অধিকৃত কাশ্মীরে পুলিশের সাথে শত শত বিক্ষোভাকারীর সংঘর্ষ

শুক্রবার ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে শত শত বিক্ষোভকারীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এমনকি, ১২ দিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর নয়াদিল্লী পর্যন্ত জানিয়েছে যে, তারা ফোন লাইন আবারও সচল করার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এ অঞ্চলে বিক্ষোভ ও অস্থিরতার আশঙ্কা করছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এই অঞ্চলটি কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছে, যখন ভারত সরকার এ অঞ্চলের স্বায়ত্বশাসন বাতিল করে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রধান শহর শ্রীনগরের প্রধান সড়কে নাগরিকরা বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও ছড়ড়া গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে পাথর ছুড়ে মারে এবং দোকানের সাইনবোর্ড এবং টিনের পাতকে ব্যবহার করে ছড়ড়া গুলি থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করে। সংঘর্ষে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এক বিক্ষোভকারী এএফপিকে জানিয়েছে, “আমরা অবরোধ উপেক্ষা করে শহরের কেন্দ্রের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু পুলিশ আমাদের থামানোর জন্য শক্তি প্রয়োগ করেছে”। তিনি আরও বলেন যে, বৃহস্পতিবার পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছে।

কাশ্মীর উপত্যকার অন্যান্য অংশেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। বহু দশক ধরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে এখানেই সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধ হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলে ইন্টারনেট ও ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।

অস্থিতিশীল উপত্যকার অধিকাংশ শহরেই কারফিউ জারি রয়েছে, এবং সরকারী বাহিনী বিশেষ পাসধারীদেরকেই কেবল চলাচলের অনুমতি দিচ্ছে।

খাড়া ব্যারিকেড এবং কাঁটাতার দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সড়ক বন্ধ করে রেখেছে সরকারী বাহিনী।

উপত্যকায় বড় ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং টানা দ্বিতীয় শুক্রবার মসজিদগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।

আরেক বিক্ষোভকারী এএফপিকে বলেছে, “যেটা আমাদের, আমরা সেটা চাই। আমরা কোন ভিক্ষা চাচ্ছি না, বরং আমাদের দাবি চাচ্ছি যাতে ভারত তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে”।

তিনি বলেন, “ভারত থেকে পুরোপুরি স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না”।

বিক্ষোভকারীরা শ্রীনগরের সড়ক ধরে বিক্ষোভ করেছে এবং এ সময় তারা শোকের প্রকাশ হিসেবে কালো পতাকা বহন করে। তাদের বহন করা প্ল্যাকার্ডে ‘গো ইন্ডিয়া, গো ব্যাক’ লেখা ছিল।

শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রীনগরসহ কাশ্মীরের অন্যান্য জায়গায় ফোন লাইন পুনরায় চালু করা হবে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মীরীদের ক্ষুব্ধ এবং সহিংস প্রতিবাদের আশঙ্কা থেকে এখানে অতিরিক্ত ১০,০০০ সেনা মোতায়েন করে। আগে থেকেই সেখানে অর্ধ মিলিয়ন সেনা ছিল। সেই সাথে সেখানে চলাফেরা সীমিত করার পাশাপাশি সেখানকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.