বিধ্বংসী বন্যার ঝুঁকিতে বাংলাদেশের ৪ কোটি মানুষ : সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েক কোটি মানুষ।  নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানো না গেলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিধ্বংসী বন্যার শিকার হবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো। বিশ্বজুড়ে এসব বন্যায় আক্রান্ত হবেন ৩০ কোটি মানুষ। পূর্বের সতর্কতার চেয়ে এই পরিমাণ তিনগুণ বেশি। এর মধ্যে কেবল বাংলাদেশেই আক্রান্ত হবেন ৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ। ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে বন্যাক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ কোটিতে পৌঁছতে পারে। মার্কিন ভিত্তিক এনজিও ক্লাইমেট কনট্রোল’র বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে জিএনএ ও আল জাজিরা।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে এশীয় দেশগুলো। এর মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড।
এই দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বন্যার শিকার হবে। এর মধ্যে মুম্বই, সাংহাই ও ব্যাংকক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ৩০ বছরে কেবল এশিয়াতেই বন্যাক্রান্ত হবেন ২৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ।
গবেষণা প্রতিবেদনটির লেখক স্কট কাল্প বলেছেন, এই গবেষণায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শহর, অর্থনীতি, উপকূলীয় অঞ্চল ও পুরো বিশ্বের পরিবর্তন ফুটে ওঠেছে। মাত্র তিন দশকে পানির নিচে পুরোপুরি তলিয়ে যাবে মুম্বই ও সাংহাই। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর ডিনা আয়োনেসকো জানান, ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মাপের মানুষ স্থানান্তরের ঘটনা ঘটবে এমনটি হলে। তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা ছড়ানোর চেষ্টা করছি। আমরা জানি যে, এটা আসছে।
গবেষণা অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোয় বসববাসরত ৪ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ প্রতি বছর বন্যাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। চীন, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ভারত মিলে বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে ১২ কোটি ১০ লাখ মানুষ। ভারতে মুম্বই ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশাও বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এছাড়া, মিসরের আলেক্সান্দ্রিয়া ও ইরাকের বাসরাও পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চল পুরোটাই বন্যায় ভেসে যেতে পারে শতকের অর্ধেক পার হওয়ার আগে। গবেষণায় উল্লেখিত দেশগুলোর ঝুকিপূর্ণ জনসংখ্যাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ক্লাইমেট সেন্ট্রালের যোগাযোগ পরিচালক পিটার জিরার্ড বলেন, এই গবেষণার ফলাফল শুনতে যতটাই ভয়ানক লাগুক না কেন, এগুলো আসলে আশার জাগানিয়া ফলাফল। এ থেকে আমরা কোটি কোটি মানুষকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট এড়াতে পারবো।

No comments

Powered by Blogger.