হাতীমের বাহির দিক দিয়ে করা। (১৩) তাওয়াফ ডান দিক থেকে করা। (১৪) বিশেষ অসুবিধা না থাকলে পায়ে হেঁটে তাওয়াক করা। (১৫) ওযুর সঙ্গে তাওয়াফ করা। (১৬) তাওয়াফের পর দু’রাক’আত নামাজ পড়া। (১৭) তাওয়াফের সময় সতর ঢাকা থাকা। (১৮) কংকর নিক্ষেপ করা ও কুরবানি করা, মাথা মুন্ডানো এবং তাওয়াফ করার মধ্যে তারতীব বা ক্রমধারা বজায় রাখা। (১৯) মীক্বাতের বাইরে অবস্থানকারীদের বিদায়ী তাওয়াফ করা। (২০) ইহরামের নিষিদ্ধ কাজগুলো না করা। হজ্বের সুন্নাতসমূহ: ১. তাওয়াফে কুদুম (ক্বিরান ও ইফরাদ হজ্ব পালনকারীদের জন্য)। তাওয়াফ হাজরে আসওয়াদ থেকে শুরু করা। যে তাওয়াফের পর সায়ী আছে সে তাওয়াফে রমল এবং ইযতিবা করা। সাফা এবং মারওয়ার মধ্যে যে দু’টো সবুজ স্তম্ভ আছে, তার মধ্যবর্তী স্থান দৌঁড়ে অতিক্রম করা; তবে মহিলাদের জন্য তা প্রযোজ্য নয়। ২. তাওয়াফে কুদুমে রমল করা। ৩. ৭ তারিখ হেরেমে, ৯ তারিখ আরাফায় এবং ১১ তারিখ মিনার মাঠে ইমামের ৩টি খুত্বা শুনা। ৪. ৮ তারিখে মিনাতে অবস্থান এবং মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া (যোহর, আছর, মাগরিব, এশা এবং পরের দিনের ফজর) ৫. নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে মাথা মুন্ডালে বা চুল ছাঁটলে ‘দম’ দিতে হবে। ৬. একটি উকুন বা পোকা মারলে একটি রুটির টুক্রা, তিনটি পর্যন্ত মারলে এক মুঠো গম আর এর বেশি মারলে সদকা কতে হবে। ৭. ওযর ছাড়া সুগন্ধি ব্যবহার করলে ‘দম’ দিতে হবে। ওযরবশত: ব্যবহার করলে কুরবানি বা তিনটি রোযা বা ছয়জন মিস্কীনকে সদকা ফিতেরর পরিমাণ অর্থাত্ পৌনে দু’সের (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) গম বা তার মূল্য প্রদান এ তিনটির যেকোন একটি করতে হবে। ৮. সেলাই করা কাপড় যদি একদিন এক রাতসহ পুরো একদিন পরিধানে থাকে, তবে ‘দম’ আর এর কম পরিমাণ সময় হলে সদকা ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম গম বা তার মূল্য আদায় করতে হবে। ৯. স্বীয় স্ত্রীকে যৌন কামনাসহ চুমু খেলে কিংবা আলিঙ্গন করলে ‘দম’ দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.