মুসলিম রীতিতে মাথা ঢেকে এলেন তাঁরা

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলায় ঘটনায় মুসলিম নারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে আজ শুক্রবার দেশটির অন্য ধর্মের বেশ কিছু নারী মাথা ঢেকে আসেন। থায়া অ্যাশম্যান নামে অকল্যান্ডের এক চিকিৎসক এই উদ্যোগ নেন।
আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, জঙ্গি হামলার ভয়ে এক নারী হিজাব পরে বাইরে আসতে ভয় পাচ্ছেন শুনে অকল্যান্ডের চিকিৎসক থায়া অ্যাশম্যান ভাবেন, সব ধর্মের নারীরা আজ এভাবে ভীত নারীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। আমরা চাই রাস্তায়ও যেন আপনি বাড়ির মতো বোধ (নিরাপত্তা বোধ) করেন। আমরা আপনাদের ভালোবাসি, সমর্থন ও শ্রদ্ধা করি।’
স্থানীয় সময় গত শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ আদায়রত মুসলিমদের ওপর আধা স্বয়ংক্রিয় বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় অস্ট্রেলীয় যুবক ব্রেনটন টারান্ট (২৮)। এর কিছু পরে ব্রেনটন কাছাকাছি লিনউড মসজিদে হামলা চালান। দুটি হামলায় ৫০ জন নিহত হন। এর মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি। আহত হন ৫০ জন। হত্যার অভিযোগ এনে ব্রেনটনকে কারাবন্দী রাখা হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটিতে সব ধরনের আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
এক সপ্তাহ পর আল নুর মসজিদের কাছে হ্যাগলি পার্কে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টায় জুমার নামাজের আগে সমবেত হন হাজারো মানুষ। সেখানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিওতে জোহরের আজান প্রচারের পর দেশটি জুড়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আজ মাথায় কাপড় দিয়ে আসার আহ্বানে অনেক নারীকে সাড়া দিতে দেখা গেছে। ক্রাইস্টচার্চ ছাড়াও অকল্যান্ড ও ওয়েলিংটনের অনেক নারী মাথা স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে ছবি পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেক শিশুকেও স্কার্ফ পরতে দেখা গেছে।
বেল সিবলি নামে ক্রাইস্টচার্চের এক নারী আজ তাঁর হিজাব পরার কারণ তুলে ধরে বলেন, কেউ একজন বন্দুক তুলে ধরলে তিনি বন্দুকধারী ও নিশানায় থাকা ব্যক্তির মাঝখানে দাঁড়াবেন। যাতে বন্দুকধারী দুজনের মধ্যে কোনো তফাত খুঁজে না পায়।
মসজিদে হামলার পর মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে মাথায় কালো স্কার্ফ পরে সাক্ষাৎ করে মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা।
একজন নারী পুলিশকে ক্রাইস্টচার্চ সমাধিতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে মাথায় স্কার্ফ পরে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
স্কার্ফ পরার এই উদ্যোগ নিউজিল্যান্ডের ইসলামিক উইমেন কাউন্সিল এবং মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন সমর্থন করলেও নিউজিল্যান্ডের ভেতরে-বাইরে অনেকে এর বিরোধিতা করেছে।

No comments

Powered by Blogger.