ফিলিস্তিনিদের সাহায্য বন্ধ করেছেন ট্রাম্প: ‌আরব দেশগুলোর রহস্যজনক নীরবতা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন ফিলিস্তিনিদেরকে টার্গেট করেছেন। ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের সাহায্যের জন্য গঠিত জাতিসংঘের একটি সংস্থায় অর্থ দেয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকা।
২০১৬ সালে আমেরিকা জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সিকে ৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিয়েছিল। চলতি বছরেও একই পরিমাণ অর্থ দেয়ার কথা থাকলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ সংস্থাকে আর সহায়তা না দেয়ার ঘোষণা দিলেন। ৫০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি বিভিন্ন দেশে শরণার্থী জীবনযাপন করছে। তাদের সহায়তার দায়িত্ব রয়েছে জাতিসংঘের এই সংস্থাটির ওপর।
ফিলিস্তিন শরণার্থীদের অর্থ-সহায়তা বন্ধে মার্কিন সরকারের এ পদক্ষেপ মূলত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিতর্কিত 'শতাব্দির সেরা চুক্তি' নামক পরিকল্পনা বাস্তবায়নেরই প্রক্রিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের জন্য ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিলেও এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, দখলদার ইসরাইলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা, ইসরাইলের প্রতি ফিলিস্তিনিদের স্বীকৃতি আদায় করা, ইহুদি বসতি নির্মাণকে বৈধতা দেয়া এবং ফিলিস্তিনিদেরকে মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে বাধা দেয়া।
মার্কিন সরকার ফিলিস্তিন শরণার্থীদের অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণ, বিভিন্ন দল ও সংগঠনের ওপর এমনভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে যাতে তারা 'শতাব্দির সেরা চুক্তি' নামক পরিকল্পনা মেনে নিতে বাধ্য হয়। হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জোহরি বলেছেন, "আমেরিকা অনেক পরিকল্পিতভাবে জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সিকে দেয়া অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছ এবং এভাবে তারা যত দ্রুত সম্ভব ট্রাম্পের 'শতাব্দির সেরা চুক্তি' পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। মার্কিন সরকার দাবি করেছে, তাদের নতুন জরিপে দেখা গেছে শরণার্থী সংখ্যা পাঁচ লাখ। আর এ কারণেই  অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মার্কিন সরকারের এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ব্রিটেন ও জার্মানির কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেছেন, তারা ফিলিস্তিন শরণার্থীদের সহায়তা দেয়া অব্যাহত রাখবে। জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইমান আল সাফেদি ট্রাম্পের এ পদক্ষেপকে ভুল বলে অভিহিত করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থেনিও গুতেরেসও বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা বর্তমানে ২১কোটি ৭০ লাখ ডলার বাজেট ঘাটতির সম্মুখীন এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়ায় ফিলিস্তিনিরা তীব্র সংকটে পড়বে।
এদিকে দখলদার ইসরাইল মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে একে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসি এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি এবং রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছে।
হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জোহরি

No comments

Powered by Blogger.