ভারত-পাকিস্তান পারমাণবিক যুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ ছড়াতে পারে কাশ্মির: মার্কিন থিংকট্যাংক

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত-পাকিস্তানের তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দুটি সংঘটিত হয়েছে কাশ্মির ইস্যুতে। গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করাসহ ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করেছে পাকিস্তান। দুই দেশের সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কাশ্মির সীমান্তে চলছে টানটান উত্তেজনা। একইসঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত ও ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে কালো দিবস হিসেবে পালন করেছে পাকিস্তান।

কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার মধ্যেই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে পাকিস্তানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ১৬ আগস্ট তিনি বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ভবিষ্যতে কী হবে তা পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল। ভারত তার ‘প্রথম হামলা না চালানোর’ নীতি থেকেও সরে আসতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অস্টিনভিত্তিক ভূ-রাজনৈতিক গোয়েন্দা প্ল্যাটফর্ম স্ট্রাটফর। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত-পাকিস্তান। ভারত শাসিত কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর এই দুই দেশের মধ্যে ‘পারমাণবিক যুদ্ধের অপচ্ছায়া’ উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কাশ্মির ইস্যুটি কী ভারতের "অভ্যন্তরীণ বিষয়’, নাকি ভারত ও পাকিস্তানের ‘দ্বিপক্ষীয়’ ইস্যু; তার শ্রেণিবিন্যাস নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিশ্বকে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে বিরত রাখার একমাত্র উপায় হলো কাশ্মিরিরা যা চায় তা তাদের দেওয়া।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দখলকৃত উপত্যকায় সাম্প্রতিক সফরের সময়, নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদদাতারা কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরে এক পশুপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রতিবেদককে বহনকারী একটি গাড়ি যখন তার কাছে আসতে ধীরগতিতে চললো, তখন পশুপালকটি উঠে এসে জানালা নাড়ালো। ‘আমরা বন্দুক তুলতে প্রস্তুত’—তিনি বলেছেন।

প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘কয়েক দশক আগে, কাশ্মিরের জনগণকে গণভোটের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিলো, যা কখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। তাদের কাছে কখনও জানতে চাওয়া হয়নি, তারা কী চায়?’

No comments

Powered by Blogger.