শ্রীলঙ্কায় বাড়ানো হয়েছে জরুরি অবস্থার মেয়াদ

দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ‘৯৯ ভাগ স্বাভাবিক’ হওয়া সত্ত্বেও নতুন করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। ইস্টার সানডে’তে সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২৫৮ জন মানুষ নিহত হওয়ার পর তিনি জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। তার মেয়াদ আজ শনিবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রত্যাহার না করে তিনি এর মেয়াদ বাড়িয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা একটি ডিক্রিতে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন দেশ এখনও একটি ‘পাবলিক ইমার্জেন্সিতে’ রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি জননিরাপত্তার জন্য জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছেন। জরুরি অবস্থার আইনকে কঠোর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এমন অবস্থায় পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা সন্দেহজনক যেকাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে পারে।
রাজধানী কলম্বোতে তিনটি গির্জা ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেলে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ১০ জন নারী।
সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি মে মাসে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান কূটনীতিকদের অবহিত করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতি শতকরা ৯৯ ভাগ স্বাভাবিক। ২২ জুনে তিনি জরুরি অবস্থা তুলে নিতে বলবেন। কূটনীতিকদের তিনি আশ্বস্ত করেন যে, ওই হামলার সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত তাদেরকেই আটক অথবা হত্যা করেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। হামলার জন্য তিনি স্থানীয় একটি জিহাদি গ্রুপকে দায়ী করেন। তবে হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। পরিস্থিতি ৯৯ ভাগ স্বাভাবিক থাকলেও কেন জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়াতে হলো এ বিষয়ে সরকার থেকে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয় নি।
রাজধানী কলম্বোতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি রয়েছে কঠোর। সেখানকার নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের জন্য ঘোষণা করা যেতে পারে জরুরি অবস্থা। তবে তা ১০ দিনের মধ্যে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে পার্লামেন্টে। বোমা হামলার আগে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে একজন ইন্সপেক্টর জেনারেল সহ শীর্ষ স্থানীয় বেশ কয়েক জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। এমন অবস্থার মধ্যে সেখানে জরুরি অবস্থা বহাল থাকার ঘোষণা এল।
খ্রিস্টানদের চার্চে এবং শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন স্থাপনায় জিহাদিরা হামলা চালাতে পারে বলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা আগেভাগে যে রিপোর্ট দিয়েছিল সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য নিজে সমালোচিত প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। পার্লামেন্টারি পাবলিক ইনকোয়ারি থেকে সিরিসেনাকে বলে দেয়া হয়েছে, তিনি জাতীয় নিরাপত্তা প্রোটোকল রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। উল্লেখ্য, সিরিসেনা একই সঙ্গে প্রুতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন।

No comments

Powered by Blogger.