সৌদি অবরোধ জয় করেছে কাতার

এক বছর পূর্বে কাতারের ওপর স্থল, নৌ ও আকাশপথে অবরোধ আরোপ করে সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব দেশগুলো। কয়েকটি দাবি মানতে বাধ্য করার জন্যই বিত্তবান দোহার ওপর এই অবরোধ আরোপ করা হয়। একদিন পরেই অবরোধ আরোপকারী চার দেশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের তরফ থেকে সাধুবাদ পান। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, আরব দেশগুলো বলেছে, তারা সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। আর সব সূচকই কাতারের প্রতি ইঙ্গত করছে। সম্ভবত সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহতার সমাপ্তি শুরু হয়েছে।’
এর ঠিক এক বছর পর, কাতার অবরোধে শুধু টিকেই থাকে নি। বরং দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে নিজেকে বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। চাপ প্রয়োগ করে কাতারকে ১৩ দফা দাবি মানতে বাধ্য করার মিশনে ব্যর্থ হয়েছে কাতারবিরোধী জোট। এসব দাবির মধ্যে বহুল প্রচারিত আল জাজিরা টিভি চ্যানেল বন্ধ করার দাবিও রয়েছে। এছাড়া, কাতারের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছে সৌদি জোট। পূর্বে কাতার ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের অভিযানে সমর্থন দিত। কিন্তু সৌদি জোটের অভিযোগ, কাতার বিশ্বাসঘাতকতা করে হুতি বিদ্রোহীদের সহায়তা দেয়া শুরু করেছে।
তবে পরিষ্কারভাবে এসব দাবি তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নেয়া কাতারের পক্ষে অসম্ভব ছিল। উপসাগরীয় সংকটের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত কয়েকজন কর্মকর্তাও বলেছেন যে, প্রকৃতপক্ষেই কাতার তার কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আনলেও সৌদি জোটকে তা বোঝানো সম্ভব ছিল না। অবরোধ আরোপের মূল উদ্দেশ্য ছিল কাতারকে একটি পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা। যার কোনো স্বাধীন বৈদেশিক নীতি অনুসরণের সক্ষমতা থাকবে না। এ উদ্দেশ্যে কাতারের ওপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোতে লবিং করে সৌদি জোট। গোটা বিশ্বে কাতারের বিরুদ্ধে একটি জনমত গঠনের চেষ্টা চালায় তারা।
কিন্তু সৌদি জোটের এসব পদক্ষেপ কাতার নিজেদের কাজে লাগিয়েছে। এর বাস্তব উদাহরণ হতে পারে এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানির যৌথ বিবৃতি। এতে ট্রাম্প উল্টো সৌদি আরব বিরোধী বক্তব্য দেন।

No comments

Powered by Blogger.