মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী এখন টোকাই by ওমর ফারুক সুমন

রাস্তায়-রাস্তায় টোকাইগিরি করে নিজের পেটের খাবার জোগাচ্ছেন রমিজা খাতুন (৬২) নামে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। আট বছর পূর্বে রমিজার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন মারা যান। বাতেন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও ভাতা পাননি কখনো। বাতেনের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৪ই আগস্ট। সূত্রে জানা যায়, বাতেন ৩নং সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেক্টর কমান্ডার আতাউল গণি ওসমানী নিজেই বাতেনকে সনদপত্র প্রদান করেছেন। বাতেনের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পড়শিপাড়া গ্রামে। পরে বাতেন হালুয়াঘাট চলে আসেন এবং হালুয়াঘাট অবস্থানকালেই তিনি মারা যান। মারা গেলে তার একমাত্র স্ত্রী রমিজা হালুয়াঘাটের মনিকুড়া গ্রামে তার মেয়ে শিউলির আশ্রয়ে থাকেন। পরে অভাবের তাড়নায় ঢাকা গিয়ে টোকাইগিরি করে নিজের পেটের খাবার জোগাড় করেন। গত বৃহস্পতিবার রাস্তায় বোতল টুকানোর সময় রমিজার সাক্ষাৎ মেলে। কথা বলে জানা যায় বিচিত্র রকমের তথ্য। রমিজা বলেন, আমি আমার স্বামীর বৈধ কাগজপত্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও গিয়েছি। একজনে কাগজপত্র জমা রাইখা আমাকে পাঠাইয়া দেয়। ভাতা অইবো কইল। পরে ভাতা আর অইল না। এ ছাড়া আরো কত মুক্তিযোদ্ধা নেতাদের কাছে গিয়েছি। সকলে শুধু আশাই দেয়। ভাতা আর অই না। কি আর করমু। অবশেষে ঢাকার বিশ্বরোড চৌরাস্তায় বোতল টুকাইয়া খাই। পেটতো চালান লাগবো। স্বামী আমার আট বছর অসুখে পইরা আছিলো। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি নাই। আমার পাঁচ ছেলে দুই মেয়ে। তিন ছেলে আরো মারা গেছে। ১৫ জন নাতি-পুতিও আছে। কেডা কারে দেহে। সবারই অভাব। জানা যায়, হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া আসনের সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং এমপি তিনি নিজেও ২রা জুলাই তারিখে রমিজার ভাতার জন্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত সুপারিশ করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.