চীনা জেএফ-১৭: ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে পাকিস্তানের গোপন অস্ত্র! by চার্লি গাও

২০১৯ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে যে সঙ্ঘাত হয়েছে, সেটা ভারতীয় বিমান বাহিনীকে ব্যাপকভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ভাষ্যমতে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি মিগ-২১ বাইসন বিমান ভূপাতিত হয়েছে, কিন্তু পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কিছুই হয়নি। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো জুলাইয়ে প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারের ভাষ্যমতে, এই সঙ্ঘাতকালেই প্রথমবারের মতো চীনা জেএফ-১৭ ‘থান্ডার’ জঙ্গি বিমান ব্যবহার করেছে পাকিস্তান।

জেএফ-১৭ অনেকটা নতুন এক-ইঞ্জিনবিশিষ্ট জঙ্গি বিমান। অন্যান্য হালকা জঙ্গি বিমান যেমন এফ-১৬, গ্রিপেন, মিগ-২৯এর মতো রফতানিযোগ্য বিমানের সাথে প্রতিযোগিতার জন্যই এটা তৈরি করা হয়েছে। পাকিস্তান বিমান বাহিনীই (পিএএফ) এই বিমানের সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী, তাই এ বিমানের ব্যাপারে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তথ্য রয়েছে চীনা মার্কেটিং দলিলপত্রে। তবে জুলাইয়ে প্রকাশিত সাক্ষাতকারে একজন পাইলট যে মতামত দিয়েছেন, তাতে উঠে এসেছে কিভাবে অধিকাংশ প্রতিকূল প্রতিপক্ষ – সুখোই এবং এফ-১৬ এর মতো বিমানের মোকাবেলায় কিভাবে এটা টিকে থাকে।

সীমান্ত সঙ্ঘাতের পর জেএফ-১৭ বিমানের ব্যবহার করা হয়েছে সীমান্ত টহলের কাজে। এই টহলকালীন কিছু ঘটনায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরত্বেরও সু-৩০এমকে বিমানের উপস্থিতি রাডারে টের পেয়েছেন তিনি।

তবে, এর অর্থ এই নয় যে এই দূরত্বে জেএফ-১৭ বিমান মিসাইল দিয়ে প্রতিপক্ষের বিমানকে ধ্বংস করতে পারবে। জেএফ-১৭ বিমানে প্রধান যে মিসাইলটি ব্যবহৃত হয়, সেটা হলো পিএল-১২, যেটা (২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী) এখনও সমন্বয়ের পর্যায়ে রয়েছে। সত্যিকারের সীমান্ত সঙ্ঘাতের সময় পাকিস্তানের এফ-১৬ বিমানগুলো এআইএম-১২০সি-৫ এএমআরএএএম মিসাইল ছুড়েছিল, যেটা ওই দূরত্বকে অতিক্রম করতে পারে। ফলে ভারতীয় বিমানগুলোকে সেখানে রক্ষণশীল অবস্থানে যেতে হয় এবং মিসাইলগুলোর আঘাত এড়ানোর চেষ্টা করে তারা। তবে এই মিসাইলে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। যেহেতু পিএল-১২ মিসাইলের রেঞ্জও একইরকম। তাই এই মিসাইলগুলোও হয়তো ওই দূরত্ব থেকে কোন ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারবে না।

তবে জেএফ-১৭ বিমান যদি এই দূরত্বে কোন বিমানকে আঘাত হানার সুযোগ পায়, তাহলে তারা ভারতীয় বিমান বাহিনীর সু-৩০এমকেআই থেকে হয়তো এগিয়ে থাকবে। এনডিটিভির এক রিপোর্ট অনুসারে, রাশিয়ান আর-৭৭ মিসাইলগুলো ৮০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে পারে না।

জেএফ-১৭ বিমানের পাইলট বলেছেন যে, সু-৩০ বিমানের মিসাইলের সীমাবদ্ধতা সত্বেও এই বিমানটি পাকিস্তানী বিমান বাহিনীর জন্য একটা বড় হুমকি। কারণ সু-৩০ বিমানের ইঞ্জিন অনেক শক্তিশালী এবং তাদের আকাশে ম্যানিউভারিং সক্ষমতাও অনেক বেশি। সেই কারণেই এগুলোকে আঘাত করাটা অনেক কঠিন।

তবে পাইলট এটাও বলেন যে, তিনি সু-৩০ বিমান নিয়ে অতটা চিন্তিত নন, কারণ এফ-১৬ বিমানের এএমআরএএএমের বিরুদ্ধে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং এটা অনেক বেশি শক্তিশালী মিসাইল।

No comments

Powered by Blogger.