নির্যাতিতার জবানবন্দি নেবেন শুধু নারী ম্যাজিস্ট্রেট

ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের জবানবন্দি নেয়ার জন্য শুধু নারী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। তবে সংশ্লিষ্ট জেলায় বা মহানগরীতে নারী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে অন্য কোনো যোগ্য ম্যাজিস্ট্রেটকে এই দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্ট। এ নির্দেশনা অনুসরণের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে তা কোর্টের নজরে আনতেও বলা হয়েছে জারি করা এক সার্কুলারে।
গত ১৫ই এপ্রিল সোমবার প্রধান বিচারপতি  সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতি এই সার্কুলার জারি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারির কথা সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ সার্কুলার জারি করেছে।
সামপ্রতিক বেশ কয়েকটি নারী নির্যাতনের ঘটনা এবং ফেনীর সোনাগাজী সিনিয়র ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দি নিয়ে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। মামলাটির তদন্তে পিবিআইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এমন ঘটনার পর গতকাল এই নির্দেশনা এল।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এ বর্ণিত অপরাধ সংঘটনে ওয়াকিবহাল ব্যক্তির জবানবন্দি উক্ত আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হয়। অপরাধের তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে লিপিবদ্ধকৃত জবানবন্দি অত্যন্ত  গুরুত্ব বহন করে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, একজন পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নারী বা শিশু ভিক্টিম ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দিতে সংকোচ বোধ করে। ফলে এরূপ নির্যাতনের শিকার শিশু বা নারী ঘটনার প্রকৃত বিবরণ দিতে অনেক সময় ইতস্তত বোধ করেন। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ধর্ষণ বা  যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা আবশ্যক। তবে সংশ্লিষ্ট জেলায় বা মহানগরীতে নারী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে অন্য কোনো যোগ্য ম্যাজিস্ট্রেটকে এ দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্ট।  এ নির্দেশনা অনুসরণের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে তা সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনতেও বলা হয়েছে সার্কুলারে।

No comments

Powered by Blogger.